আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম

দরিদ্রদের প্রতি ইসলামের সম্মান

প্রকাশিত:রবিবার ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ | হালনাগাদ:রবিবার ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,

و اصبر نفسك مع الذين يدعون ربهم بالغداة و العشي يريد وجهه و لا تعد عيناك عنهم

و اصبر نفسك مع الذين يدعون ربهم بالغداة و العشي يريد وجهه

و لا تعد عيناك عنهم تريد زينة الحيوة الدنيا

এ অয়াতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সম্বোধন করে বলা হচ্ছে, আপনি নিজেকে তাদের সঙ্গে রাখুন যারা সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহর সন্তুাষ্টির উদ্দেশ্যে তার উপাসনা করে। কখনো এমন যেন না হয়, আপনার দৃষ্টি তাদের থেকে সরে পার্থিব জীবনের চাকচিক্যের প্রতি নিবদ্ধ হয়, অর্থাৎ আপনি ভাবতে থাকেন-এরা দরিদ্র ও সাধারণ প্রকৃতির লোক। তাদের প্রতি দৃষ্টিপাতের কী প্রয়োজন? আপনি সম্পদশালীদের প্রতি মনোনিবেশ করতে থাকেন।

বন্ধুসুলভ ভর্ৎসনা: 

সমস্ত কোরআনে দুতিনটি স্থান এমন, যেখানে আল্লাহ তায়ালা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামান্য ভর্ৎসনা করে বলেন, আপনার এ কাজ আমার পছন্দ হয় না। তন্মোধ্যে একটি হলো, সূরা আবাসা। যার ঘটনাটি এমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে মুশরিকদের কতিপয় সরদার এসেছিল।

তিনি ভাবলেন, যেহেতু তারা সরদার যদি তাদের সংশোধন হয়ে যায়, তাদের মাধ্যমে পুরো জাতির সংশোধনের পথ খুলে যাবে। এ কারণে তাদেরকে দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দেয়ার অধিক গুরুত্ব তার অন্তরে সৃষ্টি হয়ে যায় এবং তাদের প্রতি নিবিষ্ট হয়ে যান। ইতিমধ্যেই হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম যিনি অন্ধ সাহাবি ছিলেন, যাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববীর মুয়াজ্জিন নির্দিষ্ট করেছিলেন, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে এসে কোনো মাসআলা জিজ্ঞেস করেত  লাগলেন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভাবলেন, এ তো আমার নিজের লোক প্রতিদিন সাক্ষাত হয়, এখন তাকে মাসআলা না বলে পরে বলে দেব। তাই তিনি তাকে বললেন, তুমি একটু অপেক্ষ করো, আমি মুশরিক নেতাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ব্যস্ত আছি, যেন তাদের ইসলাম গ্রহণের তাওফিক হয়ে যায়। কারণ যদি তারা মুসলমান হয়ে যায়, তাহরে পুরো সম্প্রদায়ের মুসলমান হওয়ার পথ খুলে যাবে।

ব্যস, ঘটনা এতটুকুই। তবে আল্লাহ তায়ালা এর ওরপর সতর্ক করেছেন এবং এই আয়াত নাজিল করেছেন,

عبس و تولى أن جاءه الأعمى

এ আয়াতে রাসূল (সা.)-কে অনুপস্থিত শব্দে সম্বোধন করেছেন। তিনি ভ্রুকুঞ্চিত করলেন এবং মুখ ফিরিয়ে নিলেন। কারণ তার কাছে অন্ধ লোকটি এসে পড়েছিল।  যেন এ কাজটি আল্লাহ তায়ালার পছন্দ হয়নি।

و ما يدريك لعله يزكى، أو يذكر فتنفعه الذكرى

তোমার কি জানা আছে? হয়ত সে শুধরে যেত। অথবা উপদেশ গ্রহণ করত এবং উপদেশ দান  তার উপকারে আসত

أما من استغنى، فأنت له تصدى

আর যে ব্যক্তি অগ্রাহ্য করছিল (আগ্রহ নিয়ে আপনার কাছে আসেনি, বরং দ্বীনের প্রতি অনাগ্রহ প্রকাশ করছে) আপনি তার প্রতি মনযোগ দিচ্ছেন আর চিন্তা করছেন,

و ما عليك ألا يزكى

অথচ সে নিজেকে না শোধরালে আপনার ওপর কোনো দায়িত্ব বর্তায় না। (যখন তার ভেতরে কোনো আগ্রহ নেই বরং অনাগ্রহ আছে, আপনাকে এর জন্য জবাবদিহি করতে হবে না।)

و أما من جاءك يسعى و هو يخشى فأنت عنه تلهى

পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি দৌড়ে তোমার কাছে আসল এবং সে অন্তরে আল্লাহর ভয় পোষণ করে, তার প্রতি তুমি অবজ্ঞা প্রদর্শন করছ!

