হবিগঞ্জেও বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। প্রতিনিয়ত জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু। গত সাত দিনে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২১ জন রোগী। যদিও সুস্থ হয়ে ১৬ জন রোগী বাড়ি ফিরেছেন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছেন ৩ জন। আর ২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
রবিবার বিষয়টি নিশ্চিত করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আমিনুল হক সরকার বলেন, নতুন করে আরো ৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদেরকে হাসপাতালের ২৫০ শয্যা ভবনের ৬ তলায় বিশেষ কর্ণারে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে এই মৌসুমে ২১ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ১৬ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আর ৩ জন বর্তমানে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা কর্ণার স্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে, হবিগঞ্জ পৌর এলাকার ড্রেন, নালা-নর্দমা ও আবর্জনার স্তুপে প্রতিনিয়ত মশা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সম্প্রতি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। মশা নিধনে পৌর কর্তৃপক্ষকে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি সচেতন মহলের।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, পৌর এলাকায় মশার উপদ্রব বেড়েছে। বিভিন্ন বাসা-বাড়ির আঙিনায় অপরিস্কার ফুলের টবে পানি জমে থাকায় মশার বংশ বিস্তার বাড়ছে। অপরিষ্কার ও অপরিছন্নতার কারণে মশার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে সাধারণ নাগরিকদের সচেতনতার প্রয়োজন। বাসা বাড়ির আঙ্গিনা ফুলের টব সব সময় পরিষ্কার রাখলে মশার বিস্তার রোধ হবে। তাছাড়া মশা নিধনে পৌর কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নেয়া দরকার।
যদিও এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম বলেন, মশা নিধনে পৌর এলাকায় নিয়মিত স্প্রে ছিটানোর পাশাপাশি ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। আজ থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী বৃদ্ধি করাসহ মাসব্যাপী মশার স্প্রে ছিটানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয়দের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বাসা বাড়ির আঙ্গিনা ও ফুলের টবে জমে থাকা পানি ও ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পৌর নাগরিকদের আহ্বান জানান।
হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জল বলেন, হবিগঞ্জকে এখনও ডেঙ্গু আক্রান্ত এলাকা বলা যাবে না। যারাই আক্রান্ত হয়েছেন তারা ঢাকাসহ বাহির থেকে আসা লোকজন। তবে সারা দেশেই ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেড়েছে। এডিস মশার কারণেই এটি ছড়ায়। তাই ডেঙ্গু জ্বরের সংক্রমণ রোধে সচেতন হতে হবে। এ জন্য সরকারি নির্দেশনার বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি।