আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম

চাটমোহরে মাঠ জুড়ে হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ

প্রকাশিত:বুধবার ২০ ডিসেম্বর ২০23 | হালনাগাদ:বুধবার ২০ ডিসেম্বর ২০23 | অনলাইন সংস্করণ
মামুন হোসেন, পাবনা

Image

শস্য ভান্ডার খ্যাত চলনবিলের বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ। প্রকৃতি সেজেছে যেন এক হলুদ বর্ণের অপরুপ  সাজে। শীতের সোনাঝরা রোদে মাঠ জুড়ে যেন ঝিকিমিকি করছে সরিষা হলুদ ফুল। এ বিলের দিগন্তজুড়ে এখন হলুদ সরিষা ফুলে ছেয়ে গেছে। দেশে ভোজ্যতেলের উর্ধ্বগতি, সয়াবিন তেল নিয়ে চলে তেলেসমাতি। তাই স্বাস্থ্যসম্মত ও স্বল্প খরচে লাভজনক হওয়ায় সরিষা চাষে ঝুঁকছে চলনবিলের কৃষক।

সরেজমিনে দেখা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল, নিমাইচড়া, ছাইকোলা, বিলচলন, হরিপুরসহ উপজেলার মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে। দুচোখ যেদিকে যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। চাটমোহরের মাঠে প্রকৃতি যেন সেজেছে আপন রুপে। এমন নয়নাভিরাম সরিষা ফুলের দৃশ্য, ফুলের গন্ধ, পাখির কিচিরমিচির শব্দ আর মৌমাছির গুঞ্জন মনকে বিমোহিত করে। দিগন্তজুড়ে হলুদ সরিষা ফুলে কৃষক যেন এক নতুন স্বপ্ন বুনছে।

এখন সরিষা গাছে ধরেছে ফুল, আর কিছুদিন পরেই আসবে ফল। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ও পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেলে  সরিয়ায় ভাল ফলনের আশা করছেন কৃষক। বিগত বছরের চেয়ে তুলনামূলক এ বছর সরিষার আবাদ অনেক ভাল হয়েছে। তাছাড়া সময়মতো সার-কীটনাশক ব্যবহারের কারণে সরিষার আবাদ করতে এবার কৃষককে কোন প্রকার বেগ পেতে হয়নি।

কথা হয় চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল পাকপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুসের সাথে তিনি বলেন, বিল থেকে দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় ও আবহাওয়া ভালো থাকায় আমি ৫ বিঘা সরিষার আবাদ করেছি। অনেক সুন্দর আবাদ হয়েছে, ভালো ফলনও হবে বলে আশা করছি।

নিমাইচড়ার সমাজ গ্রামের কৃষক জিল্লুর রহমান জানান, এ বছর তিনি সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। ফলনও ভাল হয়েছে, ভাল দাম পেলে লাভের মুখ দেখবেন তিনি।

উপজেলার দরাপপুর গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম সেও ৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন, তারা বলেন সরিষা চাষ এখন লাভজনক হওয়ায় এলাকায় দিন দিন সরিষা চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষকেরা জানান, আবহাওয়া ভাল থাকলে প্রতি বিঘা জমিতে ৬-৭ মণ হারে সরিষা ঘরে তুলতে পারবে। এ বছরের মতো আগামীতে ভালো দাম পাবে বলে আশা করছে তারা। এবার এ অঞ্চলে উন্নত ফলনশীল জাতের বারী-৯,১১,১৪,১৫,১৭,১৮, বিনা- ৪, টরি-৭ জাতের সরিষার চাষ সহ স্থানীয় জাতের সরিষার চাষ হয়েছে।

এবিষয়ে চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুম বিল্লাহ জানান, উপজেলায় কয়েক দফা বন্যার পানি এলেও দ্রুত মাঠ থেকে পানি নেমে যায়। এ জন্য মাঠের মধ্যে জলাবদ্ধতা না থাকার কারনে অনেকেই সরিষা বীজ ফেলেছে সুবিধাজনকভাবে। তাই, এ বছর সরিষা আবাদ গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে। উপজেলায় এ বছর ৮ হাজার ১শ ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। গত মৌসুমে চাষ হয়েছিল ৬ হাজার ৭শ ৫০ হেক্টর। গত বছরের চেয়ে এ বছর ১ হাজার ৪শ হেক্টর সরিষা চাষ বেশি হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে উপজেলার ৪ হাজার ৫শ কৃষককে সরিষা বীজ ও সার বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে। সরিষা চাষের পদ্ধতি ও পোকার আক্রমণ হলে কি করণীয় সে বিষয়ে কৃষককে সচেতন করেছেন।


