আজঃ মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪
শিরোনাম

এপ্রিলে ইস্পাতের বৈশ্বিক উৎপাদন কমেছে ৫.১ শতাংশ

প্রকাশিত:শনিবার ২৮ মে ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ২৮ মে ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

বিশ্বব্যাপী শিল্প ধাতু ইস্পাতের উৎপাদন কমেছে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। এপ্রিলে ইস্পাতের বৈশ্বিক উৎপাদন কমে দাঁড়ায় ১৬ কোটি ২৭ লাখ টন। একই সময়ে বিশ্বের শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ চীনে শিল্প ধাতুটির উৎপাদন কমেছে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। এপ্রিলে চীনের উৎপাদিত ইস্পাতের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯ কোটি ২৮ লাখ টন। ওয়ার্ল্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশনের সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ চিত্র দেখা যায়।

গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম চার মাসে (জানুয়ারি-এপ্রিল) ইস্পাতের বৈশ্বিক উৎপাদন কমে ৭ দশমিক ১ শতাংশ। উল্লিখিত সময়ে শিল্প ধাতুটির মোট বৈশ্বিক উৎপাদন দাঁড়ায় ৬১ কোটি ৯১ লাখ টন। গত মাসে শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদনকারী ১০টি দেশের সাতটি দেশই নেতিবাচক চিত্র দেখেছে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ভারত, রাশিয়া ও তুরস্ক। এপ্রিলে ভারতে ইস্পাত উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি ৬ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা যায়। এ সময়ে তুরস্কের ইস্পাত উৎপাদন বেড়েছে ১ দশমিক ৬ শতাংশ ও রাশিয়ার দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যদিকে অন্য শীর্ষ দেশ ইরান শিল্প ধাতুটির উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক চিত্র দেখেছে। গত মাসে দেশটির ইস্পাত উৎপাদন কমে ২০ দশমিক ৭ শতাংশ।

চীনে নতুন করে কোভিড সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। ফলে ইস্পাতের চাহিদা ও দামে বেশ নেতিবাচক দৃশ্য দেখছে দেশটি। বছরের প্রথম চার মাসে চীনের ইস্পাত উৎপাদন কমেছে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ। এ সময়ে দেশটিতে ইস্পাত উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৩ কোটি ৬২ লাখ টন। দ্বিতীয় বৃহত্তম ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ ভারতে শিল্প ধাতুটির অবস্থান বেশ ইতিবাচক দেখা গিয়েছে। বছরের প্রথম চার মাসে দেশটির ইস্পাত উৎপাদনের হার বেড়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। এ সময়ে মোট ৪ কোটি ২৩ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন করে ভারত। সম্প্রতি ইস্পাতের ওপর রফতানি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত, যা দেশটির ইস্পাত উৎপাদনকে প্রভাবিত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এপ্রিলে তৃতীয় বৃহত্তম ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ জাপানের উৎপাদনের হার কমেছে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। এ সময়ে দেশটির মোট উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭৫ লাখ টন। বছরের প্রথম চার মাসে জাপানের ইস্পাত উৎপাদন কমেছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। উল্লিখিত সময়ে দেশটির মোট উৎপাদিত ইস্পাতের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৫ লাখ টন। এ সময়ে চতুর্থ শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন হার কমে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। এপ্রিলে দেশটির মোট উৎপাদিত ইস্পাতের পরিমাণ ৬৯ লাখ টন। বছরের প্রথম চার মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মোট উৎপাদিত ইস্পাতের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ কোটি ৭১ লাখ টন, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৭ শতাংশ কম। কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনা ও ইস্পাত শিল্পের আধুনিকায়নের উদ্যোগের ফলে দেশটিতে ইস্পাতের দাম কমে আসার সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

পঞ্চম বৃহত্তম ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ রাশিয়া এপ্রিলে শিল্প ধাতুটির উৎপাদনে ক্ষুদ্র প্রবৃদ্ধি দেখেছে। এ সময়ে দেশটির উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৬৪ লাখ টন। তবে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম চার মাসে রাশিয়ার ইস্পাত উৎপাদন কমে দশমিক ৭ শতাংশ। ইউক্রেনে দেশটির সামরিক অভিযানের ফলে শিল্প খাতে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞায় এ শ্লথগতি দেখছে দেশটি। এ সময়ে অভ্যন্তরীণ ইস্পাতের ব্যবহারের পরিমাণও কমিয়ে এনেছে রাশিয়া। এপ্রিলে দক্ষিণ কোরিয়ার ইস্পাত উৎপাদনের পরিমাণ ৪ দশমিক ১ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৫৫ লাখ টন। এ সময়ে সপ্তম বৃহত্তম উৎপাদনকারী জার্মানির ইস্পাত উৎপাদনের পরিমাণ ১ দশমিক ১ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৩৩ লাখ টন। একই সময়ে তুরস্কের ইস্পাত উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৪ লাখ টন, ব্রাজিলের ২ দশমিক ৯ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ২৯ লাখ টন ও ইরানে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ লাখ টন।

