আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম

বঙ্গবন্ধু‌ সেতু‌তে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ টোল আদায়

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২০ এপ্রিল ২০23 | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২০ এপ্রিল ২০23 | অনলাইন সংস্করণ
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

Image

টাঙ্গাই‌লে বঙ্গবন্ধু সেতু‌তে গত কয়েক দিনের তুলনায় টোল আদায় বে‌ড়ে‌ছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় ছোট বড় মি‌লি‌য়ে এই সেতু দি‌য়ে ৩৬ হাজার ৬৯‌টি প‌রিবহন পারাপার হ‌য়ে‌ছে। এতে সেতু‌তে টোল আদায় হ‌য়ে‌ছে দুই কো‌টি ৭১ লাখ ৯৫ হাজার ৪০০ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) বঙ্গবন্ধু সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পা‌ভেল টোল আদা‌য়ের বিষয়‌টি নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন।

সেতু কর্তৃপক্ষ সূ‌ত্রে জানা গে‌ছে, গেল ক‌য়েক দি‌নের চে‌য়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু‌তে টোল আদায় বৃ‌দ্ধি পে‌য়ে‌ছে। বুধবার (১৯ এপ্রিল) রাত ১২টা থে‌কে পরব‌র্তী ২৪ ঘণ্টায় এই টোল আদায় করা। এতে ঢাকা থে‌কে ছে‌ড়ে আসা উত্তরবঙ্গগামী ২০ হাজার ৮২০‌টি প‌রিবহন সেতু পার হ‌য়ে‌ছে। টোল আদায় হ‌য়ে‌ছে এক কো‌টি ৪০ লাখ ১০ হাজার ১০০ টাকা। এছাড়া উত্তরবঙ্গ থে‌কে ছে‌ড়ে আসা ঢাকাগামী ১৫ হাজার ২৪৯‌টি প‌রিবহন সেতু পার হ‌য়ে‌ছে। এতে টোল আদায় হ‌য়ে‌ছে এক কো‌টি ৩১ লাখ ৮৫ হাজার ৩০০ টাকা। ফ‌লে সেতু‌তে মোট টোল আদায় হ‌য়ে‌ছে ২ কো‌টি ৭১ লাখ ৯৫ হাজার ৪০০ টাকা।

বঙ্গবন্ধু সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পা‌ভেল জানান, ক‌য়েক‌ দি‌নের চে‌য়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সেতু‌তে টোল আদায় বে‌শি হ‌য়ে‌ছে।


আরও খবর



সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ড : যা বলছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। রোববার (৫ মে) বিকেলে এ বিবৃতি দেয় মন্ত্রণালয়টি। এতে বলা হয়, বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের আওতাধীন চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া ক্যাম্পের বনাঞ্চলের আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। আগুন গাছের ওপরে বা ডালপালায় বিস্তৃত হয়নি, শুধু মাটির ওপরে বিক্ষিপ্তভাবে বিস্তৃত হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ঘটনাস্থলে বন বিভাগের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট, নৌবাহিনী, পুলিশ, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সিপিজি, স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয় জনগণ অগ্নিনির্বাপণে সহায়তা করছেন। এছাড়া বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারও অগ্নিনির্বাপণে ওপর থেকে পানি ছিটিয়ে সহায়তা করেছে।

শনিবার (৪ মে) দুপুর আনুমানিক সাড়ে ৩ টায় আগুন লাগার ঘটনা প্রথম উদঘাটিত হয়। আগুন লাগার ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে বন বিভাগের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বন বিভাগের কর্মীরা স্থানীয় কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপ, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম এবং স্থানীয় জনগণের সহায়তায় আগুন লাগার চারপাশে ফায়ার লাইন কাটার কাজ শুরু করেন।

কিন্তু ওই সময় ভাটার কারণে খালে কোনো পানি না থাকায় আগুনে পানি দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে রাতেই বন বিভাগের নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং ইকুইপমেন্ট ও পানি দেয়ার মেশিন এনে, সেটি রেডি করে পাইপ লাগিয়ে সেট করে রাখা হয়। পরে রোববার ভোর থেকেই বন বিভাগের কর্মী, ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় জনগণ, সিপিজি, সিএমসির লোকদের নিয়ে আগুন লাগার স্থানে চারদিকে ফায়ার লাইন কাটার পাশাপাশি পানি দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ পুরোদমে শুরু করা হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আগুন লাগার স্থানের চারদিকে প্রায় ৫ একর জায়গা জুড়ে ফায়ার লাইন কেটে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। তবে যেহেতু আগুন মাটির নীচ দিয়ে গাছের শিকড়ের মধ্যে দিয়ে বিস্তৃতি লাভ করেছে, কাজেই সতর্কতার সঙ্গে আগুন নেভাতে হচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আগামী কয়েক দিন এখানে অগ্নি নির্বাপণ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চলমান রাখা হবে। কেননা ফরেস্ট ফায়ার আপাতত নিভে গেছে বা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে মনে হলেও আবার যে কোনো সময় এটি নতুনভাবে সৃষ্টি ও বিস্তৃতি লাভ করতে পারে। আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কারণ নির্ণয়ে তদন্তের জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ সুন্দরবনের আগুন নির্বাপণ কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি ও সমন্বয় করছেন। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অবহিত আছেন এবং তিনি নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। এ কর্মকাণ্ড সরেজমিনে তদারকি করতে প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী সুন্দরবনের ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। তিনি এ বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি ও কর্মপন্থা বিষয়ে আজ সন্ধ্যা সাড়ে আটটায় খুলনায় সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।