আরও খবর



২৪ ঘণ্টায়ও শেষ হয়নি সেই ট্রেনের উদ্ধার অভিযান

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
গাজীপুর প্রতিনিধি

Image

গাজীপুরের জয়দেবপুর স্টেশনের এক কিলোমিটার দূরে ছোট দেওড়া এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা তেলবাহী ওয়াগন ও যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের সংঘর্ষের ২৩ ঘণ্টা পার হলেও শেষ হয়নি উদ্ধার অভিযান।

শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকেও পুরোদমে উদ্ধার অভিযান চলতে দেখা গেছে। তবে ঢাকা-জয়দেবপুর রেলপথের ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এর আগে, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে স্টেশনের দক্ষিণে আউটার সিগন্যালে সংঘর্ষে দুটি ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়। আহত হন দুই ট্রেনের লোকোমাস্টারসহ চারজন।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ছোট দেওড়া এলাকায় তেলবাহী ওয়াগন ও যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনার পর জয়দেবপুর স্টেশন দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম রুটের ট্রেন চলাচল ২ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। বিকেলে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়।

এছাড়া টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের পেছনের অংশের অক্ষত বগিগুলো বিকল্প ইঞ্জিনের মাধ্যমে দুর্ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। রাতভর উদ্ধার অভিযানে তেলবাহী ওয়াগনের লাইনচ্যুত পাঁচটি বগির মধ্যে তিনটি বগি অপসারণ করে পার্শ্ববর্তী স্টেশনে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়া যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের ক্ষতিগ্রস্ত চারটি বগি রেললাইনের পাশে রাখা হয়েছে। দুটি ইঞ্জিন ও ওয়াগনের দুটি বগি উদ্ধার তৎপরতা চলছে।

জয়দেবপুরের স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী মিয়া জানান, গতকাল পৌনে ১১টার দিকে টাঙ্গাইল কমিউটার ও মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। রেললাইনের পয়েন্টের ভুলের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে মালবাহী ট্রেনের পাঁচটি এবং যাত্রীবাহী ট্রেনের চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। কমিউটার ট্রেনটিতে যাত্রী কম ছিল। এ কারণে হতাহত মানুষের সংখ্যা কম।


আরও খবর



রাত ৮টার পর কোথাও যেতে চাই না: তামান্না ভাটিয়া

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

দক্ষিণী আবেদনময়ী অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়াকে নিয়ে ভক্তদের মাঝে উত্তেজনা সব সময় তুঙ্গে থাকে। ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে লাভ-লাইফ কোনটাই বাদ যায় না। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে একটি পোস্ট শেয়ার করে নিজের এমন এক গোপন তথ্য ফাঁস করলেন যা শুনলে চমকে যাবেন।

পোস্টে তামান্না লিখেছেন, আমার একটা খারাপ অভ্যাস আছে, আমি সবাইকে বলি যে আমি সব সময় যেকোনো কিছুর জন্য প্রস্তুত, কিন্তু বাস্তবে আমি রাত ৮টার পর কোথাও যেতে চাই না বা কিছু করতেও চাই না। এমনকি কিছু করতেও ভাল লাগে না।

তামান্না আরও বলেন, যদি আমি কারোর সঙ্গে দেখা করি, সেখানে খাবার এবং পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকা উচিত, তবে এটা পুরোটাই আমার মেজাজ এবং ক্লান্তির ওপর নির্ভর করে।

ব্যক্তি জীবনে তামান্না সম্পর্ক জড়িয়েছে বলিউডের উঠতি তারকা বিজয় ভার্মার সঙ্গে। গত বছর তাদের প্রথম ডেটিংয়ের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিলো। ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে একে অপরকে চুম্বন করার পরই তাদের নিয়ে নেট দুনিয়াঢ চর্চা শুরু হয়েছিলো। অবশেষে তা স্বীকার করে নিয়েছিলেন তারা।

