আজঃ শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিরোনাম

চলমান পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্পের আমদানি-রপ্তানি সচল রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা বিজিএমইএ’র

প্রকাশিত:সোমবার ১২ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১২ আগস্ট ২০২৪ | পত্রিকায় প্রকাশিত
রাহুল সরকার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

Image

দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝে তৈরী পোশাক শিল্পের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বিজিএমইএ পরিচালনা পর্ষদ অক্লান্ত পরিশ্রম এবং যোগাযোগ রক্ষা রেখে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী।

সোমবার (১২ আগস্ট) বিজিএমইএ'র চট্টগ্রাম নেতৃবৃন্দরা কাস্টমস হাউস কমিশনার সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় বিজিএমইএ সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, পরিচালক এম. এহসানুল হক, মোহাম্মদ মুসা, আমজাদ হোসাইন চৌধুরী, মোস্তফা সরওয়ার রিয়াদ, রাকিব আল নাসের, গাজী মোঃ শহিদুল্লাহ, বিজিএমইএ প্রাক্তন পরিচালক সাইফ উল্লাহ মনসুর, চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিজিএমইএ সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন বলেন, এখন তৈরী পোশাক শিল্প ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। তার উপর দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে যদি আমদানি-রপ্তানিতে কোন বিঘ্ন ঘটে, তবে এই শিল্প কোনভাবেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে নয়। যা আমাদের কারো কাম্য নয়। এই ক্ষেত্রে শতভাগ রপ্তানিমুখী তৈরী পোশাক শিল্পের অন্যতম প্রধান সহায়ক সরকারী গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা কাস্টমস হাউজের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রয়োজন।

তাই কাস্টমস কর্মকর্তাগণ গার্মেন্টস শিল্পের আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সহযোগিতার বিষয়ে বিজিএমইএ প্রতিনিধি দলকে আশ্বাস প্রদান করেন।

এর আগে গত বুধবার (৭ আগস্ট) চট্টগ্রামের বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দরা কাস্টমস হাউস, কাস্টমস বন্ড ও চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেন।


আরও খবর



নিষেধাজ্ঞার মাঝেই সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার

প্রকাশিত:রবিবার ১৮ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৮ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
তারিক লিটু, কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি

Image

প্রতি বছর ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে প্রবেশ ও মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকে। মূলত এ সময়টাকে মাছের প্রজনন মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। তবে নিষেধাজ্ঞার মাঝেই বনের নদ-নদী ও খালে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার করছেন একশ্রেণীর জেলেরা। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বনের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য।

অভিযোগ রয়েছে, বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে সুন্দরবনসংলগ্ন জেলেরা বিষ দিয়ে মাছের পাশাপাশি কাঁকড়াও শিকার করছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উপকূলের প্রান্তিক মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস সুন্দরবন। বিষ প্রয়োগের ফলে পানি বিষাক্ত হয়ে অন্যান্য জলজ প্রাণীও মারা যাচ্ছে। উদ্ভিদের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।

বন বিভাগের তথ্য বলছে, ১৩টি বড় নদীসহ ৪৫০টির মতো খাল রয়েছে সুন্দরবনে। জোয়ারে পানিতে প্লাবিত হওয়া বনের জলাধার ভেটকি, রূপচাঁদা, দাঁতিনা, চিত্রা, পাঙাশ, লইট্যা, ছুরি, মেদ, পাইস্যা, পোয়া, তপসে, লাক্ষা, কই, মাগুর, কাইন, ইলিশসহ ২১০ প্রজাতির সাদা মাছের আবাস। এছাড়া রয়েছে গলদা, বাগদা, চাকা, চালী, চামীসহ ২৪ প্রজাতির চিংড়ি। শিলাসহ ১৪ প্রজাতির কাঁকড়ার প্রজননও হয় এখানে। পাশাপাশি এখানে ৪৩ প্রজাতির মালাস্কা ও এক প্রজাতির লবস্টার রয়েছে।

