আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম

কৃষিক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর অবদান

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ আগস্ট ২০২২ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ আগস্ট ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

আবুবকর সিদ্দিক

যুদ্ধ শেষ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরেছেন। নিজ মাটিতে পা দিয়ে যেমন আবেগে আপ্লুত, তেমনি শঙ্কিত ও চিন্তিত যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্বাসন নিয়ে। বীরযোদ্ধা, আবালবৃদ্ধবনিতাসহ আপামর জনসাধারণ মুক্তির আনন্দে বিভোর। এদিকে সুযোগসন্ধানীরা উঠেপড়ে লেগেছে আখের গোছাতে। শিগগিরই আনন্দের ঘোর কাটবে, ক্ষুধা এসে হানা দেবে দুয়ারে। সময় নষ্ট করা যাবে না। চিন্তিত বঙ্গবন্ধু। একের পর এক পরিকল্পনার ছক কেটে যেতে লাগলেন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে শুরু করলেন। মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে বসলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা আর দেশ পুনর্বাসনে ১৯৭৩ সালেই তৈরি করলেন প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। এর মূল অঙ্গীকার বিধ্বস্ত অবকাঠামো পুননির্মাণ, ভগ্নশিল্প পুনঃপ্রতিষ্ঠা, শিক্ষাব্যবস্থা, প্রশাসন পুনর্বিন্যাস, রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা, সর্বোপরি কৃষির উন্নয়ন।

কেন কৃষির কথা ভাবলেন বঙ্গবন্ধু: মনস্তাত্ত্বিক দিক বিবেচনায় এনে বঙ্গবন্ধু ভাবলেন, এ দেশের জলবায়ু ও মাটি কৃষির মাটি। বাংলার সবচেয়ে বড় সম্পদ কৃষি। কৃষি বাংলার প্রাণ, বাঙালির মুখের হাসি। বাঙালি মনোজগতের দার্শনিক বঙ্গবন্ধু। তিনি জানেন, কৃষি মিশে আছে বাঙালির রক্তে। দেশের ৮৫ শতাংশ লোক কৃষির ওপর নির্ভশীল। তাই উন্নয়নের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হবে কৃষি। দৃশ্যমান বাস্তবতা বিবেচনায় এনে ভাবলেন, মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম খাদ্য। বিশে^র বহু দেশে খাদ্য উৎপাদনের উপযোগী জলবায়ু ও মাটি নেই। খাদ্যের জন্য তাদের নির্ভর করতে হয় বহির্বিশ্বের ওপর। যদি বিশ্বে খাদ্যমন্দা দেখা দেয়, তা হলে অনুন্নত দেশগুলোকে তীব্র খাদ্য সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। আমাদের মাটি কৃষির মাটি। এ দেশের মাটিতে সোনা ফলে। এ জন্য যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্বাসনে প্রথম যে বিষয়টি সামনে আসে, তা হলো খাদ্য নিশ্চয়তা। তাই কৃষিকে বাঁচাতে হবে, কৃষককে বাঁচাতে হবে।