নিউজ ট্যাগ: ইস্পাত

আরও খবর



বাংলাদেশ ফিজিক্যাল সোসাইটির সভাপতি নিযুক্ত হলেন ড. শৌকত আকবর

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান এবং এনপিসিবিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর গত শনিবার বাংলাদেশ ফিজিক্যাল সোসাইটির বার্ষিক সাধারণ সভায় সোসাইটির সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। ড. আকবরকে পদার্থবিদ্যার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ ফিজিক্যাল সোসাইটির ফেলো হিসাবেও ভূষিত করা হয়েছে। বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. শৌকত আকবর ১৯৬৬ সালে কিশোরগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি জাপানের হোক্কাইডো ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ড. আকবর ১৯৯৩ সালের জানুয়ারিতে কমিশনে একজন বিজ্ঞানী হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন।


আরও খবর



ঢাকা-সিলেট ৬ লেন প্রকল্প: জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় এগোচ্ছে না কাজ

প্রকাশিত:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সিলেট প্রতিনিধি

Image

ঢাকা-সিলেট-তামাবিল ২৬৫ কিলোমিটার সড়কের ৬ লেন প্রকল্পে গতি নেই। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০২৩ সালের মার্চে কাজ শুরু করে। কিন্তু গেল ১৪ মাসে সিলেট অংশে ১ শতাংশ জমিও বুঝে পায়নি তারা।

যদিও প্রকল্পের শর্ত অনুযায়ী কাজ শুরুর ২৭০ দিনের মধ্যে জমি অধিগ্রহণ শেষে প্রত্যাশী সংস্থাকে হস্তান্তর করতে হবে। অথচ ইতোমধ্যে পেরিয়েছে ৪০৫ দিন।

সিলেট অংশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক দেবাশীষ রায় জানান, জমি বুঝে না পাওয়ায় ঠিকাদার শুধু যেখানে সরকারি জমি আছে সেখানেই কাজ করছে। গত ১৪ মাসে কাজের অগ্রগতি মাত্র ৫ শতাংশ বলে জানান তিনি।

জমি অধিগ্রহণে ধীরগতি হওয়ায় প্রকল্প সঠিক সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে সিলেট ১ আসনের সংসদ-সদস্য ড. একে আব্দুল মোমেন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, অধিগ্রহণ নিয়ে প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা একে অন্যের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন এটা কাম্য নয়। এ প্রকল্পে গতি আনতে হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নজর দিতে হবে। কারণ তিনি যেদিকে নজর দেন সেই প্রকল্পই দ্রুত ও সুন্দরভাবে শেষ হয়।

জানা যায়, ভারত, নেপাল, ভুটান ও চীনের সঙ্গে আন্তঃদেশীয় যোগাযোগের লক্ষ্যে ২০১৮ সালে সিলেট সফরকালে ঢাকা-সিলেট-তামাবিল সড়ক ৬ লেন করার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২৬৫ কিলোমিটার এই সড়কের ৬ লেনে উন্নীত করার প্রকল্প উদ্বোধন করেন ২০২১ সালের অক্টোবরে।

ঢাকা থেকে তামাবিল পর্যন্ত সড়কটি সাতটি জেলা অতিক্রম করবে। এই প্রকল্পে ৭৫ শতাংশ অর্থায়ন করে এডিবি বাকি ২৫ শতাংশ সরকার। প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে ১৩৭১ একর। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জে ৬৯.০৯ একর, নরসিংদীতে ১৮২.২৪ একর, কিশোরগঞ্জে ১২.৩৫ একর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৭৭.১৯ একর, হবিগঞ্জে ৩৯২.৬৬ একর, মৌলভীবাজারে ২১.২১ একর। সবচেয়ে দীর্ঘ ৯২ কিলোমিটার সড়ক সিলেটে পড়েছে। সে কারণে এ জেলায় জমি অধিগ্রহণ করতে হবে ৬২৪ একর।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, জেলার শেরপুর থেকে সিলেট শহর পর্যন্ত ৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আওতায়। এরমধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পেয়ে কাজ শুরু করেছে। যেখানে সরকারি জমি রয়েছে শুধু সেখানেই কাজ করতে পারছে তারা। এক প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে ২০২৩ সালের মার্চ থেকে, অন্যটি মে থেকে। শর্ত অনুযায়ী ২৭০ দিনের মধ্যে জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও ১ শতাংশ ভূমিও পায়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো।