আগ্রহীকে প্রাধান্য দেয়া চাই:

এতে নবী করিম (সা)-কে বন্ধুসুলভ ভর্ৎসনা করা হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উদ্দেশ্য কখনোই এটা ছিল না-এ দুর্বল লোক আর ও শক্তিশালী। তাই একে উপেক্ষা করে ওর প্রতি মনোনিবেশ করবেন। বরং তার অন্তরে এ কল্যাণকামিতা ছিল, এ তো নিজের লোক, তার সঙ্গে পরেও কথা বলা যাবে, আর তারা দ্বিতীয়বার আসবে কি না জানা নেই।

তাই তাদের কাছে সত্যের বাণী পৌঁছে দেয়া উচিত। তবে আল্লাহ তায়ালা এটা পছন্দ করেননি। তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি আগ্রহ নিয়ে এসেছে সে অগ্রাধিকার পাবে ওই ব্যক্তির উপর যে আগ্রহ নিয়ে বসেনি এবং উপেক্ষা প্রকাশ করেছে। তার প্রতি মনোনিবেশ করার প্রয়োজন নেই।  বরং যে আগ্রহ নিয়ে এসেছে তার প্রতি মনোনিবেশ করা চাই।

এ আয়াতগুলোতে যদিও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সম্বোধন করা হয়েছে, তবে তার মাধ্যমে পুরো উম্মতকে এ শিক্ষা দেয়া হয়েছে, বাহ্যত সাধারণ কোনো ব্যক্তিকে বাস্তবেই সাধারণ মনে করো না। কারণ জানা নেই আল্লাহ তায়ালার কাছে সে মর্যাদায় কোনো স্তরে আছে। তাই তাকে সম্মান করা চাই।

বেহেশতি ও দোযখীদের আলোচনা: আল্লামা নববী (রহ.) এ প্রসঙ্গে প্রথম এ হাদিস বর্ণনা করেছেন-

عن حارثة وهب رضي الله عنه قال، سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول : ألا أخبركم بأهل الجنة؟ كل ضعيف مستضعف لو أقسم على الله لأبره، ألا أخبركم بأهل النار؟ كل عتل جواظ مستكبر.

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে সম্বোধন করে বলেন, তোমাদেরকে বলবো জান্নাতে কারা? এরপর বলেন, প্রত্যেক যে ব্যক্তি দুর্বল এবং মানুষ যাকে দুর্বল মনে করে, হয়ত সে শারীরিক বা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হবে অথবা মর্যাদা হিসেবে দুর্বল হবে, অর্থাৎ দুনিয়াদারদের কাছে তার মর্যাদা কম।

তবে সে আল্লাহ তায়ালার কাছে এত প্রিয় যে, যদি সে আল্লাহর নামে শপথ করে, আল্লাহ তার শপথ পূর্ণ করে দেন। যদি সে শপথ করে বলে, অমুক কাজ এভাবে হবে, আল্লাহ তায়ালা ওই কাজ ওইভাবে করে দেন। কারণ সে আল্লাহ তায়ালার প্রিয় ব্যক্তি। আল্লাহ তায়ালা তার ভালোবাসার কারণে এরূপই করে দেন।

আল্লাহওয়ালাদের মর্যাদা:

হাদিস শরিফে আছে, একদা দুই নারীর মাঝে ঝগড়া হয়ে গেছে। ঝগড়ায় এক নারী অন্য জনের দাঁত ভেঙ্গে দিয়েছে। ইসলামি আইন অনুযায়ী দাঁতের বদলা দাঁত। যখন এ শাস্তি শোনানো হলো, যে নারীর দাঁত ভাঙ্গার ফয়সালা হলো তার পৃষ্ঠপোষক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি শপথ করে বলছি, তার দাঁত ভাঙ্গবে না।