বঙ্গবন্ধু কী পদক্ষেপ নিলেন: কৃষি উন্নয়নের কথা ভেবে তিনি যে যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন, সংক্ষেপে সেগুলো ছিল নিম্নরূপ- ক. জাতীয় উন্নয়নে কৃষিকে অগ্রাধিকার দিয়ে রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন : বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান ভিত্তিই হলো কৃষি। এ কারণে ১৯৭৩ সালে প্রণীত প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে বলা হলো, খাদ্যশস্য উৎপাদনে আত্মনির্ভরতা অর্জন, কৃর্ষিক্ষেত্রে কর্মের সুযোগ সম্প্রসারণ এবং শহরমুখী শ্রমিকস্রোত ঠেকানোর উদ্দেশ্যে প্রাতিষ্ঠানিক ও কারিগরিভিত্তিক কৃষিভিত্তি গড়ে তোলা। প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সামাজিক ন্যায়বিচার ও দারিদ্র্য বিমোচনের তাগিদে কৃষি উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রধিকার দেওয়া হলো। স্বল্পমেয়াদে উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ, উন্নত বীজ, সেচ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ করে এবং কৃষিঋণ মওকুফ, সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার ও খাসজমি বিতরণ করে কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা এবং উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনের চেষ্টা করা হলো। প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ভূমিসংস্কার ও গ্রামে সমবায় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কৃষক-জনতার স্বার্থে গ্রাম-সমবায়ও বিশেষভাবে স্থান পেয়েছিল। এ পরিকল্পনায় সব বিষয়টিকে প্রধানত দুটি অংশে বিভক্ত করা হয়েছিল। এর প্রথম অংশে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে পরিকল্পনা কাঠামো এবং দ্বিতীয় অংশে খাতওয়ারি কর্মসূচি। খাতওয়ারি কর্মসূচির শুরুতেই ছিল কৃষি।

খ. কৃষি পুনর্বাসন ও কৃষককে সুযোগ-সুবিধা প্রদান : কৃষক বাঁচাও দেশ বাঁচাও স্লোগানে সবুজ বিপ্লবের ডাক। ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মাফ। পরিবারপ্রতি জমির মালিকানা ৩৭৫ বিঘা থেকে কমিয়ে সর্বোচ্চ সীমা ১০০ বিঘা নির্ধারণ। পাকিস্তান শাসনামলে মামলাকৃত ১০ লাখ সার্টিফিকেট মামলা থেকে কৃষকদের মুক্তি প্রদান ও সুদসহ ঋণ মওকুফ। জমির পূর্ববর্তী সব ভূমি কর মওকুফ। দরিদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের রেশন প্রদানের ব্যবস্থা। উপকূলীয় অঞ্চলে বাঁধ নির্মাণ করে প্রায় ১৮ লাখ একর কৃষিজমি রক্ষা। উচ্চফলনশীল ধান, পাট ও গম বীজ কৃষকদের মধ্যে বিতরণ। স্বাধীনতার পর স্বল্পসময়ের মধ্যে ২২ লাখ কৃষি পরিবারকে পুনর্বাসন। হ্রাসকৃত মূল্যে লো লিফট পাম্প, গভীর নলকূপ ও শ্যালো টিউবওয়েল বিতরণ। নদী কিংবা সাগরে জেগে ওঠা চর জমির মালিকানা রাষ্ট্রের হাতে নিয়ে দরিদ্রতর কৃষকদের মধ্যে বণ্টনব্যবস্থার বিধান। অল্পদামে কিংবা বিনামূল্যে সার, কীটনাশক, বীজ ও কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ। ভূমিহীনদের মধ্যে খাসজমি বিতরণ। কৃষকদের মধ্যে ষাঁড়, গরু বিতরণ ও কৃষিঋণ প্রদান। সহজ শর্তে ঋণপ্রাপ্তির লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা। কৃষকের কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য ধান, পাট, তামাক, ইক্ষুসহ গুরুত্বপূর্ণ ফসলের ন্যূনতম বিক্রিমূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া। কৃষি উৎপাদন সহযোগী সামগ্রী স্বল্প ও বিনামূল্যে প্রদান করে কৃষিকাজে উৎসাহ ও কৃষকের উৎপাদন ব্যয় কমানো। কৃষিজ পণ্যের ক্ষুদে বিক্রেতাদের শুল্ক থেকে অব্যাহতি প্রদান। কৃষকদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের জন্য সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংককে নির্দেশনা প্রদান। সরকারিভাবে খাদ্য মজুদের জন্য ১৯৭২ সালেই ১০০টি খাদ্য গোডাউন নির্মাণ। গ. কৃষিভিত্তিক ও কৃষিসহযোগী শিল্প : কৃষি খামার, মৎস্য এবং অন্যান্য কৃষিভিত্তিক ক্ষুদ্রশিল্প প্রতিষ্ঠায় উৎসাহ প্রদান ও সহজ শর্তে ঋণপ্রাপ্তির ব্যবস্থা। স্থানীয়ভাবে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরির ক্ষুদ্রশিল্পকে উৎসাহ ও প্রণোদনা প্রদান। ঘ. কৃষি সমবায় : সমন্বিত পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের অধীন বিদ্যমান সমবায় সমিতির পাশাপাশি দ্বিস্তরের সমবায় পদ্ধতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য দেশের প্রথম মাইক্রোক্রেডিট কর্মসূচি প্রণয়ন। ঙ. সবুজ বিপ্লব : কৃষি বাঁচলে দেশ বাঁচবে স্লোগান সামনে রেখে সবুজ বিপ্লব-এর ডাক। কৃষকদের বিদ্যমান সুবিধা বৃদ্ধি করে নানা সুযোগ প্রদান করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ছিল এর মূল লক্ষ্য। চ. কৃষিবিদদের মর্যাদা বৃদ্ধি : অধিকতর মেধাবী শিক্ষার্থীদের কৃষি শিক্ষায় আকৃষ্ট করার জন্য ১৯৭৩ সালে কৃষিবিদদের চাকরি ক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা প্রদান। ছ. কৃষি শিক্ষা ও কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্থাপন : কৃষি গবেষণা ছাড়া কৃষির উন্নতি সম্ভব নয়- এ কথা উপলদ্ধি করে ১৯৭৩ সালে কৃষি গবেষণা সমন্বয়ের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা। ১৯৭৩ সালে ১০ নম্বর অ্যাক্টের মাধ্যমে নতুন নামে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট পুনর্গঠন করা। ঢাকার আণবিক গবেষণাকেন্দ্রে কৃষি পারমাণবিক গবেষণা ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার এগ্রিকালচার প্রতিষ্ঠার নির্দেশ। জুট এগ্রিকালচার রিসার্চ ল্যাবরেটরিকে বাংলাদেশ জুট রিসার্চ ইনস্টিটিউট নামে পুনর্গঠন। সোনালি আঁশের সম্ভবনার দ্বার উন্মুক্ত করতে পাট মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা। তুলার চাষ সম্প্রসারণ করার জন্য তুলা উন্নয়ন বোর্ড গঠন। হর্টিকালচার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড, সিড সার্টিফিকেশন এজেন্সি ও রাবার উন্নয়ন কার্যক্রম পুনর্গঠন। ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট, মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন প্রতিষ্ঠা। কৃষি সেচব্যবস্থার উন্নয়ন, বীজ উৎপাদন, বীজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে বিএডিসিকে পুনর্গঠন ও এর বীজকেন্দ্র সারাদেশে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ।