এ বিষয়ে সিলেট অংশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক দেবাশীষ রায় বলেন, জমি হস্তান্তর না হওয়ায় তৃতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখনো কাজ শুরু করেনি। যে প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে তাতে ১৪ মাস শেষে প্রকল্পের অগ্রগতি ৫ শতাংশ বলে দাবি তার।

সড়ক জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া একটি জটিল প্রক্রিয়া তবুও চেষ্টা করা হচ্ছে দ্রুত তা সমাধানের। তার মতে, এই মুহূর্তে যেসব স্থানে সরকারি জমি রয়েছে সেসব স্থানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ করতে তেমন অসুবিধা হবে না। তবুও কোথাও কোনো সমস্যা হলে বিভাগীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসনকে নিয়ে সেসব জটিলতা দূর করা হচ্ছে।

জমি অধিগ্রহণের ধীরগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, এই প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ একটি জটিল প্রক্রিয়া। কারণ এক কিলোমিটারে জমির মালিকানা থাকে প্রায় ১ হাজার জনের। এদের মধ্যে কেউ আপত্তি উত্থাপন করলেই পুরোটা জটিলতায় পড়ে যায়। তবে অধিগ্রহণ দ্রুত শেষ করতে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে জেলা প্রশাসন।

অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জমি হস্তান্তর শুরু করতে আরও ৬ মাস লাগবে বলে জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান।


আরও খবর



তিনদিন বন্ধ থাকতে পারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সিলেট প্রতিনিধি

Image

সিলেটের ওসমানীনগরে কুশিয়ারা নদীর ওপর নির্মিত শেরপুর সেতুর নিচের আরসিসি ঢালাই খসে পড়ায় মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে যান চলাচল। সেতুর ওপরের দিকের একাধিক স্থানেও ফাটল দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় মঙ্গলবার দিনভর সেতুর একপাশে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরে রাতে ঝুঁকিপূর্ণ অংশ ঢালাই করে সাময়িকভাবে দুপাশে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। ফলে গতকাল বুধবার সকাল থেকে সেতু দিয়ে যান চলাচল করছে।

তবে সেতুর ওপরের অংশ সাময়িক শঙ্কামুক্ত হলেও সেতুর নিচ দিয়ে চলাচলের রাস্তা ঝুঁকির মধ্যেই থেকে গেছে। এতে করে অন্তত ১০ গ্রামের মানুষকে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হবে। এ পরিস্থিতিতে স্থায়ীভাবে মেরামত করতে হলে অন্তত তিনদিন সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ছয়লেন প্রকল্পের দায়িত্বশীলরা। এতে করে ওই তিনদিনই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।

যান চলাচল বন্ধ না রাখার বিকল্প কোনো পথ না থাকায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে কীভাবে কাজ করা যায় তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিশেষজ্ঞরা পরিকল্পনা করবেন বলে জানিয়েছে সওজ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার মধ্যরাত ১২টার দিকে হঠাৎ করে সেতুর উত্তরপাড়ের দক্ষিণ অংশের নিচের আরসিসি ঢালাই ভেঙে পড়া শুরু হয়। এ সময় ঢালাইয়ের একটি টুকরো গায়ে পড়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহত সুয়েব আহমদ উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে আছেন।

খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ওসমানীনগর থানার ওসি ও শেরপুর হাইওয়ে থানার ওসি সেতু পরিদর্শন করেন। পরে বস্তা ও প্লাস্টিকের স্ট্যান্ড দিয়ে ভাঙা অংশসহ একপাশে যান চলাচল বন্ধ করে দেন সংশ্লিষ্টরা। পরে মঙ্গলবার রাতে সেতুর ঝুঁকিপূর্ণ অংশ ঢালাই করে সাময়িক মেরামত করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, সেতুতে যখন যানবাহন চলাচল করে তখন কম্পনের সৃষ্টি হয়। পুরো সেতুই দুলতে থাকে। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। একইভাবে সেতুর নিচ দিয়ে শেরপুর নতুন বাজার-লামা তাজপুর রাস্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন অন্তত ১০ গ্রামের বাসিন্দা।

শেরপুর সৈয়দপুর গ্রামের আনোয়ার আলী বলেন, সোমবার রাতে তাজপুর-সৈয়দপুর রাস্তা দিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে শেরপুর সেতুর নিচে পৌঁছামাত্র হঠাৎ করে সেতুর নিচ থেকে ঢালাই ভেঙে মাটিতে পড়ে। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি। একজন ব্যক্তির ওপর ঢালাইয়ের টুকরো ভেঙে পড়ায় তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। এ অবস্থায় মানুষজন সেতুর নিচ দিয়ে খুবই আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করছেন।

সাদিপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাহেদ আহমদ মুছা বলেন, সেতুর বেশকিছু অংশ ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে সোমবার রাতেই ঘটনাস্থলে যাই। দ্রুত সেতু সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, সেতুর নিচের অংশ থেকে আরসিসি ঢালাইয়ের টুকরো ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরে এটি সংস্কারের জন্য ঢাকা-সিলেট ছয়লেন প্রকল্পের দায়িত্বশীলদের জানানো হয়। ছয়লেন প্রকল্প থেকে আমাদের অনুরোধ করা হয় সাময়িকভাবে সেতুটি সংস্কার করে দেওয়ার জন্য। মঙ্গলবার রাতে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ অংশ ঢালাই করে যান চলাচল স্বাভাবিক করেছি। একইভাবে সেতুর নিচ থেকে যাতে আর ঢালাইয়ের টুকরো ধসে না পড়ে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে সেতুর নিচ দিয়ে যান চলাচলের পথ কিছুটা সীমিত করা হয়েছে।

সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আরও বলেন, স্থায়ীভাবে সমাধান করতে হলে এ সেতুতে যান চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। এর আগেও একবার যান চলাচল বন্ধ রেখে কাজ করা হয়েছে। এবারও অন্তুত তিনদিন যান চলাচল বন্ধ না রেখে এ কাজ করা যাবে না।

তবে বিষয়টি যেহেতু ছয়লেন প্রকল্পের অধীনে, তাই প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা ভালোভাবে বলতে পারবেন বলে জানান তিনি।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ছয়লেন প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন বলেন, সেতুটি মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ঢাকা থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল এসে পরিদর্শন করবে। এরপর কীভাবে কাজ করা যাবে তা জানানো হবে। তবে যান চলাচল বন্ধ করা ছাড়া বিকল্প পথ নেই।

কবে থেকে কাজ শুরু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনই বিষয়টি বলা যাচ্ছে না। আমাদের টিম পরিদর্শন করার পর বলতে পারবে কবে কাজ শুরু হবে। তবে এ কাজে বেশি দেরি করা হবে না।


আরও খবর



ঈদযাত্রার ১৫ দিনে সড়কে ঝরল ৪০৭ প্রাণ

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

ঈদ এলেই সড়কে দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। সদ্য বিদায়ী ঈদে মানুষের যাতায়াতে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ৪০৭ জন মানুষ নিহত হয়েছেন এবং ১ হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছেন।

এ সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত, ২১ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ২টি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত, ৫ জন আহত হয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌ পথে সর্বমোট ৪১৯টি দুর্ঘটনায় জন ৪৩৮ নিহত ও ১ হাজার ৪২৪ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টর্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরীর এসব তথ্য জানান। সংগঠনটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

লিখিত বক্তব্যে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৪ এপ্রিল থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ১ হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছে। গত ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ও ৫৬৫ জন আহত হয়েছিল। বিগত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১.২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪.০৮ শতাংশ, আহত ১৪৭.৪৩ শতাংশ বেড়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ১৯৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৫ জন নিহত ও ২৪০ জন আহত হয়েছেন। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৯.৬২ শতাংশ, নিহতের ৪০.৫৪ শতাংশ এবং আহতের ৩০.৩৭ শতাংশ প্রায়। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয়ও আঞ্চলিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পাশাপাশি জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতালে) সড়ক দুর্ঘটনায় আহত। ৬৫৮ জনের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে ৬০৮ জন আহত রোগীর তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করে।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সড়ক, রেল ও নৌ-পথে গত ১৫ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে অবকাঠামো ভালো হওয়ায় যানবাহনের গতি বেড়েছে। গতিকে নিরাপদ করার মতো আইনি কাঠামো, দক্ষ চালক, মানসম্মত যানবাহনের অভাব রয়েছে। আইন প্রয়োগে দুর্নীতির কারণে জাতীয় মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন, নিষিদ্ধ ত্রি-হুইলার, ইজিবাইকের মতো যানবাহন অবাধে চলছে। এছাড়াও ছোট ছোট যানবাহন মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ইজিবাইকের অস্বাভাবিকহারে বেড়ে যাওয়ার কারণে সড়কে বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। তিনি মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের আমদানি বন্ধ করে দেশব্যাপী উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। ফিটনেস বিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ করা, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন ঠেকানো, আইন প্রয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে ডিজিটাল পদ্ধতি প্রয়োগ, চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনির্দিষ্ট করা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা, সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে গণপরিবহনগুলোতে নগন অর্থ বন্ধ করে ডিজিটাল লেনদেন চালুর দাবি জানাচ্ছি।