সুন্দরবনের সাধারণ জেলে ও বাওয়ালিদের অভিযোগ, কিছু জেলে সুন্দরবনের ভেতরে ঢুকে বিষ দিয়ে মাছের পাশাপাশি কাঁকড়া শিকার করেন। এসব মাছ ও কাঁকড়া আশপাশের এলাকার আড়ত এবং বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হয়। বনের ভেতরে কাঠ পুড়িয়ে চলে শুঁটকি তৈরি। সম্প্রতি কয়রা ও দাকোপের ২০-২৫ জন মাছ ব্যবসায়ী বনের টহল ফাঁড়ির কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে জেলে বহর নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছেন।

তবে বন বিভাগ বলছে, সুন্দরবনকেন্দ্রিক সব ধরনের অপরাধ দমনে সচেষ্ট তারা। ১ আগস্ট সুন্দরবনের জোলাখালীর খালে বিষ ছিটিয়ে শিকার করা ৭০ কেজি চিংড়িসহ একটি নৌকা জব্দ করেছেন বন বিভাগের কর্মীরা। তবে এর সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি বন বিভাগ। তাছাড়া বনের মার্কি ও মান্দারবাড়ী এলাকায় এমন দুটি স্থানের সন্ধান পেয়ে তা উচ্ছেদ করেছেন তারা। সেখানে গাছ কেটে তৈরি করা হয়েছে ফাঁকা জায়গা। সুন্দরী, পশুর, গেওয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ সাজিয়ে বিশেষ কায়দায় বানানো হয়েছে মাচা। এসব মাচার ওপর চিংড়ি রেখে নিচে তৈরি আরেকটি মাচায় গাছ রেখে আগুন দেয়া হয়। এ প্রক্রিয়ায় চিংড়ি শুকিয়ে তৈরি হয় শুঁটকি। গত বছরের ২২ জুলাই মান্দারবাড়ী খালসংলগ্ন এলাকায় গাছ কেটে চিংড়ি শুকানোর একটি মাচার সন্ধান পান বন রক্ষীরা।

সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির বলেন, প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় এক শ্রেণীর জেলে সুন্দরবনের ভেতরে ঢুকে বিষ দিয়ে মাছ ও কাঁকড়া শিকার করেন। এতে পানি বিষাক্ত হয়ে অন্যান্য জলজপ্রাণীও মারা যাচ্ছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বনের জলজ জীববৈচিত্র্য। উদ্ভিদের ওপরও এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। উপকূলের প্রান্তিক মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস সুন্দরবন। বন ঘিরে প্রায় দেড় লাখ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। নিয়ম মেনে সুন্দরবন থেকে সম্পদ আহরণ করা না হলে ইকোসিস্টেমের ক্ষতি হবে। মাছ ও গাছ আশঙ্কাজনক কমে যাওয়ার কারণে প্রান্তিক মানুষও জীবিকার উৎস হারাচ্ছে। এ কারণে তাদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতাও বেড়েছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সুন্দরবন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, সুন্দরবনের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। তবে বনের ক্ষতি করে নয়। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতেই বনের ভেতরে প্রবেশের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা। এটা যত জোরদার হবে ততই সুন্দরবনের জন্য ভালো। সুন্দরবন সুরক্ষায় এর ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর বিকল্প কর্মসংস্থানে রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ এবং বনে প্রবেশাধিকার আরো সংরক্ষিত হওয়া দরকার। অবস্থানগত কারণে খুলনার নয়টি উপজেলার মধ্যে কয়রার বেশির ভাগ মানুষই সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল। এ জেলার সুন্দরবন প্রভাবিত অন্য উপজেলাটি হলো দাকোপ। এ উপজেলা দুটির সুন্দরবনসংলগ্ন গ্রামগুলোর মানুষ মাছ, কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করে।