বঙ্গবন্ধুর পদক্ষেপের সুদূর প্রভাব: শত বিপত্তির মধ্যেও কৃষি উন্নয়নের ক্ষেত্রে পুরো পৃথিবীতে বাংলাদেশ এখন একটি রোল মডেল হিসেবে পরিচিত। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তবে স্বাধীনতা অর্জন সময়ের তুলনায় মানুষ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে বাংলাদেশ এখন খাদ্য রফতানি করছে। শিল্পায়ন, বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের প্রসার, সেবাধর্মী কর্মকাণ্ডের বাজার ও শ্রমবাজার বৃদ্ধিসহ নানাবিধ কারণে কৃষি থেকে বিপুল মানবসম্পদের নিয়ত অভিবাসন সত্ত্বেও দেশের জিডিপিতে রয়েছে কৃষির উল্লেখযোগ্য অবদান (বর্তমানে তা মোট জিডিপির প্রায় ১৪ শতাংশ)। এগ্রো ইন্ডাস্ট্রি, পরিকল্পিত ও বাণিজ্যিক কৃষি উৎপাদনে বৃদ্ধি পেয়েছে বেসরকারি বিনিয়োগ এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। তা দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বেকারত্ব দূরীকরণে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এতে বৃদ্ধি পেয়েছে কৃষকের মর্যাদা। এসবই সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী কৃষি ভাবনা ও উপযুক্ত পদক্ষেপের কারণে। তাই স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বঙ্গবন্ধু নামের পাশে খুবই যৌক্তিকভাবে সংযোজিত হয় আরেকটি নাম, আরেকটি বিশেষণ, আরেকটি শ্রদ্ধার্ঘ্য কৃষিবন্ধু মুজিব

