আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম

নারীরা কি কোলাকুলি করতে পারবেন?

প্রকাশিত:বুধবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২০ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

পরস্পর হাত মেলানো ও কোলাকুলিকে আরবিতে মুসাফাহা-মুআনাকা বলা হয়। পরস্পরের সাক্ষাতের সময় মুসাফাহা ও কোলাকুলি একটি সুন্নাত কাজ। এতে যেমন পারস্পরিক অভিবাদন-সম্ভাষণ, সম্প্রীতি ও সহমর্মিতা প্রকাশ পায়। আবার এতে গোনাহও মাফ হয়। হাদিসে এসেছে-

হজরত বারাআ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দুইজন মুসলিম পরস্পর মিলিত হয়ে মুসাফাহা (হাত মেলালে) করলে পরস্পর বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগেই তাদের ক্ষমা করে দেয়া হয়। (আবু দাউদ)

এ হাদিসের আলোকে নারীরা বাদ যায়নি। কেননা এখানে শুধু পুরুষের কথা বলা হয়নি বরং মুসলমানের কথা বলা হয়েছে। তাই নারীরা যদি পরস্পর মুসাফাহা ও কোলাকুলি করে তবে তাতে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি সুন্নাত আদায় হবে। আর তাতে তাদের গোনাহও মাফ হয়ে যাবে।

যেহেতু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারী-পুরুষের মাঝে কোনো পার্থক্য করেননি। তাই ইসলামিক স্কলারও তাতে মতপার্থক্য করেননি। সুতরাং পুরুষরা যেমন পরস্পর একে অন্যের সঙ্গে মুসাফাহা ও কোলাকুলি করতে পারবে তেমনি নারীরাও পরস্পর একে অপরের সঙ্গে মুসাফাহা ও কোলাকুলি করতে পারবে। হাদিসে ঘোষিত ফজিলতও লাভ করবেন।

সতর্ক থাকতে হবে

এক পুরুষ অন্য পুরুষের সঙ্গে, এক নারী অন্য নারীর সঙ্গে মুসাফাহা ও কোলাকুলি করতে পারবে কিন্তু ইসলামি শরীয়ত কোনো পুরুষ পর নারীর সঙ্গে, কোনো নারী পর পুরুষের সঙ্গে মুসাফাহা ও কোলাকুলি করতে পারবে না। ইসলামে এটি নাজায়েজ ও হারাম। সুন্নাতের নামে নারী-পুরুষের অবাধ মুসাফাহা ও কোলাকুলি ইসলামে হারাম। এ বিষয়ে সবারই সতর্ক থাকা জরুরি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নারীকে পরস্পর মুসাফাহা ও কোলাকুলি করার মাধ্যমে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দিন। নিজেদের গোনাহ থেকে মুক্ত করার তাওফিক দিন। আমিন।


আরও খবর



ফের মাউশির ডিজি হলেন অধ্যাপক নেহাল

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ফের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী অধ্যাপক নেহাল আহমেদের অভোগকৃত অবসরউত্তর ছুটি ও তৎসংশ্লিষ্ট সুবিধা স্থগিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী এক বছর মেয়াদে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হলো।

মাউশিতে অধ্যাপক নেহাল আহমেদের চাকরির মেয়াদ শেষ হয় গত ১৩ এপ্রিল। ওই দিন ঈদের ছুটি থাকার কারণে তিনি শেষ অফিস করেন ৯ এপ্রিল। এরপর থেকে মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন কলেজ ও প্রশাসন শাখার পরিচালক অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী।

এর আগে গত ১ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ অধ্যাপক নেহাল আহমেদকে গ্রেড-১ এ পদোন্নতি দিয়ে মাউশির মহাপরিচালক পদে পদায়ন করা হয়।

অধ্যাপক নেহাল আহমেদ ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক। তিনি ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি একই প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ ছিলেন। মাউশির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার আগে তিনি ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।


আরও খবর
একাদশের ক্লাস শুরুর তারিখ ঘোষণা

বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪




বাগেরহাটে ট্রাক-ভ্যান মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বাগেরহাট প্রতিনিধি

Image

বাগেরহাটে ট্রাক ও যাত্রীবাহী ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ভ্যানচালকসহ তিনজন নিহত হয়েছে। আজ শনিবার (২৭ এপ্রিল) মোংলা-খুলনা মহাসড়কের রামপাল উপজেলার চেয়ারম্যানের মোড় নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৌমেন দাস এবং কাটাখালী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

কাটাখালী হাইওয়ে থানা পুলিশ জানায়, মোংলা-খুলনা মহাসড়কের রামপাল উপজেলার চেয়ারম্যানের মোড় নামক স্থানে একটি দ্রুতগতির মালবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী ভ্যানের মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে ভ্যানের যাত্রী মো. সাইদ মোড়ল (৪৫), মো. আজাদ (৩৫) ও ভ্যানচালক মো. মনি (৪৫) ঘটনাস্থলে মারা যান। নিহতদের বাড়ী রামপাল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