বিজয়-তামান্নার প্রেমের চর্চা দিনদিনই বেড়েই চলেছে৷ প্রেমের খবর স্বীকার করে নেওয়ার পর থেকেই আরও বেশি করে শিরোনামে রয়েছেন তারকা জুটি। বিজয়-তামান্নার সম্পর্ক এখন টক অফ দ্য টাউন। ওয়ার্ক ফ্রন্টের কথা বলতে গেলে, সম্প্রতি আরনমানই ৪ ছবিতে তামান্না ভাটিয়াকে দেখা যাবে।


আরও খবর



জয়পুরহাটে ট্রাক্টর-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সুজন কুমার মন্ডল, জয়পুরহাট

Image

জয়পুরহাটে ট্রাক্টর-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন ধানকাটা শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। তাদের উদ্ধার করে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রবিবার সন্ধ্যায় জয়পুরহাট-আক্কেলপুর সড়কের দাদড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  হুমায়ুন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত কৃষি শ্রমিকরা হলেন- জেলার পাঁচবিবি উপজেলার সালুয়া গ্রামের জীতেন বর্মন ও বড় মানিক গ্রামের ইদ্রিস আলী।

আহতরা হলেন- পাঁচবিবি উপজেলার সালুয়া গ্রামের মৃত উতিন বর্মনের ছেলে সুনীল বর্মন (৪৫) একই গ্রামের আসির উদ্দিনের ছেলে ইসমাইল (৪৩) তোনসেনের ছেলে আজিজুল ইসলাম (৪৫)।

জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: হুমায়ুন কবির এ দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নওগাঁ জেলার রানীনগর এলাকা থেকে ধান কেটে কয়েকজন শ্রমিক সিএনজিতে করে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। দাদরা নামক এলাকায় অপর দিক থেকে আসা একটি ট্রাক্টরের সাথে সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন।

তিনি জানান, এতে আহত হন আরো চারজন। তাদের উদ্ধার করে জয়পুরহাটের ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহদের মধ্যে একজনের অবস্থা সঙ্কটজনক বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


আরও খবর



ঢাকায় লোডশেডিং দেওয়ার ইঙ্গিত দিলেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

প্রয়োজনে ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় লোডশেডিং দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

শুক্রবার (১০ মে) রাজধানীর বারিধারায় নিজ বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, তেলের দাম প্রতি মাসে কমবে বা বাড়বে। এরই ধারাবাহিকতায় বিদ্যুতের দামও বছরে চারবার কমবে-বাড়বে। কারণ ধীরে ধীরে বিদ্যুতের ভর্তুকি থেকে বেরিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে সরকার।

নসরুল হামিদ আরও বলেন, সামনের হিটওয়েভের জন্য প্রস্তুতি আছে। সময়মতো অর্থের জোগান দেওয়া হলে কোনো সমস্যা হবে না। প্রয়োজন হলে ঢাকা এবং আশেপাশের এলাকায় লোডশেডিং দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, তিতাসের পুরানো লাইন সংস্কারের পরিকল্পনা আছে। এই সংস্কার করানো গেলে গ্যাস নিয়ে ভোগান্তি কমে আসবে। এছাড়া আগামী বছরের শেষ নাগাদ নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট দুটো থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।

ডলারের দাম বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ডলারের দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে বাড়তি চাপ তৈরি হবে। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।


আরও খবর



ভারতে পাচার হচ্ছে রাজধানীর নিম্নবিত্ত মানুষের কিডনি (ভিডিও)

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

কিডনি কেনা-বেচার সঙ্গে জড়িত আন্তঃদেশীয় দালালচক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। শনিবার (১১ মে) রাজধানী ধানমন্ডি ২/এ রোডের ইবনে সিনা ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

রবিবার (১২ মে) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির ক্রাইম এবং অপারেশন বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মহিদ উদ্দিন এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তাররা হলেন- রাজু হাওলাদার (৩২), শাহেদ উদ্দীন (২২) ও আতাউর হোসেন বাপ্পী (২৮)।