লেখক: মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব), গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রলালয়


আরও খবর



জয়পুরহাটে কৃষক হত্যা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সুজন কুমার মন্ডল, জয়পুরহাট

Image

জয়পুরহাটে বুলু মিয়া হত্যা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বুধবার দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ-২য় আদালতের বিচারক নুরুল  ইসলাম এ রায় দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌশলী অ্যাডভেকেট নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জয়পুরহাট সদর উপজেলার দস্তপুর গ্রামের মৃত শামসুদ্দিনের ছেলে বাচ্চু মিয়া, গনিরাজের ছেলে এমরান আলী নুহু ও আউশগাড়ার মোকছেদ আলীর ছেলে বাবু মিয়া মিয়া।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, জয়পুরহাট সদর উপজেলার চকদাদরা এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে বুলু মিয়া দস্তপুর গ্রামের মৃত কুদ্দুসের মেয়েকে বিয়ের পর সেখানে ঘর জামাই হিসেবে থাকতেন। ২০০৫ সালের ৩ এপ্রিল রাতে সে হাতে লাঠি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেননি। সে রাতেই আসামীরা পারিবারিক বিরোধের জেড় ধরে বুলুকে গলা কেটে হত্যা করে। পরের দিন ওই গ্রামের একটি বায়োগ্যাস তৈরীর টাংকির উপর তার গলাকাটা ও জখম রক্তাক্ত লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত এ রায় দেন।


আরও খবর



গরমে তালের শাঁসের যত উপকারিতা

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জীবন ধারা ডেস্ক

Image

তালের শাঁস বাজারে এখন বেশ সহজলভ্য। গরমেই ফলটির দেখা পাওয়া যায়। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। গরমে শরীর ও পেট ঠাণ্ডা রাখে তালের শাঁস। এছাড়া বিভিন্ন শারীরিক সমস্যারও সমাধান করে এই ফল।

জানেন কি, তালের শাঁসে থাকে আয়োডিন, মিনারেলস, পটাশিয়াম, জিংক ও ফসফরাস। বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে ভরপুর তালের শাঁস নানা রোগের দাওয়াই হিসেবে কাজ করে। জেনে নিন এই ফল কোন কোন রোগ সারায়-

১. এই ফল শরীরে শক্তি জোগায় ও দৈহিক তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়। ফলেই শরীর ভেতর থেকে ঠান্ডা থাকে।

২. শরীরকে আর্দ্র রাখতেও তালের শাঁস বিশেষ উপকারী। তবে গরমে এই ফল বেশি খেলে আবার পেট গরম হতে পারে। তাই অল্প পরিমাণে খাওয়াই ভালো।

৩. পাকস্থলীর বিভিন্ন সমস্যা, পেট গরমভাব ও জ্বালাপোড়া কমায় এই ফল। এই ফল খেলে হজমের সমস্যাও দূর করে।

৪. বর্তমানে অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে অনেকেই ভুগছেন লিভারের সমস্যায়। জানেন কি তালের শাঁস লিভারের সুরক্ষায় কাজ করে। লিভারের উপর এটি পাতলা আস্তরণের মতো কাজ করে।

৫. গরমে হাত পায়ে চুলকানি কিংবা অ্যালার্জির সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। শরীরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি হওয়ার কারণে এমনটি ঘটে। এ সমস্যারও সমাধান করে তালের শাঁস। তাই গরমে দৈনিক খাদ্যতালিকায় রাখুন তালের শাঁস।

