আজঃ শুক্রবার ১৪ জুন ২০২৪
শিরোনাম

ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত:সোমবার ০৪ জানুয়ারী ২০২১ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image
সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ আর নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আজ সোমবার (৩ জুন) ৭৩ বছর পূর্ণ করছে। দেশভাগের পর ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে সংগঠনটির পথচলা শুরু হয়।

প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে সংগঠনটির নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ। পাকিস্তান আমলে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয়। স্বাধীনতার পর নাম হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ আর নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

দিনটি উপলক্ষে তিনদিনের বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কেক কাটা, শীতবস্ত্র ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ, আলোচনা সভা ও স্বেচ্ছায় রক্তদান প্রভৃতি। আজ রোববার (৩ জানুয়ারি) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কর্মসূচির বিষয়ে জানান ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

আজ সকাল সাড়ে ৭টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ও দেশব্যাপী সংগঠনের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ৮টায় কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করবেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা হবে। সকাল ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, সূরা ফাতেহা পাঠ এবং দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের প্রতিনিধি টিম।

একইদিন বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন ও আলোচনাসভার আয়োজন করবে ছাত্রলীগ। এছাড়াও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী বুধবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ ও শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) একই সময়ে অপরাজেয় বাংলা সংলগ্ন বটতলায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালন করবে ছাত্রলীগ।

বিজ্ঞপ্তিতে সোমবারের আলোচনা সভায় সংযুক্ত হতে এবং অন্যান্য কর্মসূচি স্ব স্ব ইউনিটে সুবিধাজনক সময়ে বাস্তবায়নের জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শিক্ষা-শান্তি প্রগতির মূল মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে গৌরবগাঁথা ইতিহাসকে সমুন্নত রাখতে ও জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনে দেয়ালিকা ও গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে। তাতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্রলীগের প্রত্যয় ও বিভিন্ন স্লোগান তুলে ধরা হয়েছে।

নিউজ ট্যাগ: ছাত্রলীগ

আরও খবর



চট্টগ্রাম কলেজ সংলগ্ন ফুটপাত উচ্ছেদের দাবি ছাত্রলীগের

প্রকাশিত:শনিবার ০১ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০১ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রাহুল সরকার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

Image

চট্টগ্রাম কলেজ সংলগ্ন ফুটপাত দখলে নিয়ে অবৈধ দোকানপাট বসিয়ে সৌন্দর্য ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করছে একটি চক্র। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরীকে স্মারকলিপি দিয়েছে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ।

শুক্রবার (৩১ মে) রাতে নগরের বহদ্দারহাটস্থ মেয়রের বাসভবনে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। 

মেয়র দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের আশ্বাস দেন ছাত্রলীগ নেতাদের।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মনির ইসলাম, জাহিদ হাসান সাইমুন, মুনির উদ্দিন, আব্দুল্লাহ আল সাইমুন, মহিউদ্দিন বাপ্পি, ওয়াহিদুর রহমান সুজন, অর্ণব দেব,  ইয়াসির আরাফাত, গিয়াস উদ্দিন সাজিদ, আব্দুল মালেক রুমি, মোস্তফা আমান, ইয়াছির আরফাত রিকু, তারেক রহমান, শাহজাদা শাহরিয়ার সাকিব, আব্দুর রাজ্জাক, সিরাজুম মুনির, আব্দুল হাকিম, তানভির আহমেদ, মোহাম্মাদ সম্রাট, মোহাম্মদ আরাফাত আবিদুল ইসলাম, ফয়সাল মোহাম্মদ জয়, ফয়সাল মোহাম্মদ মিনহাজ, আরশাদুল ইসলাম প্রমুখ।


আরও খবর



জামানত হারালেন ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ৩০ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ৩০ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নোয়াখালী প্রতিনিধি

Image

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন জামানত হারিয়েছেন। বুধবার (২৯ মে) তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তার ফলাফল বিশ্লেষণে বিষয়টি জানা যায়।