এ বিষয়ে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, নিষিদ্ধ মৌসুমে সুন্দরবনকেন্দ্রিক সব ধরনের অপরাধ দমনে সচেষ্ট বনরক্ষীরা। এর মধ্যে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বনরক্ষীদের কারো বিরুদ্ধে অবহেলা অথবা অপরাধীর সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সুন্দরবন থেকে সরাসরি সম্পদ আহরণ করেন দুই থেকে তিন লাখ বনজীবী। তাদের বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।


আরও খবর



ভুল চিকিৎসায় প্রসুতির মৃত্যু, লাখ টাকায় সমোঝতা

প্রকাশিত:শনিবার ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মামুন হোসাইন, চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি

Image

ভোলার চরফ্যাশনে হাসপাতাল রোডে অবস্থিত সেন্টাল ইউনাইটেড নামের প্রাইভেট ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আঁখি আক্তারের ভুল চিকিৎসায় অস্ত্রপাচারের সময় মুন্নি আক্তার নামের এক প্রসুতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। অস্ত্রপাচারের সময় প্রসুতির মৃত্যু হলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় সদ্যভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতক শিশু। ওই ক্লিনিকে প্রসুতির নারীর মৃতু হলে বিষয়টি চিকিৎসক বিষয়টি গোপন রেখে প্রস্তুতিকে দ্রুত বরিশাল শেবাচিমে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

পরিবারের সদস্যরা ঘটনাটি টের পেয়ে ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ক্লিনিকের ভিতরে হট্টোগোল শুরু করেন। পরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে পরিবেশ শান্ত হয়। পরে রাতেই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ওই নারীর পরিবারকে এক লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করেন।  নিহত মুন্নি আক্তার আমিনাবাদ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ৬টায় ওই ক্লিনিকে প্রসুতির নারীকে অস্ত্রপাচারের সময় তার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

নিহত প্রসুতি নারী মুন্নির বাবা আনোয়ার হোসেন জানান, দুপুরে তার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের প্রসব বেদনা শুরু হলে তার পরিবারের সদস্যরা চরফ্যাশনের সেন্টাল প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যান। কর্তব্যরত গাইনি চিকিৎসক ডাঃ আঁখি আক্তার কোন রকম পরিক্ষা ছাড়াই গর্ভের সন্তান সংকটাপন্ন বলে জানান এবং পূর্বের পরিক্ষার রির্পোট অনুযায়ী তার মেয়েকে অস্ত্রপাচারের সিদ্ধান্ত নেন। অস্ত্রপাচারের সময় নবজাতক শিশু জিবিত থাকলেও মৃত্যু হয় মেয়ে মুন্নি আক্তারের। বিষয়টি চিকিৎসক ও নার্সরা গোপন রেখে তার মেয়ের অবস্থাসংকাটপ্ন বলে তাকে দ্রুত বরিশালে নিয়ে যাওয়র পরামর্শ দেন। ঘটনাটি তিনি এবং তার স্বজনা বুঝতে পেরে ওই ক্লিনিকে হট্টোগোল শুরু করলে ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের চাপের মুখে পড়ে তারা মেয়েকে লালামোহন হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান অস্ত্রপাচারের সময় তার মৃত্যু হয়েছে। পরে তারা মরদেহ নিয়ে ওই ক্লিনিকে গেলে কর্তৃপক্ষের চাপের মুখে তারা  মৃতদেহ নিয়ে ক্লিনিক ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

তিনি আরও জানান, রাতে তারা নিহত মুন্নির মরদেহ দাফনের পর ওই ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষরা তাদের বাড়িতে যান। এবং তার মেয়ে গর্ভের ভূমিষ্ঠ হওয়ার নবজাতকের চিকিৎসা করানোর জন্য তার হাতে এক লাখ টাকা তুলেন দেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ চরফ্যাশনের আনাচকানাচে গড়ে উঠা অবৈধ ক্লিনিক গুলোতে চিকিৎসকদের ভূল চিকিৎসায় প্রান হারান অসংখ্য প্রসুতি নারীরা। ক্লিনিক গুলোতে প্রসুতি নারীরা চিকিৎসা বা নরমাল ডেলিভারির জন্য গেলে চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ গ্রামের সহজ সরল মানুষদের ভুল বুঝিয়ে সিজার করাতে বাধ্য করান। নিরুপায় হয়ে সিজারের নামে চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ হাতিয়ে নেন হাজার হাজার টাকা। পাশাপাশি তাদের অপচিকিৎসার বলি হন প্রসবের জন্য গ্রাম থেকে ছুটে আসা নারীরা। এসব ক্লিনিকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তারা।