নিউজ ট্যাগ: তালের শাঁস

আরও খবর



ঘরের চাল সরাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

জাজিরা (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি:

শরীয়তপুরের জাজিরায় ঘরের চালা সরাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে রানা মৃধা (১৭) নামের এক তরুণ নিহত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুর ১২টার সময় জাজিরা উপজেলার পালেরচর ইউনিয়নের মোল্লা কান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রানা মৃধা ওই এলাকার দেলোয়ার মৃধার ছেলে।

স্থানী সূত্রে জানা যায়, পালেরচর ইউনিয়নের মোল্লা কান্দির বাসিন্দা দেলোয়ার মৃধার বসতঘর নতুন করে মেরামত করার জন্য চালা সরাতে যান তার ছেলে রানা মৃধা ও স্থানীয় আবুল ভূইয়া, জামাল মল্লিকসহ কয়েকজন। হঠাৎ অসাবধানতাবসত টিনের চালা নেওয়ার সময় ঘরের মিটারের সাথে সংস্পর্শে আসে। এতে রানা মৃধা বিদ্যুতপৃষ্ট হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

প্রত্যক্ষদর্শী আবুল ভূঁইয়া জানান, আমরা কয়েকজন মিলে দেলোয়ার মৃধার ঘরের চাল সরাচ্ছিলাম। টিনের চালা সরানোর এক পর্যায়ে হঠাৎ দেখি রানা জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পরে আছে পরে দেখলাম যে টিনের চালার সাথে বিদ্যুতের তাঁর লাগানো ছিলো। এরপর আমরা তাকে জাজিরা হাসপাতালে নিয়ে আসি।

জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘরের টিনের চালার সাথেই বিদ্যুৎ মিটারের তাঁর সংযোগ ছিল। অসাবধানতাবসত বিদুৎস্পৃষ্টে তার মৃত্যু হয়েছে। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।


আরও খবর



রিকশা চালকদের মাঝে ছাতা বিতরণ করলেন মেয়র আতিক

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

তীব্র গরমে রোদ থেকে বাঁচতে রিকশা চালকদের মাঝে ছাতা বিতরণ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

শনিবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশান-২ এর নগর ভবনের সামনে রিকশা চালকদের হাতে ছাতা, খাবার স্যালাইন ও পানির বোতল তুলে দেন ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম।

ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকায় সপ্তাহব্যাপী এই কর্মসূচির মাধ্যমে ৩৫ হাজার রিকশা চালকদের মাঝে ছাতা, খাবার স্যালাইন ও পানির বোতল বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি।

শুরুতে ডিএনসিসির লাইসেন্সকৃত রিকশা চালকদের ছাতা দেওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় ছাতার সঙ্গে ১২টি করে খাবার স্যালাইন ও একটি করে পানির বোতলও যোগ হয়েছে।

সহযোগিতায় এগিয়ে আসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে মেয়র আতিক বলেন, তীব্র এই গরম থেকে নগরীকে বাঁচানো শুধু সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সমাজের উচ্চবিত্তদের এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি। আমরা ৩৫ হাজার রিকশা চালককে ছাতা দিচ্ছি কিন্তু শহরে আরও রিকশা রয়েছে যারা তীব্র তাপে জীবিকার তাগিদে অসহনীয় কষ্ট করছে। সবাই এগিয়ে আসলে আমরা তাদের পাশেও দাঁড়াতে পারবো।

তীব্র গরম থেকে নগরবাসীকে কিছুটা স্বস্তি দিতে শহরের বিভিন্ন পার্কে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, এই গরমে শহরের মানুষকে কিছুটা প্রশান্তি দিতে ডিএনসিসি ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে এবং কাজ করছে। তবে পার্কগুলোতে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা শহরের মানুষকে আরও কিছুটা প্রশান্তি দিবে। পার্কগুলোতে কৃত্রিম বৃষ্টির জন্য প্রতি মাসে ৩ লাখ টাকা করে প্রয়োজন। এই উদ্যোগ সফল করার জন্য দেশের সরকারি বেসরকারি ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন তিনি।