ওসি সৌমেন দাস জানান, দুর্ঘটনার পর স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে রামপাল থানা পুলিশ, কাটাখালী হাইওয়ে পুলিশ ও  ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের মরদেহ ও আহতদের উদ্ধার করেছে। আহতদের রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে চেষ্টা চালাচ্ছে। ঘাতক ট্রাকটি রামপাল থানা পুলিশ আটক করেছে বলেও জানান ওসি সৌমেন দাস।


আরও খবর



লক্ষীপুরের ৫ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন যারা

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

Image

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দক্ষিণ হামছাদী, দালাল বাজার, বাঙ্গাখাঁ, লাহারকান্দি ও তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। রাতে ফলাফল ঘোষণা করে স্ব-স্ব রিটার্নিং অফিসার।

দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মীর শাহ আলম। তিনি ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৬২৪৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল উদ্দিন চৌধুরী চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ২৬৯৮ ভোট।

দালাল বাজার ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছেন নজরুল ইসলাম। চশমা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৬৩৫৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নুর নবী চৌধুরী অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৭৬০ ভোট।

বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নে মিজানুর রহমান চশমা প্রতীকে ৬৪০১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ জামাল রিপন মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৩৯০ ভোট।

লাহারকান্দি ইউনিয়নে টেলিফোন প্রতীকে আশরাফুল আলম বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৫৫৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী খোরশেদ আলম শাহীন অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭৭৩ ভোট।

তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নে ওমর হুসাইন ভুলু আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৭৫৪২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বোরহান চৌধুরী পেয়েছেন অটোরিকশা প্রতীকে ৬২৩৯ ভোট।

দক্ষিণ হামছাদী, দালাল বাজার এবং তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের রিটার্নিং অফিসার রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্বপন কুমার ভৌমিক ও বাঙ্গাখাঁ এবং লাহারকান্দি ইউনিয়নের রিটার্নিং অফিসার সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম চৌধুরী ফলাফলের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।


আরও খবর



মানিকগঞ্জে পৌঁছেছে পাইলট আসিম জাওয়াদের মৃতদেহ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আবুল হোসেন, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদের মৃতদেহ মানিকগঞ্জে পৌঁছেছে। নিহত ছেলের বহনকারী হেলিকপ্টার দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মা নিলুফা আক্তারসহ স্বজনরা।

শুক্রবার (১০ মে) দুপুর ১২টার দিকে তাকে বহনকারী বিমানবাহিনীর-২১৯ হেলিকপ্টার মানিকগঞ্জের শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে অবতরণ করে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে অসীম জাওয়াদের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর জেলা শহরের সেওতা কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন তিনি।

বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার আন্নু গণমাধ্যমকে বলেন, পাইলট আসিম জাওয়াদের মৃতদেহ মানিকগঞ্জে পৌঁছানোর পর গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে তার মৃতদেহের কফিনটি একটি ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হয়েছে।

জানা গেছে, সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক শিক্ষক নিলুফা আক্তার খানম ও চিকিৎসক আমানুল্লাহর একমাত্র সন্তান ছিলেন আসিম জাওয়াদ রিফাত। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে কান্না করতে করতে মূর্ছা যাচ্ছেন মা নিলুফা।

নিহত জাওয়াদের বড় মামা সুরুজ খান জানান, অত্যন্ত মেধাবী ছিল জাওয়াদ। স্কুল ও কলেজজীবনে সব সময় প্রথম হয়েছে। ছোটবেলা থেকে জাওয়াদের স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়ার। কিন্তু সে স্বপ্ন পূরণ হয়ে পাইলটও হয়েছিল। কিন্তু সেটি ছিল মাত্র অল্প সময়ের জন্য। শুক্রবার জাওয়াদের মৃতদেহ মানিকগঞ্জে আনা হবে বলে জানান তিনি।

জাওয়াদের খালাতো ভাই মশিউর রহমান শিমুল জানান, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমিতে (বাফা) যোগদান করে ২০১১ সালে অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন জাওয়াদ। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে আসিম চট্টগ্রাম বিমানবাহিনীর ঘাঁটি জহরুল হকের অফিসার্স আবাসিক এলাকার নীলিমাতে বসবাস করতেন।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর মোহনায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান ইয়াক-১৩০ বিধ্বস্ত হয়। বেলা পৌনে ১১টার দিকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিমানটিতে আগুন ধরে যায়।

বিমানের পাইলট উইং কমান্ডার মো. সোহান হাসান খাঁন এবং স্কোয়াড্রন লিডার ছিলেন মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ। এ সময় পাইলটরা বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে সক্ষম না হওয়ায় দুই পাইলট প্যারাস্যুটের মাধ্যমে অবতরণ করেন। বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে বোট ক্লাবের পাশে নদীতে পড়ে। এতে গুরুতর আহত হন বিমানের পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।


আরও খবর



শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে দীর্ঘ নির্বাসন জীবন শেষে তিনি বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। ইতিহাসের এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লী থেকে কোলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। দিবসটি উপলক্ষ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বিপথগামী একদল সেনা কর্মকর্তা নির্মম বুলেটের আঘাতে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। এসময় বিদেশে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে বাঙালি জাতির অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে ঘাতক গোষ্ঠী।

বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অন্ধকার। ঠিক তেমনি এক ক্রান্তিলগ্নে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। দেশমাতৃকার মুক্তির সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব অর্পণ করা হয় জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যার হাতে। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বকে ভয় পায় ঘাতক গোষ্ঠী। সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে না দেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেন শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ৬ বছর নির্বাসিত জীবন শেষে বাংলাদেশে ফিরে আসেন তিনি। সেদিন রাজধানী ঢাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা শহর মিছিল আর স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আর প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টিও সেদিন লাখ লাখ মানুষের মিছিলকে গতিরোধ করতে পারেনি। কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও শেরেবাংলা নগর পরিণত হয় জনসমুদ্রে।

দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের অঙ্গীকার, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার, স্বৈরতন্ত্রের চির অবসান ঘটিয়ে জনগণের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সার্বভৌম সংসদীয় পদ্ধতির শাসন ও সরকার প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা।

সেদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় আকাশে যখন শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানটি দেখা যায় তখন সব নিয়ন্ত্রণ আর অনুরোধ আবেদন অগ্রাহ্য করে হাজার হাজার মানুষ বিমান বন্দরের ভেতরে ঢুকে পড়ে। অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই বিমানটি অবতরণ করে। জনতা একেবারেই বিমানের কাছে চলে যায়। বহু চেষ্টার পর জনতার স্রোতকে কিছুটা সরিয়ে ট্রাকটি ককপিটের দরজার একেবারে সামনে নেওয়া হয়। এসময় শেখ হাসিনা ভেতর থেকে জনতার উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন।

বেলা ৪টা ৩২ মিনিটে শেখ হাসিনা বিমান থেকে সিঁড়ি দিয়ে ট্রাকে নেমে আসেন। কুর্মিটোলা থেকে শেখ হাসিনার শেরেবাংলা নগরে এসে পৌঁছতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা। এসময় ঝড় বৃষ্টিতে নগরজীবন প্রায় বিপন্ন। রাস্তাঘাট, স্বাভাবিক জীবন যখন ব্যাহত তখন সেখানে অপেক্ষায় কয়েক লাখ মানুষ। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিনি গণসংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত হন।

১৯৮১ সালের ১৭ মে ঝড়-বাদল আর জনতার আনন্দ অশ্রুতে অবগাহন করে শেরেবাংলা নগরে লাখ লাখ জনতার সংবর্ধনার জবাবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেছিলেন, সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।

তিনি আরও বলেছিলেন, আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেলসহ সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মাঝেই তাদেরকে ফিরে পেতে চাই। আপনাদের নিয়েই আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তা বাস্তবায়ন করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই।

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধার এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। ১৯৭৫র ১৫ আগস্টের পর যখন ঘাতক গোষ্ঠী প্রিয় মাতৃভূমিকে ক্ষত-বিক্ষত করে তুলেছিল জাতীয় জীবন, তখন শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল শ্রাবণের বারিধারার মতো পাহাড় সমান বাঁধা জয়ের অনন্ত অনুপ্রেরণা। সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে অশ্রু-বারিসিক্ত জন্মভূমিতে সঙ্কটজয়ের বীজ রোপিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিনির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয়ে প্রদীপ্ত অগ্নিশপথের রৌদ্রালোকে উদ্ভাসিত হয়েছিল বাঙালি জাতি।

ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নিরবচ্ছিন্ন দীর্ঘ সংগ্রাম শুরু হয়। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সামরিক শাসক ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে চলে তার অকুতোভয় সংগ্রাম। জেল-জুলম, অত্যাচার কোনও কিছুই তাকে তার পথ থেকে টলাতে পারেনি একবিন্দু। শত প্রতিকূলতাতেও হতোদ্যম হননি কখনও। বাংলার মানুষের হারিয়ে যাওয়া অধিকার পুনরুদ্ধার করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি বারবার স্বৈরাচারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেছেন। আবির্ভূত হয়েছেন গণতন্ত্রের মানসকন্যা রূপে।

আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর দীর্ঘ ৪৩ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বৈরশাসনের অবসান, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বাঙালির ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর খুনি ও একাত্তরের নরঘাতক মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য সম্পন্ন এবং রায় কার্যকর করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব, যোগ্যতা, নিষ্ঠা, মেধা-মনন, দক্ষতা, সৃজনশীলতা, উদার গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ও দূরদর্শী নেতৃত্বে একসময় দারিদ্র্য-দুর্ভিক্ষে জর্জরিত যে বাংলাদেশ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করতো সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বজয়ের নবতর অভিযাত্রায় এগিয়ে চলছে। বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ তালাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ ঘুচিয়ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি

আজ ১৭ মে সকাল ৯টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের নেতাদের শুভেচ্ছা বিনিময়, বিকেল সাড়ে ৩টায় তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় জাতীয় নেতা ও বরেণ্য বুদ্ধিজীবীরা বক্তব্য রাখবেন। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

এছাড়া মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৯টায় মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়, সকাল ১০টায় রাজধানীর মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করেছে।


আরও খবর