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সিদ্ধান্তের ওপর আপত্তি করা তার উদ্দেশ্য ছিল না। শত্রুতাও না। বরং আল্লাহ তায়ালার ওপর ভরসা বলে দিয়েছে অবস্থা এমন সৃষ্টি হয়ে যাবে, আল্লাহ চাহে তো তার দাঁত ভাঙ্গবে না। যেহেতু তার অনুভূতি শত্রুতামূলক ছিল না এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সিদ্ধান্তের ওপর আপত্তি করা উদ্দেশ্য ছিল না, এ জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথাটি খারাপ মনে করেননি।

যেখানে ইসলামে এ আইন আছে-দাঁতের বদলা দাঁত, চোখের বদলা চোখ, সেখানে ইসলামে এটাও রয়েছে-আক্রান্ত ব্যক্তি বা তার ওয়ারিসগণ যদি ক্ষমা করে দেয় তাহলে কিসাস রহিত হয়ে যাবে। বদলা নেয়ার কোনো প্রয়োজন থাকবে না। আল্লাহ তায়ালার করুণা, যে মহিলার দাঁত ভেঙ্গেছিল সে বলল, আমি মাফ করে দিলাম। তার ক্ষমা করায় কিসাসের অবসান হলো। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কোনো কোনো লোক আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রিয় হয়ে থাকে। তাদের বাহ্যিক অবস্থা হলে,  এলামেলো চুল, দুর্বল, কারো দরজায় গেলে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। তবে আল্লাহ তায়ালার কাছে তার এতো সম্মান যে, যদি সে আল্লাহর নামে কোনো শপথ করে বসে, আল্লাহ তার শপথ পূর্ণ করে দেন। এই ব্যক্তিও এমন, সে শপথ করে বলেছিল তার দাঁত ভাঙ্গা হবে না। আল্লাহর তার শপথ পূর্ণ করে দিয়েছেন। ওয়ারিশরা ক্ষমা করে দিয়েছে।

এ হাদিসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এদিকে ইঙ্গিত করলেন, এমন ব্যক্তি যে দেখতে দুর্বল, মানুষ তাকে দুর্বল মনে করে, তবে খোদাভীতি, আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে সম্পর্ক ও আল্লাহর এবাদতের বিচারে সে আল্লাহ তায়ালার এত প্রিয় যদি সে আল্লাহর নামে শপথ করে, আল্লাহ তায়ালা তা পূর্ণ করে দেন। এরূপ লোকই জান্নাতি।

কঠোর স্বভাব ক্ষতিকারক:

এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি তোমাদেরকে বলবো জাহান্নামী কারা? তারপর বললেন,

كل عتل جواظ مستكبر

প্রত্যেক যে ব্যক্তি কঠোর স্বভাবের হয়

এর অর্থ কঠোর স্বভাবের, রুঢ় ব্যক্তি, যে নম্ররতার সঙ্গে কথা বলে না। কঠোরতা ও ক্রোধের সঙ্গে কথা বলে, অন্যকে তুচ্ছ মনে করে। جواظ অর্থ চড়া মেজাজ, যার ললাটে সর্বদা ভাঁজ পড়ে থাকে, সাধারণ প্রকৃতির মানুষের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত হয় না। দুর্বল ও নিম্ন শ্রেণির লোাকদের সঙ্গে কথা বলাতে অপমানবোধ করে। সর্বদা আত্মম্ভরী থাকে।

مستكبر অহংকারী, যে নিজেকে বড় মনে করে এবং অন্যকে ছোট মনে করে। এ সকল গুণাবলীর অধিকারীদের ব্যাপারে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন জাহান্নামী। কারণ তারাই عتل, جواظمستكبر এবং তারা নিজেকে বড় মনে করে।

দরিদ্র লোক:

একদা মক্কার কাফেররা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলল, আমরা তো আপনার কাছে আসতে ও আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত আছি, তবে সমস্যা হলো আপনার কাছে সর্বদা সাধারণ প্রকৃতির দরিদ্র লোক বসে থাকে। তাদের সঙ্গে বসা আমাদের মর্যাদারপরিপন্থী। তাই আপনি তাদের ও আমাদের আলাদা আলাদা বসার ব্যবস্থা করুন। তখন আমরা আপনার কাছে এসে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত আছি।