ডিএনসিসির উদ্যোগে রিকশা চালকদের মাঝে ছাতা বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলানসহ পাকিস্তান, আলজেরিয়া ও ফিলিস্তিন দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।


আরও খবর



সুজানগরে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা: আতঙ্কে এলাকাবাসী

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মামুন হোসেন, পাবনা

Image

পাবনার সুজানগরে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় বাড়িঘর, মন্দির, দোকানপাটে হামলা ভাঙচুর ও মারপিটের ঘটনায় আতঙ্কে দিন কাটছে এলাকাবাসীর। বুধবার (৮ মে) রাতে কয়েক দফায় কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে এসব ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ উঠেছে, নির্বাচনে বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাবের সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে হামলা ও মারপিট করেছে। এতে মুক্তিযোদ্ধাসহ আহত হয়েছে অন্তত দশজন।

ভুক্তভোগীরা জানান, গতকাল অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল ওহাব বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিন। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটে শাহিন পরাজিত হলে ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই লাঠিসোঠা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উপজেলার মানিকহাট, সাগরকান্দি ও সাতবাড়িয়া সহ কয়েকটি ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশত বাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর চালায় আব্দুল ওহাবের সমর্থকরা। মারপিটে গুরুত্বর আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন আহমদপুর দক্ষিণচর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন খান, আলম, রানী বেগমসহ বেশ কয়েকজন। সাগরকান্দি ইউনিয়নে বীরেন্দ্রনাথ কুন্ডুর পারিবারিক মন্দিরেও ভাঙচুর করেছে হামলাকারীরা।

সাতবাড়ীয়া ভাটপাড়া এলাকার সাব্বির বলেন, আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনুজ্জামান শাহীনের নির্বাচন শেষে রাতে বাড়ি এসে ভাত খাচ্ছিলাম এর মধ্যে মটর সাইকেলের সমর্থক ওহাবের লোকজন অস্ত্রসস্ত্রসহ দলবল নিয়ে আমাদের ঘর-বাড়িতে হামলা চালায় এবং ঘর বাড়ি ভাংচুর করাসহ ঘরে থাকা নগদ টাকা পয়সা স্বর্ণলঙ্কার লুটপাট করে নিয়ে যায় তারা। এখন জীবন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান তিনি।

মানিকহাট ইউনিয়নের ক্ষেতুপাড়া এলাকার আরিফা খাতুন বলেন,  শাহীন হেরে যাওয়ায় রাতের আধারে মটর সাইকেলের সমর্থক ওহাবের লোকজন আমাদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে এবং ঘরে থাকা পিঁয়াজ বিক্রির নগদ টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায় তারা।

হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন শাহীনুজ্জামান। শাহীনুজ্জামান বলেন, নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের নানা ঘটনা থাকলেও সার্বিকভাবে জনগণের রায়কে আমি মেনে নিয়েছি। নির্বাচন নিয়ে আমি কোন অভিযোগ করিনি। আমার প্রত্যাশা ছিলো নতুন উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে আমরা এলাকার উন্নয়নে একসাথে কাজ করবো। কিন্তু গতরাত থেকেই তারা যা শুরু করেছে তা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নৃশংসতাকেও হার মানায়। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই ও দোষীদের শাস্তির দাবি করছি। একই সাথে জনগণের জান মালের নিরপত্তা দিতে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

হামলার বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি বিজয়ী চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব। নেতাকর্মীদের শান্ত থাকারও নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

সুজানগর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, সুজানগরে নির্বাচন পরবর্তী বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃংখলা বাহিনী সহিংসতা প্রতিরোধে তৎপর রয়েছে। এলাকায় নিরপত্তা বাড়ানো হয়েছে। হামলা মারপিটের ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।


আরও খবর