রবিন খান নামে এক ভুক্তভোগীর দেওয়া এজাহার থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে মিরপুর-১০ নম্বরের শাহ আলী মার্কেটের পেছনে বসে এক বন্ধুর সঙ্গে চা খেতে খেতে সাংসারিক অভাব-অনটন নিয়ে কথা বলছিলেন তিনি। তাদের পাশে বসে থাকা মাছুম এসব কথা শুনে জানান, তিনি সাহায্য করতে পারবেন। ভারতে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৫ দিন রবিনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ রেখে তাকে ভারত যেতে রাজি করান সে।

পরবর্তীতে রবিনকে ধানমণ্ডির ল্যাবএইডে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান মাছুম। সেখানে মামলার গ্রেপ্তার হওয়া অন্য আসামি রাজু, শাহেদ ও আতাউরের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। পাসপোর্ট-ভিসা কার্যক্রম শেষে গত বছর ২২ ডিসেম্বর রবিন ইন্ডিগো এয়ারলাইনের একটি বিমানে ভারতের দিল্লি পৌঁছান। সেখনে একই চক্রের দুই সদস্য শাহীন ও মোস্তফা রবিনকে দিল্লির ফরিদাবাদে নিয়ে যান। সেখানে একটি বাসায় ২০-২৫ দিন আটকে রেখে কিডনি বিক্রির জন্য রবিনের ওপর নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করেন তারা।

রবিনকে তারা বোঝান, মানুষ একটি লিভার, একটি হার্ট দিয়ে বাঁচতে পারলে একইভাবে একটি কিডনি দিয়েও বাঁচতে পারে। একদিকে মানসিক চাপ, অন্যদিকে টাকা-পয়সার প্রলোভন দেখিয়ে অবশেষে এক রকমের বাধ্য করে ভারতের গুজরাটের মুক্তিনগরের একটি হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে স্থানীয় ডাক্তারের সাহায্যে রবিনের কিডনি বিক্রি করে দেয় চক্রটি।

এর চারদিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে রবিন জানতে পারে তার কিডনি ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে চক্রটি। প্রায় অর্ধকোটি টাকায় কিডনি বিক্রি করলেও রবিনকে দেয়া হয় মাত্র ৩ লাখ টাকা। পরে দেশে ফিরে রবিন জানতে পারে, একই চক্রটি তার পরিচিত একজনকে এভাবে ফুসলিয়ে ভারত নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। নিজের যে ক্ষতি হয়েছে, তা যেন অন্য কারও না হয় সেজন্য রবিন ধানমন্ডি থানায় চক্রটির বিরুদ্ধে মামলা করে।

বর্তমানে কিডনি হারিয়ে কর্মক্ষমতাহীন অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছেন রবিন। কিডনি অপারেশনের ফলে তার পেটে ৫ ইঞ্চি পরিমাণ একটি কাটা দাগ আছে। একটি কিডনি হারিয়ে বর্তমানে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় দিন কাটছে তার।

কালোবাজারে কিডনির দাম প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মহিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে- যখন যেমন দাম পায় তার ওপরেই ভিত্তি করে বেচাকেনা হয়। তবে বর্তমানে এক একটি কিডনির সর্বনিম্ন মূল্য ২৫ লাখ টাকা। অনেক ক্ষেত্রে প্রাপ্যতার ওপর ভিত্তি করে এ দাম ৫০ লাখ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত উঠানামা করে।

কারা কিডনি পাচারের শিকার হোন এমন প্রশ্নে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, সমাজের নিম্নবিত্ত মানুষ এ চক্রটির প্রধান টার্গেট। এদের লাখখানেক টাকা দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এ চক্রটি। এটি একটি আন্তঃদেশীয় দালালচক্র। ভারতের কলকাতা ও গুজরাটে এদের সংঘবদ্ধ সদস্যরা আছে।

কিডনি বিক্রির এ চক্রটির সঙ্গে হাসপাতালের কর্মকর্তা ও ডাক্তার জড়িত কি-না এ নিয়ে এখন পর্যন্ত তদন্ত চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ চক্রের বিস্তার বহুদূর বলে জানায় পুলিশ।

ডিএমপির পক্ষ থেকে জানা যায়, পাচার হওয়া কিডনি ভারতীয় আইন অনুযায়ী ভারতের কোনো নাগরিককে দেওয়া হয় না। এসব কিডনি বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে চিকিৎসা নিতে যান, তাদের শরীরেই প্রতিস্থাপিত হয়।


আরও খবর