বাহ্যত এতে কোনো মন্দত্ব ছিল না। তাদের জন্য ভিন্ন সময় নির্দিষ্ট করা হতো, সে সময় তারা দ্বীনের কথাবার্তা শুনতো। হয়ত দ্বীনের কথা শুনলে তাদের সংশোধন হয়ে যাবে। আমরা হলে তো মেনে নিতাম। আল্লাহ তায়ালা তৎক্ষণাত আয়াত অবতীর্ণ করেছেন-

و لا تطرد الذين يدعون ربهم بالغداة و العشي يريدون وجه

তাদেরকে বিতারিত করো না যারা তাদের প্রতিপালককে ডাকে সকাল-সন্ধ্যা তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্য

এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করে দিলেন, সত্যের আগ্রহ নিয়ে আসতে চাইলে তাদের সঙ্গে বসতে হবে। আর যদি বসতে না চাও তাহলে আল্লাহ ও তার রাসূল তোমাদের থেকে অমুখাপেক্ষী। তোমাদের জন্য ভিন্ন মজলিসের আয়োজন করা হবে না।


আরও খবর



আচরণবিধি ভঙ্গ করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না: ইসি

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কেউ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।

তিনি বলেন, আগামী ৮ মে ১ম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ইতোমধ্যে কমিশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

শুক্রবার (৩ মে) সকালে সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মুনসুর আলী অডিটোরিয়ামে ১ম ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জেলার ৩ টি উপজেলার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, সম্ভাব্য প্রার্থী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, নির্বাচন আচরণবিধি না মানলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সেই সঙ্গে কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখা হবে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ন কবীরের সভাপতিত্বে রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক আনিছুর রহমানসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



অন্তরঙ্গ অবস্থায় ধরা খেলেন প্রধান শিক্ষক, গাছের সঙ্গে বেঁধে গণধোলাই

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

Image

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের তালুক ফলগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী বকুল (৫০) পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে মধ্যরাতে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৪ মে) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মিলন কুমার চ্যাটার্জি।

সোমবার রাতে এ-সংক্রান্ত ২৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এর আগে রোববার (১২ মে) রাতে উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের হুড়াভায়া খাঁ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গণধোলাইয়ের শিকার গোলাম রব্বানী বকুল ওই ইউনিয়নের আরাজি দহবন্দ গ্রামের নিয়ামতুল্লাহ সরকারের ছেলে ও দহবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম কবির মুকুলের বড় ভাই।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের হুড়াভায়া খাঁ গ্রামের মোস্তাফিজার রহমানের স্ত্রী আলেমা বেগমের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক গোলাম রব্বানী বকুলের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। প্রায় রাতেই তিনি ওই নারীর বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার গভীর রাতেও ওই নারীর সঙ্গে তার বাড়িতে দেখা করতে যান গোলাম রব্বানী বকুল। তাদেরকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখতে পেয়ে ওই নারীর ছেলে গোলাম রব্বানীকে আটক করে স্থানীয়দের খবর দেন। স্থানীয়রা এসে তাকে গণধোলাই দিয়ে বাড়ির পাশে একটি সুপারি গাছে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন।

পরে অভিযুক্ত শিক্ষক গোলাম রব্বানীর ছোট ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কবির মুকুল ও সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম ফুলবাবুসহ তার কয়েকজন আত্মীয় এসে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী বকুল ও তার ছোট ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কবির মুকুলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি।

তবে সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম ফুলবাবু বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি স্থানীয়রা গোলাম রব্বানী বকুলকে সুপারি গাছে বেঁধে রেখেছেন। পরে তার ছোট ভাই গোলাম কবির মুকুল ও ভাতিজারা এসে নিয়ে যান।’

তিনি এর আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছিলেন বলে এ ইউপি সদস্য জানান।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার (প্রাথমিক) মো. আশিকুর রহমান বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি আমার ক্লাস্টারের আওতাভুক্ত ফলগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তবে আমাদেরকে বিষয়টি এখনও কেউ জানায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দহবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল আলম সরকার রেজা বলেন, এক নারীর সঙ্গে অনৈতিক কাজ করার সময় গোলাম রব্বানী বকুলকে স্থানীয়রা গণধোলাই দিয়েছেন বিষয়টি শুনেছি।’

সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. মাহবুব আলম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনও কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’