সংগঠনটি দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ ঈদে যাতায়াতকারী ব্যক্তিগত যানের চালকদের রাতে এসব জাতীয় সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালানো; জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে; মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্র্যাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন এবং অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানো।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশগুলো হচ্ছে জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান; ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন যথাযথভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা; উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্র্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুরদ্রোচ্ছা খান, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ আব্দুল হক, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, মো. মহসিন প্রমুখ।


আরও খবর



মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত হলে প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত হলে তার প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টির যে আভাস দেখা যাচ্ছে, তা সারাবিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা যায়। দেশের অর্থনীতিতে এই সংঘাতের কিছুটা প্রভাব আসতে পারে। তবে সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

বুধবার (৮ মে) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ববাজারের অস্থিতিশীলতা, বাজার ব্যবস্থাপনায় অসামঞ্জস্যতা এবং বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সূত্রে দেশের মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়ার শঙ্কা থাকে। এছাড়া, সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে পণ্য সরবরাহের সাপ্লাই-চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হলে মূলত ইরান বা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রপ্তানি সংশ্লিষ্ট পরিবহন খরচ বাড়তে পারে। এতে পণ্য তৈরি ও সরবরাহ ব্যয় বাড়ায় রপ্তানিকারকরা কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে পারেন।

মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের আশঙ্কার বিষয়ে দেশের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্দেশ দিয়েছি যাতে প্রত্যেকে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান ঘটনাপ্রবাহের ওপর নজর রাখে এবং এ বিষয়ে নিজ নিজ করণীয় নির্ধারণ করে। সংঘাত দীর্ঘ হলে কোন কোন সেক্টরে প্রভাব পড়তে পারে তা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।

তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের যে কোনো সংঘাত বা সংঘাতের খবর জ্বালানি তেলের বাজারকে প্রভাবিত করে। এতে পণ্যের জাহাজ ভাড়া বাড়ে। যা আমদানি ব্যয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। সার আমদানি ব্যয়ে প্রভাব পড়ে। এতে বিকল্প উৎস হিসেবে চীন, মরক্কো, তিউনেশিয়া, কানাডা, রাশিয়া ইত্যাদি দেশের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করা হবে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের সংকট আরও ঘনীভূত ও দীর্ঘায়িত হলে তা বাংলাদেশের ওপর অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলতে পারে। সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে টিসিবির কার্যক্রম সম্প্রসারণ প্রশ্নে ড. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, টিসিবিতে যে লোকবল আছে সেটা দিয়ে আমরা মানুষের যে সেবা করে যাচ্ছি সেটাই যথেষ্ট। আর সাধারণ মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। হ্যাঁ, দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। যার প্রভাব আছে। বিশেষ করে যারা সীমিত আয়ের তাদের জন্য কষ্ট হচ্ছে। তবে গ্রামে যারা নিজেরা উৎপাদন করতে পারেন বা করছেন তাদের জন্য খুব একটা কষ্ট নেই। হাহাকারও নেই। তারপরও আমাদের সবসময় প্রচেষ্টা যে দ্রব্যমূল্য যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ কারণে যথাযথভাবে যে যে পণ্যের প্রয়োজন সেটা দেশে যেমন উৎপাদনের পদক্ষেপ নিয়েছি, পাশাপাশি আমদানিও করে যাচ্ছি। তাতে যত টাকাই লাগুক না কেন, আমরা কিন্তু খরচ করে যাচ্ছি। যার ফলে আমাদের রিজার্ভেও চাপ পড়ছে। মানুষের কল্যাণ আমাদের সব থেকে বড় কথা, সেদিকে লক্ষ্য রাখছি।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে এবং জনসাধারণ উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার সুফল ভোগ করতে পারছে।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবুল কালামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিকে অনেকাংশে সংযত করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, বিশ্ববাজারের কয়েকটি পণ্য যেমন জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, সারসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য ও শিল্পের কাঁচামালের মূল্য বাড়ায় আমাদের দেশে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির চাপ অনুভূত হচ্ছে। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতের ফলে সংকট ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে এ পরিস্থিতেও আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও জনগণের ওপর এর প্রভাব প্রশমনে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। টাকার বিনিময় হারের সাম্প্রতিক পতন অভ্যন্তরীণ মূল্যস্ফীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা আনতে শিগগির ক্রলিং পেগ ভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় নীতি গ্রহণ করা হবে। নির্ধারিত করিডোরভিত্তিক এ ব্যবস্থা বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের অস্বাভাবিক উত্থান-পতন রোধ করবে বলে আশা করা যায়। ফলে এটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মূল্যস্ফীতির ওপর বাহ্যিক প্রভাব কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বিলাস দ্রব্য বা অপেক্ষাকৃত কম প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যে এলসি সহজ করা হয়েছে।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুর রউফের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টি পর্যালোচনাধীন।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপের বিষয়ে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে সরকার প্রধান বলেন, আমাদের ট্রাফিক পুলিশ দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে। তাদের ঈদ বা ঝড়-বৃষ্টি-রোদ বলে কিছু নেই। তারা তাদের কর্তব্য পালন করে যান। কিন্তু মানুষের সচেতনতা না এলে কী করবেন? হেলপার যদি গাড়ি চালায় বা যার লাইসেন্স নেই সে কখন যে কোন গাড়িতে বসে চালাতে শুরু করে এটা তো বোঝাও দুষ্কর। আর এভাবে গাড়ি চালাতে গিয়েই দুর্ঘটনা ঘটে। এরা নিজেও মরে, যাত্রীদেরও মারে।