জামানত ফিরে পেতে কাস্টিং ভোটের ১৫% ভোটের প্রয়োজন হয়। সে হিসেবে এই নির্বাচনে অন্তত ১১,২৮৪টি ভোট পেলে জামানত ফিরে পাওয়া যেত। তবে শাহাদাত হোসেন পেয়েছেন ৪,৬১০ ভোট।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নির্বাচনের কন্ট্রোল রুমে উপজেলার ৭১টি কেন্দ্রের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী।

ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মোহাম্মদ গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৪৮,০২২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী মিজানুর রহমান বাদল পেয়েছেন ১৮,৬৭৮ ভোট।

সেতুমন্ত্রীর ভাই শাহাদাত হোসেন টেলিফোন প্রতীকে ৪,৬১০ টি ভোট পেয়ে তৃতীয় হন। এছাড়া মোটরসাইকেল প্রতীকে ওমর আলী ১,৪৮২ ভোট পেয়ে জামানত হারান।

নির্বাচনি বিধি অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের জন্য একজন প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অনুকূলে ১ লাখ টাকা জমা দিতে হয়। আর ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের জন্য ৭৫,০০০ টাকা জমা দিতে হয়।

নির্বাচনি এলাকার প্রদত্ত ভোটের ১৫% যদি কোনো প্রার্থী না পান, তাহলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। এই বিধি অনুযায়ী শাহাদাত হোসেনকে জামানত রক্ষার জন্য পেতে হতো ন্যূনতম ১১,২৮৪ ভোট। তা না পাওয়ায় নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া অর্থ খোয়াতে হচ্ছে তাকে।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী বলেন, জামানত হারানোয় শাহাদাত হোসেন ও ওমর আলীর চেয়ারম্যান পদের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অনুকূলে রাখা ১ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত হবে।


আরও খবর



রাইসির মৃত্যুতে পশ্চিমাদের রহস্যজনক নীরবতা!

প্রকাশিত:সোমবার ২০ মে ২০24 | হালনাগাদ:সোমবার ২০ মে ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে অনেকটা রহস্যজনক নীরবতা পালন করছেন পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা। অথচ বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে কিছু ঘটলেই অতি উৎসাহ নিয়ে এগিয়ে আসে তারা।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, বেলজিয়ামে সোমবার (২০ মে) জাতীয় ছুটির দিন। এই কারণে রাইসির মৃত্যুর ঘটনায় ইউরোপ থেকে প্রতিক্রিয়া আসছে না বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তবে গত সপ্তাহে স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোর ওপর হামলার ঘটনার পর যত দ্রুত প্রতিক্রিয়া আসে, তার সঙ্গে তুলনা করলে ইরানের ঘটনা সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী।

এই ঘটনাকেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কের টানাপোড়েনের বড় প্রমাণ হিসেবে দেখছেন অনেক বিশ্লেষক।

আল জাজিরা জানিয়েছে, শুধুমাত্র ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমিরাবদুল্লাহিয়ান এবং দুর্ঘটনায় পড়া হেলিকপ্টারে থাকা অন্যদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

এটি মূলত, রোববার (১৯ মে) রাতে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটির সন্ধানে সহায়তা করার জন্য র‌্যাপিড রেসপন্স ম্যাপিং সিস্টেম সক্রিয় করতে ইরানের এক অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় কমিশনের সাড়া।

আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে,  ব্রাসেলসে এখন অদ্ভূত এক নীরবতা বিরাজ করছে। ইউরোপীয় নেতারা ইরানের পরিস্থিতি খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।


আরও খবর



সিলেটে ভূমি ধস: আটকা পড়া একই পরিবারের তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত:সোমবার ১০ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১০ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
এস এ শফি, সিলেট

Image

সিলেট মহানগরের ৩৫নং ওয়ার্ডের মেজরটিলার চামেলীবাগ আবাসিক এলাকায় টিলার মাটি ধসে একই পরিবারের ৩ জন মারা গেছেন। নিহতরা হলেন- আগা করিম উদ্দিন (৩১), তার স্ত্রী শাম্মী আক্তার রুজি (২৫) ও ছেলে নাফজি তানিম (২)। সোমবার ভোর ৬টায় চামেলীবাগ এলাকার ২ নম্বর রোডের ৮৯ নম্বর বাসাটি মাটির নিচে চাপা পড়ে।

