ঢাকার বাতাসে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী আর্সেনিক,
সিসা ও ক্যাডমিয়ামের পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রার প্রায় দ্বিগুণ
পরিমাণে রয়েছে বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি
এবং ই-বর্জ্য পুনর্ব্যবহারকারী শিল্প, কয়লাভিত্তিক ইটভাটা এবং যানবাহন এসব রাসায়নিক
উপাদানের উচ্চ ঘনত্বের জন্য দায়ী। বিশ্বের ২৭টি স্থানের বাতাস নিয়ে এই গবেষণা চালানো
হয়েছে।
‘এলিমেন্টাল ক্যারেক্টারাইজেশন অব অ্যাম্বিয়েন্ট
পার্টিকুলেট ম্যাটার ফর এ গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউটেড মনিটরিং নেটওয়ার্ক: মেথডোলজি অ্যান্ড
ইমপ্লিকেশনস’ নামে এই গবেষণাটি
গত ১০ মার্চ এসিএস ইএস অ্যান্ড টি এয়ার জার্নালে প্রকাশিত হয়।
গবেষণায় শহরের বাতাসে ক্যান্সার সৃষ্টি
করতে পারে এমন আরেকটি উপাদান কোবাল্টের উচ্চ মাত্রায় উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। ঢাকা-ই
একমাত্র স্থান যেখানে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশু উভয়ের ক্যান্সার সৃষ্টির ঝুঁকি মানদণ্ড
ছাড়িয়েছে।
সারফেস পার্টিকুলেট ম্যাটার নেটওয়ার্ক
বিশ্বের একমাত্র সংস্থা যারা দুনিয়ার বিভিন্ন দেশের বাতাসে সূক্ষ্ম কণার ঘনত্ব পরিমাপের
মাধ্যমে কোন কোন এলাকার বাতাসে রাসায়নিক উপাদানের ঘনত্ব বেশি তা শনাক্ত করে।
গবেষকরা বাতাসে ধূলিকণা, রাসায়নিক উপাদানের
বিস্তার ও মানুষের স্বাস্থ্যে এসবের প্রভাব মূল্যায়ন করতে ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে
সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষা করেন।
গবেষকদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন
বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সালাম। তিনি জানান, বাংলাদেশের পরিবেশে সীসার দূষণের কারণে বাতাসেও
বিপজ্জনক মাত্রায় এর উপস্থিতি দেখা গেছে।
তিনি বলেন, ‘একসময় বাতাসে
সীসার ঘনত্ব অনেক বেশি ছিল। তারপরে এটি অনেক হ্রাস পায়। আমরা সাধারণত প্রতি ঘনমিটার
বাতাসে ৪০০ থেকে ৫০০ ন্যানোগ্রাম পেতাম। কিন্তু এখন আবার এক হাজারেরও বেশি ন্যানোগ্রাম
পাওয়া যাচ্ছে।'
গবেষণায় ঢাকার বাতাসকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ
পাওয়া যায়, এর পরেই রয়েছে ভারতের কানপুর, ভিয়েতনামের হ্যানয়, সিঙ্গাপুর, চীনের বেইজিং
এবং তাইওয়ানের কাওসিউং।