আরও খবর



আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল: বাইডেন প্রশাসন

প্রকাশিত:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা অস্ত্র দিয়ে গাজায় হামলার ক্ষেত্রে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ তুলেছে বাইডেন প্রশাসন। স্থানীয় সময় শুক্রবার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হয়। কংগ্রেসে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়া পর এমন তথ্য সামনে এসেছে।

হোয়াইট হাউসের নির্দেশিত পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত বছর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত অস্ত্র ইসরায়েল কীভাবে ব্যবহার করেছে। যদিও ওই প্রতিবেদনে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযানের তীরষ্কার করা হয়। তবে এটা স্পষ্ট করে বলা হয়নি যে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী গাজায় হামলার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে কি-না।

এতে আরও বলা হয়, গাজায় হামলার ক্ষেত্রে ইসরায়েল সেনাবাহিনীকে হামাসের বিরুদ্ধে একটি কঠিন সামরিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইসরায়েল যেভাবে আশস্ত করেছে এজন্য তাদের আরও অস্ত্র পাঠানো যেতে পারে।

আরও বলা হয়, সামরিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য হামাস যেভাবে বেসরকারি অবকাঠামোতে হামলা এবং মানব ঢলকে যেভাবে ব্যবহার করেছে তাতে বৈধ প্রক্রিয়ায় স্থলভাগে নির্দিষ্ট বস্তুকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো কঠিন ছিল।

এদিকে সিএনএনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে জো বাইডেন বলেছেন, ওই বোমার আঘাতে এবং অন্যভাবে গাজায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষ মারা গেছেন। ইসরাইলের প্রতিরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দায়বদ্ধ। তাই তারা আয়রন ডোম রকেট ইন্টারসেপটার দেবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র একটা বিভাজনরেখাও তৈরি করেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ইসরাইল যদি রাফাতে আক্রমণ করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ দেবে না।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ভয়াবহ হামলা চালায় ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। ওই সময়ে তারা ১২০০ মানুষকে হত্যা এবং ২৫৩ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়।

এ হামলার প্রতিবাদে গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। কিন্তু হামলায় দেশটি কোনো নিয়মের তোয়াক্কা করেনি। ফলে ৩৪ হাজারের বেশি নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।


আরও খবর



এপ্রিলে প্রবাসী আয় এসেছে ২০৪ কোটি ডলার

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

সদ্য বিদায়ী এপ্রিল মাসে ২০৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ২২ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার সমান ১১০ টাকা ধরে)। এ মাসে দৈনিক গড়ে এসেছে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ৭৪৮ কোটি টাকা।

এর আগের মাস মার্চে প্রায় দুই বিলিয়ন (১.৯৯ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে দেশে। তবে ওই মাসে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, বিদেশিখাতের হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে।

এর আগে চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ২১০ কোটি বা ২ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। দ্বিতীয়মাস ফেব্রুয়ারিতে এসেছিল ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার, মার্চে প্রায় দুই বিলিয়ন এবং এপ্রিলে এলো দুই বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। ২০২৩ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরে এসেছিল ১৯৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।

গত বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে আসে ১৫৬ কোটি ডলার, মার্চে ২০২ কোটি, এপ্রিলে ১৬৮ কোটি, মে মাসে ১৬৯ কোটি, জুনে ২২০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে। এছাড়া জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি, আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ, সেপ্টেম্বরে ১৩৩ কোটি, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি, নভেম্বরে ১৯৩ কোটি এবং ডিসেম্বরে আসে ১৯৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স।

এর আগে ২০২০ সালে হুন্ডি বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২ হাজার ১৬১ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এটি এ যাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে করোনাকালীন ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।


আরও খবর



ছুটির দিনে ‘গ্রহণযোগ্য’ ঢাকার বাতাস

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ ১ মে ৯৬ স্কোর নিয়ে ১৬ নম্বরে অবস্থান করছে ঢাকা। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) ঢাকার এ অবস্থান দেখা গেছে। এই স্কোর বাতাসের মানকে মাঝারি বা গ্রহণযোগ্য নির্দেশ করে।

এদিকে, বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় আজ ১৯০ স্কোর নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে নেপালের কাঠমান্ডু। ১৬৯ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি।

৫১ থেকে ১০০ স্কোর হলে মাঝারি বা গ্রহণযোগ্য মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে বাতাসের মান সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে অস্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে খুব অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১+ একিউআই স্কোরকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)। দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।


আরও খবর