এবিষয়ে জানতে ওই ক্লিনিকে গেলে চিকিৎসক আঁখি আক্তারকে পাওয়া যায়নি। পরে তার মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানাযায়নি।

তবে ওই ক্লিনিকের পরিচালক মো. বশির আহমেদ জানান, নারীর পরিবার বাড়িতে নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করে যখন প্রসুতির অবস্থা সংকাটপ্ন তখন তাদের ক্লিনিকে নিয়ে আসেন।

চিকিৎসকের কাছ থেকে যতটুকু জানতে পেরেছি গর্ভের সন্তানের অবস্থা সংকাটপন্ন হওয়ায় তাকে দ্রুত অস্ত্রপাচারের সিদ্ধান্ত নেন। পরে প্রসুতি নারীর জ্ঞান না ফেরায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে রেফার করা হয়। তবে চিকিৎসকরা ধারনা করেছেন ওই নারীর অস্ত্রপাচারের সময় স্টোক করেছেন। পরে তিনি মারা গেছেন।

নিউজ ট্যাগ: চরফ্যাশন ভোলা

আরও খবর



সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এলো ৫৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স

প্রকাশিত:রবিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

চলতি বছরের এপ্রিল, মে ও জুন মাসে টানা দুই বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। জুনে তা কমে ফের দুই বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যায়। জুলাই মাসে রেমিট্যান্সের গতি আরও কমে। তখন ১৯১ কোটি মার্কিন ডলারের নিচে নেমে আসে। যদিও এর পেছনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর ঘোষণা দেয়।

তবে শেখ হাসিনা সরকারের পরিবর্তনের পরপরই বাড়তে থাকে রেমিট্যান্সের গতি। নতুন সরকারের শুরুতে আগস্টে ফের রেমিট্যান্সের পালে হাওয়া লাগে যার গতিতে দুই বিলিয়ন (২২২ কোটি ডলার) ডলার ছাড়িয়ে যায়।

সেই ধারাবাহিকতায় রেমিট্যান্সে নতুন রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে দেশ। চলতি মাস সেপ্টেম্বরে প্রতিদিন গড়ে ১১ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে। গত বৃহস্পতিবার একদিনেই এসেছে প্রায় ১৩ কোটি (১২.৮০) ডলার। যা দেশের জন্য এক নতুন রেকর্ড গড়েছে।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয় চলতি মাসের প্রথম ৭ দিনে দেশে এসেছে ৫৮ কোটি ৪৫ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৫ কোটি ২৭ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার। আর বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৪১ কোটি ৫২ লাখ ৭০ হাজার ডলার আসে। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে আসে ১ কোটি ৪৮ লাখ ৩০ হাজার ডলার এবং বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।

উল্লেখ্য, ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর গত ৮ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের অনুরোধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর পরেই সব কিছুতে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। বাদ যায়নি অর্থনীতিতেও।


আরও খবর



বন্যা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৮ নির্দেশনা

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৩ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৩ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বর্তমান বন্যা পরিস্থিতিতে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু, মেডিকেল টিম গঠনসহ আটটি নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম, সিলেট বিভাগের পরিচালক, ওই দুই বিভাগের সব সিভিল সার্জনসহ কর্মকর্তাদেরকে এই নির্দেশনা দেন অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদক্ষেপ-

১. বন্যাকবলিত এলাকার সব সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কার্যালয়ে সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু রাখতে হবে।

২. প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম ও মেডিকেল টিম গঠন করে দুর্যোগ মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখতে হবে।

৩. বন্যাকবলিত এলাকায় প্রতিটি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি ডায়রিয়া, সর্প দংশনসহ বন্যা সংক্রান্ত অন্যান্য রোগের চিকিৎসার জন্য যথোপযুক্ত প্রস্তুতি রাখতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন, অ্যান্টিভেনম মজুত রাখতে হবে।

৪. বন্যাদুর্গত এলাকার হাসপাতালে যন্ত্রপাতিগুলো যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য উঁচু স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে।

৫. জরুরি ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী মজুত এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রীসহ অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখতে হবে।

৬. বন্যাদুর্গত জেলাগুলোর সব চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী বিভাগীয় পরিচালকের (স্বাস্থ্য) অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না।

৭. স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য বন্যাদুর্গত এলাকার সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে অনুরোধ করা হয়েছে।

৮. বন্যা মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ গঠিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক সমন্বয় ও যোগাযোগ রাখতে হবে।

এদিকে, বন্যাকবলিত এলাকায় চিকিৎসক-নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি বাতিল করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।


আরও খবর



খুলনা মেডিকেলের ৪১ চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, চিকিৎসাসেবা বন্ধ

প্রকাশিত:বুধবার ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
খুলনা প্রতিনিধি

Image

ভেঙে পড়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা। হাসপাতালের ৪১ চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ও কালো তালিকাভুক্ত করায় বন্ধ রয়েছে বহির্বিভাগের অধিকাংশ সেবা। বুধবার (৪ আগস্ট) সকাল থেকে কর্মস্থলে আসেনি বহির্বিভাগের অধিকাংশ চিকিৎসক। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা।

হাসপাতাল সূত্র বলছে, মঙ্গলবার খুলনা মে‌ডি‌কেল কলেজের শিক্ষার্থী‌দের এক‌টি অংশ হাসপাতা‌লের ভারপ্রাপ্ত উপপ‌রিচালক ডা. আক্তারুজ্জামানকে পদ‌ত‌্যাগ করতে বাধ্য করেন। এ সময় আরও ৪১ জন চি‌কিৎসক‌কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থী‌দের নেতৃত্ব দেন কা‌র্ডিও‌লো‌জি বিভাগের সহকারী অধ‌্যাপক ডা. মোস্তফা কামাল। ফলে বুধবার নিরাপত্তা ঝুঁকি‌তে হাসপাতা‌লে আসেন‌নি অনেক চি‌কিৎসক।

সরেজমিন দেখা যায়, ব‌হির্বিভা‌গের ২০২নং রুমের প্রীতম চক্রবর্তী, ২০৯নং রুমের ডা. হিমেল সাহা, ২০৭নং রুমের ডা. অনিরুদ্ধ সরদার, ২০৫নং রুমের ডা. শেখ তাসনুভা আলম, ২০৪নং রুমের ডা. সুব্রত কুমার মন্ডল, ২০৩নং রুমের আরএমও ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার, ২১১নং রুমের ডা. দীপ কুমার দাশ, ২১২নং রুমের আরএমও ডা. সুমন রায়, ১০৩নং রুমের ডা. তড়িৎ কান্তি ঘোষ, ৩০৮নং রুমের ডা. নিরুপম মন্ডল, ২০৪নং রুমের ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন, ৪১১নং রুমের ডা. রনি দেবনাথ তালুকদার, ৪১০নং রুমের ডা. মিথুন কুমার পাল, ৪১২নং রুমের ডা. জিল্লুর রহমান তরুণ, ১০৫নং রুমের চিকিৎসক শিবেন্দু মিস্ত্রিসহ প্রায় ২০ জন চি‌কিৎসক অনুপস্থিত। নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় তারা হাসপাতালে আসেননি বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা।

এ ছাড়া আন্তঃবিভাগের সহকা‌রী রেজিস্ট্রার কনসালট‌্যান্টসহ আরও ২১ জন চি‌কিৎসক অনুপ‌স্থিত। এতে পুরো হাসপাতালের চি‌কিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা সেবা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন।

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা থেকে আসা আরেফিন বিল্লাহ বলেন, বাড়ি থেকে ডাক্তার দেখাতে এসেছি সকাল ১০টার দিকে। দুপুর পার হলেও চিকিৎসক আসেননি। আমি শিক্ষকতা করি, আজ ছুটি থাকায় এসেছি। অথচ এসে ডাক্তার দেখাতে পারিনি। শুধু আমি নই, অন্য রোগীরাও ফিরে যাচ্ছেন।

হাসপাতালে আসা রোগী সাদিয়া আফরিন বলেন, ডাক্তার দেখাতে এসেছি সেই সকালে, এখনও দেখাতে পারিনি। আজ তো দেখাতে পারিনি, আগামীকালও ডাক্তার আসবে কি না জানি না।

ডাক্তারদের রুমের সামনে রোগীদের সিরিয়াল দেখভালের দায়িত্বরতরা জানান, সকালে আমরা এসেছি। এসে দেখি চিকিৎসকরা আসেননি। ফোন করলে তারা জানিয়েছেন, নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা, এ জন্য আসেননি। রোগীরা আসছেন, আবার ফিরে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুমন রায় মুঠোফোনে বলেন, গতকাল ইনটার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে তাদের দাবির বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছিল। এ সময় ডাক্তার মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে কিছু শিক্ষার্থী এসে আমাদের ঘিরে ধরে। পরে তারা উপপরিচালককে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। আর আমাদের প্রায় ৫১ জন চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। ফলে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় আমরা আসিনি।

মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-সংলগ্ন নগরীর ১৭নং ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক মো. ফারুক বলেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. শফিকুল আলম মনা আমাকে পাঠিয়েছেন, হাসপাতালে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চিকিৎসকদের নিয়ে কোনো বিশৃঙ্খলা হচ্ছে কিনা দেখতে। সকালে আমরা এখানে এসেছি, এসে দেখি ডা. মোস্তফা কামাল নেই। বহির্বিভাগে অনেক রোগী এসে ফিরে যাচ্ছে। এটা কাম্য নয়। আমরা চাই হাসপাতালের সুষ্ঠু পরিবেশ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, গত ১৬ বছর বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, তারা নিগৃহের শিকার হোক আমরা চাই না। আমরা জানতে পেরেছি, অনেকেই ব্যক্তিগত আক্রোশ মিটাচ্ছেন। একজনকে সরিয়ে দিয়ে আরেকজনকে বসানোর একটা ফাইদা লোটার চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, এখানে বার বার একজন ডাক্তারের নাম উঠে আসছে। তিনি হলেন, কার্ডিওলোজি বিভাগের ডা. মোস্তফা কামাল। তাকে আমরা পায়নি। তার ব্যাপারেও আমরা তদন্ত করে দেখছি। কাউকে জোর করে সরিয়ে দেওয়া আমরা সমর্থন করি না। কাউকে সরাতে হলে নিয়মতান্ত্রিকভাবে তদন্ত সাপেক্ষে ধাপে ধাপে করতে হবে। এক দিনেই ৪০ জনকে সরিয়ে দেব, এতে চিকিৎসা সেবা বিঘ্নিত হবে। পুরো খুলনা বিভাগে এর প্রভাব পড়ছে। আমরা সবার সঙ্গে কথা বলছি, স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গেও কথা বলবো। এখানে দুটি পার্ট রয়েছে, স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষা। শিক্ষা পার্টের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ এই কাজটি করেছেন। তবে স্বাস্থ্য বিভাগে শুধু শিক্ষার্থীদের অধিকার নেই, এখানে খুলনা বিভাগের নাগরিক ও রোগীদের অধিকারটাই বেশি। আমরা এখানে সুষ্ঠু সমাধানে একটি ভূমিকা রাখতে চাই।


আরও খবর