দেশে ব্যক্তিগত গাড়ি বৃদ্ধি পেয়েছে এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। আমরাও গাড়ি কেনার সুযোগ দিয়েছি মানুষকে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও সুযোগ দিয়েছি। এখন আমাদের গাড়ির সংখ্যা এত বেশি কিন্তু সেই তুলনায় ড্রাইভারের সংখ্যা খুব কম। আমরা চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও নিচ্ছি। এখন শুধু হাতে কলমেই ট্রেনিং নয়, একেবারে কম্পিউটারাইজড। এটা ডিজিটাল সিস্টেমে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যাতে লাইসেন্স দেওয়া হয় সেই পদক্ষেপ নিচ্ছি। এই প্রশিক্ষণটা নেওয়া.. আর যাদের ভারী গাড়ি চালানোর কোনো লাইসেন্স নেই তারা যেন সেটা চালাতে না যান। এটা করতে গেলে তা হবে আত্মঘাতী। এই আত্মঘাতী ব্যবস্থা থেকে মানুষকে বিরত রাখতে হবে। এ ব্যাপারে সবাই সচেতন ও স্বোচ্চার হলে এটা অনেকটা কমবে। তারপরও বলবো দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। এটা আমাদের দেশ বলে নয়, সারা বিশ্বে অন্য দেশে যান কী পরিমাণ মানুষ দুর্ঘটনায় মারা যায়? এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা সুনির্দিষ্ট করে দুর্ঘটনামুক্ত করার পদক্ষেপ নিয়েছি। যার জন্য অনেক এলাকায় দুর্ঘটনা হচ্ছে না। এই ড্রাইভারের ব্যাপারটা নিয়ে সমস্যা।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, চালকদের দীর্ঘ সময় যাতে একটানা গাড়ি চালাতে না হয়- এজন্য আমরা বিশ্রাম করার ব্যবস্থা নিচ্ছি। এজন্য অনেকগুলো বিশ্রামাগার তৈরি করা হচ্ছে। এটা হলে চালকরা কিছু স্বস্তি পাবেন। আর সবাইকে বলবো আপনারা চালকদের দিয়ে গাড়ি চালান। সে সময়মতো গেলো কি না, বিশ্রাম নিতে পারলো কি না? অনেকে সেটা করেন না। আপনারা গাড়ি চালাতে বলে দেন। গাড়ি চলতেই থাকে। আপনি পার্টি করে আসেন, দাওয়াত খেয়ে আসেন কিন্তু ড্রাইভার খেলো কি না সে খবরটা রাখেন না।

আরও খবর