আগা করিম ওই এলাকার মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে। দুর্ঘটনায় মাটিচাপা পড়েছিলেন একই পরিবারের মোট ৯ জন। ৩ জন ছাড়া বাকিদের উদ্ধার করা হয় ঘটনার পরপর। তাদের মধ্যে ৩ জন আহত হন। আহতদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সিসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


আরও খবর



গাজায় ১৩ হাজার মানুষ নিখোঁজ, কী ঘটেছে তাদের ভাগ্যে?

প্রকাশিত:শনিবার ২৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

অবরুদ্ধ গাজায় যখন প্রতিনিয়ত মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে, তখনো ১৩ হাজারের বেশি মানুষের কোন সন্ধান নেই, এক রকম নিখোঁজ তারা। এদের অনেকে হয়তো এখনো ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে আছে, কিন্তু অনেক মানবাধিকার সংস্থা বলছে বাকি অনেকেই সম্ভবত গুমের’ শিকার হয়েছেন। আহমেদ আবু ডিউক তার ভাই মুস্তাফাকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন মাসের পর মাস ধরে। যুদ্ধের কারণে শরণার্থী হওয়া এই পরিবারটি এখন খান ইউনিসের দক্ষিণে নাসের হাসপাতালের সামনের উঠানে আশ্রয় নেয়।

কিন্তু তারা যখন জানতে পারে যে কাছেই তাদের ঘর আগুনে পুড়ে গিয়েছে, তখন সেটার অবস্থা জানতে ওখানে যান মুস্তাফা। এরপর তিনি আর কখনোই ফিরে আসেন নি। আমরা যতটা পারি খুঁজেছি’, আহমেদ বলছিলেন একসময় যেখানে তাদের বাড়ি ছিল সেটা এখন পুড়ে যাওয়া এক ধ্বংসস্তুপ। আশেপাশের সব বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং অনেক উঁচু উচুঁ ভবন মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে, বলেন তিনি।

অবসরপ্রাপ্ত অ্যাম্বুলেন্সের চালক মুস্তাফার খোঁজ চালাতে থাকে পরিবার, হামাস নিয়ন্ত্রিত সিভিল ডিফেন্সের দল ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে যেসব মৃতদেহ উদ্ধার করেছে সেখানে এবং নিকটস্থ গণকবরগুলোতে, কিন্তু তার দেখা পাওয়া যায় নি। আমাদের এখনো আশা যে হাসপাতালে প্রতিনিয়ত যেসব অ্যাম্বুলেন্স আসছে তার কোন একটাতে আমরা খুঁজে পাব তাকে, বলেন আহমেদ।

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এখন পর্যন্ত এই যুদ্ধে যে পরিমাণ মানুষ মারা গিয়েছে সেটি ৩৫ হাজারের বেশি, কিন্তু সংখ্যাটা শুধুমাত্র হাসপাতাল থেকে যে মৃতের সংখ্যা জানা গিয়েছে তার উপর ভিত্তি করে। মুস্তাফাদের মতো এমন অনেক পরিবার আছে যারা আসলে জানেনা গত সাত মাসে নিখোঁজ হওয়া তাদের প্রিয়জনেরা কোথায় আছে, কেমন আছে।

গত ৭ই অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্ত পেরিয়ে হামাসের এক অতর্কিত হামলায় ১২০০ জন মারা যায় ও ২৫২ জনকে বন্দী করা হয়। জবাবে ইসরায়েল এক সামরিক অভিযান শুরু করে।

জেনেভা ভিত্তিক একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটরের মতে, এই অভিযানে হাজার হাজার মানুষ মারা যাওয়ার পাশাপাশি ১৩ হাজারের উপর ফিলিস্তিনি নিখোঁজ হয়েছে, তাদের কোন সন্ধানই আর নেই। এই পরিসংখ্যানে কতজন হামাস যোদ্ধা ও কতজন সাধারণ নাগরিক আছে তা আলাদা করা নেই।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা সংস্থার অংশ গাজার সিভিল ডিফেন্সের হিসেবে ১০ হাজার উপর মানুষ শুধু এসব ধ্বংস হওয়া ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছে।

জাতিসংঘ হিসেব দিয়েছে গাজা উপত্যকাজুড়ে যে পরিমাণ ধ্বংসাবশেষ জমা হয়েছে তার পরিমাণ হবে প্রায় ৩৭ মিলিয়ন টন আর এর নিচে যেরকম শরীর চাপা পড়ে আছে তেমনি প্রায় আরও সাড়ে ৭ হাজার টন অবিস্ফোরিত গোলাবারুদ আছে, যা স্বেচ্ছাসেবক ও ত্রাণকর্মীদের জন্য আরেকটা ভয়াবহ হুমকি।

সিভিল ডিফেন্স বলছে তারা তাদের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে চাপা পড়া শরীর উদ্ধারে কাজ করছেন, কিন্তু তাদের খুবই সাধারণ কিছু যন্ত্রপাতি আছে যাতে প্রায়শই মৃতের শরীরে কাছে পৌঁছানোটা কঠিন হয়ে যায়।

এছাড়া আরেকটা শঙ্কাও আছে যে শরীর যদি না ঢেকে নিচে ওভাবেই পচাঁ অবস্থায় ফেলে রাখা হয়, তাহলে সামনে গরম যখন আরও বাড়বে তখন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটতে পারে। আবদুর রহমান ইয়াঘি নিচে চাপা পড়া তার আত্মীয়ের শরীর বের করতে গিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন।

মধ্য গাজার দেইর আল বালাহ শহরে তাদের পরিবারের একটি তিনতলা বাড়ি ছিল, ২২শে ফেব্রুয়ারি যখন এতে মিসাইল আঘাত হানে তখন তার পরিবারের ৩৬ জন সদস্য সেই বাড়িতে ছিলেন। তিনি জানান ১৭টা মৃতদেহ তারা উদ্ধার করতে পেরেছেন, এছাড়া শরীরের যেসব অংশ বিশেষ পাওয়া গিয়েছে সেগুলো শনাক্ত করা যায় নি।

‘আমরা বাড়িতে থাকা বেশির ভাগ শিশুর মৃতদেহ খুঁজে পাই নি, বলেন তিনি। সিভিল ডিফেন্স জাতিসংঘ ও অন্যান্য দেশ যাদের উদ্ধার কাজে অভিজ্ঞ ও পারদর্শী কর্মী আছে তাদের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছে।

তারা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার কাছেও আবেদন করেছে যাতে এক্ষেত্রে জরুরি হস্তক্ষেপ’ করা হয় এবং ইসরায়েলের উপর চাপ দেয়া হয় যাতে তারা গাজায় উদ্ধারকাজের জন্য ভারী যন্ত্রাপাতি আসার অনুমতি দেয়, কিন্তু তাদের সেই আবেদনে এখনও কোন সাড়া মিলেনি।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিশ্বাস যাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তাদেরকে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) তাদের পরিবারকে অন্ধকারে রেখে আটক করে থাকতে পারে, যেটাকে তারা বর্ণনা করছে গুম’ হিসেবে।

ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটরের হিসেবে আইডিএফ পরিবারদের না জানিয়েই গাজার শত শত ফিলিস্তিনকে আটক করেছে। কিন্তু জেনেভা কনভেনশন, যেটাতে ইসরায়েলও স্বাক্ষর করেছে, সেখানে বলা আছে একটা দেশ যদি কোন বেসামরিক নাগরিককে আটক করে রাখে তাহলে তার পরিচয় ও তাকে কোথায় রাখা হয়েছে সেটা জানাতে হবে।

গত ৭ই অক্টোবরের হামলার পর থেকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাদের আটক কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির সমস্ত পরিদর্শন বাতিল করেছে। গাজায় রেডক্রসে কর্মরত হিশাম মুহানা বলেন, আমরা বারবার ফিলিস্তিনিদের যেখানে ধরে রাখা হয় সেখানে প্রবেশাধিকার চেয়েছি কিন্তু আমাদের সেই অনুমতি এখনো দেয়া হয় নি।’

আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি জানায় ইসরায়েলি বন্দীদের রাখা হামাসের আটককেন্দ্রেও তারা যাওয়ার অনুমতি পায়নি। এ ব্যাপারে বিবিসি আইডিএফের কাছে মন্তব্য জানতে চেয়ে কোনও উত্তর পায়নি। তবে সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে ইসরায়েলের জাতীয় নিরপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির লিখেছেন, ইসরায়েলে বন্দী করে রাখা হামাস যোদ্ধাদের ব্যাপারে রেডক্রসকে কিছুই জানতে দেয়া হবে না, যতক্ষণ না তারা ইসরায়েল রাষ্ট্রকে আমাদের যাদের বন্দী করে নেয়া হয়েছে গাজায়, তাদের ব্যাপারে কোন তথ্য না জানাতে পারবে: মানবিকতার বিনিময়েই কেবল মানবিকতা।’

মধ্য গাজার আরেকটা শহর আল জুয়াইদাতে আরেকটা পরিবার তাদের হারানো সন্তানের সন্ধানে রয়েছে। তাদের ভয় তাদের সন্তানকেও হয়তো গুম’ করা হয়েছে।

মোহাম্মদ আলীর মা, তার সন্তানের একটা ছবি হাতে নিয়ে ততদিন পর্যন্ত খুঁজেছেন যতদিন না তাকে কেউ বলেছে যে তার ছেলেকে আইডিএফ ধরে নিয়ে গিয়েছে। তারা বলছে যে শেষবার জীবিত অবস্থায় তার সাথে দেখা হয়েছে কিন্তু তারা এরপর আর জানে না যে তার কি হয়েছে।

গত ২৩ শে ডিসেম্বর যখন উত্তর গাজার জাবালিয়ায় মারাত্মক বোমাবর্ষণ শুরু হয়, তখন এই পরিবারটি আশ্রয়ের খোঁজে নিজ বাসা ছেড়ে একটা স্কুলে এসে উঠে, আর সেদিন থেকেই মোহাম্মদের কোন খোঁজ নেই।

মোহাম্মদের স্ত্রী আমানি আলী বলেন, একপর্যায়ে ইসরায়েলি সেনারা স্কুলেও ঢুকে পড়ে এবং নারী ও শিশুদের সেখান থেকে চলে যেতে বলে। তিনি বলেন এরপর সেই রাতে সব পুরুষরা তাদের পরিবারের কাছে ফেরত আসলেও মোহাম্মদ আর আসেনি। সে কোথায় আছে, কেমন আছে কিছুই তারা আর জানে না।

আমানি বলছিলেন তিনি বুঝতে পারছেন না যে তার স্বামী কি মারা গিয়েছে নাকি তাকে আইডিএফ ধরে গিয়েছে, আর একারণেই তার বেঁচে থাকার একটা ক্ষীণ আশা এখনো রয়ে গিয়েছে তার। আমানির বিশ্বাস, যদি সে বেঁচে থাকতো ও মুক্ত থাকতো তাহলে সে ঠিকই আমাদের খুঁজে বের করতো।’

হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরিবারগুলোর জন্য একটা অনলাইন ফর্ম তৈরি করেছে যেখানে তারা মৃত ও নিখোঁজদের ব্যাপারে জানাতে পারে, যাতে করে ৭ই অক্টোবর থেকে যারা নিখোঁজ তাদের ব্যাপারে একটা পরিপূর্ণ তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা যায়। তবে তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে না জানা পর্যন্ত অনেক পরিবারই তাদের প্রিয়জনকে খুঁজে ফিরবে।


আরও খবর