আরও খবর



এখনো ভিসা হয়নি ৩৭ শতাংশ হজযাত্রীর

প্রকাশিত:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করার জন্য দ্বিতীয় দফায় আবেদনের জন্য বাড়ানো সময় শেষ হচ্ছে আজ শনিবার। কিন্তু এখনো ভিসা হয়নি ৩৭ শতাংশ হজযাত্রীর। শনিবার সকালে আইটি হেল্প ডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৮৯৯ হজযাত্রীর ভিসা হয়েছে।

বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন। সেই হিসাবে এখনো ৩৭ শতাংশ হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

তবে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সি আশা করছে, আজকের মধ্যেই বেশিরভাগ হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়ে যাবে। অল্প কিছু বাকি থাকলেও দুই-একদিনের মধ্যে তা করার সময় পাওয়া যাবে। তাই ভিসা জটিলতায় কেউ হজে যেতে পারবেন না- এমনটা হওয়ার সুযোগ নেই।

এর আগে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে ভিসা সম্পন্ন করতে নির্দেশনা দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। এরপর ৭ মে পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সবশেষ ভিসা আবেদনের সময় বাড়িয়ে ১১ মে করা হয়। এ সময়ের মধ্যে হজযাত্রীর ভিসা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে দায়-দায়িত্ব বহন করতে হবে বলে জানিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

প্রসঙ্গত, চলতি হজ মৌসুমে বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৫৬২ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে ৮০ হাজার ৬৯৫ জনসহ মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।


আরও খবর



সুন্দরবনে যাতে আর আগুন না লাগে সেদিকে নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সুন্দরবনের আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সেদিকেও নজর রাখতে বলেছেন তিনি। সোমবার (৬ মে) নিজ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সন্তুষ্টির কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সুন্দরবনের আগুন লাগার বিষয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ বিষয়টি আরও কয়েকদিন পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সচিব বলেন, বনের আগুন নেভানোর পর সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা করা যায় না। এজন্য তারা এখন আগামী কয়েকদিন গভীর পর্যবেক্ষণে রাখবেন। প্রধানমন্ত্রী অবহিত হওয়ার পর কার্যক্রমের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সুন্দরবনের আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৫৫ কর্মী ফুলটাইম কাজ করেছেন। দেড়শয়েরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী কাজ করেছেন। দেড় থেকে দুই কিলোমিটার দূর থেকে পাওয়ার পাম্পের মাধ্যমে পানি এনে ব্যবহার করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, গভীর জঙ্গলে রাতে কাজ করা যায়নি। দিনে কাজ করতে হয়েছে। ঝুঁকিও ছিল। সবগুলো মিলিয়ে বড় একটি চ্যালেঞ্জিং টাস্ক তারা কমপ্লিট করেছেন, এজন্য তারা (ফায়ার সার্ভিস) ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।


আরও খবর



চট্টগ্রামে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা, জরিমানা

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

Image

চট্টগ্রামে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান নেমেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। চট্টগ্রাম জেলা এবং হাইওয়ে পুলিশের সহায়তায় পৃথক দুটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। বিআরটিএর দুটি ইউনিট চট্টগ্রাম-ঢাকা এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে পৃথক দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।

চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কে ভ্রাম্যমাণ আদালতে নেতৃত্ব দেন বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগের ভ্রাম্যমাণ আদালত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিশকাতুল তামান্না। এসময় বিআরটিএ চট্ট-মেট্রো-১ সার্কেলের মোটরযান পরিদর্শক মোহাম্মদ সাইফুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

এই অভিযানে ৮টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা করে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। লাইসেন্সবিহীন ৩ জন চালকের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ফিটনেসবিহীন ৪টি গাড়ি থেকে জরিমানা আদায় করা হয় ১৫ হাজার টাকা। অন্য একটি গাড়ি থেকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রো-ন-১৪-০০৩২ গাড়িকে জব্দ করে ডাম্পিং ইয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে নেতৃত্ব দেন কর্ণফুলী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) পিযুষ কুমার চৌধুরী। এ সময় বিআরটিএ চট্টগ্রাম জেলা সার্কেলের মোটরযান পরিদর্শক মোহাম্মদ ইকবাল আহমেদ ও বিআরটিএ চট্ট মেট্রো-২ সার্কেলের মোটরযান পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

এই অভিযানে ৯টি গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে ২১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে লাইসেন্সবিহীন দুজন চালকের কাছ থেকে আদায় করা হয় ৬ হাজার টাকা।এতে ফিটনেসবিহীন ৩টি গাড়ি থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা এবং অন্যান্য অপরাধে ৪টি গাড়ি থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত রেজিস্ট্রেশনবিহীন তিনটি ট্রাক ডাম্পিং ইয়ার্ডে পাঠিয়েছে। বৃহৎ দুই মহাসড়কে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিআরটিএ।

নিউজ ট্যাগ: চট্টগ্রাম

আরও খবর



অন্তর্বাসে লুকানো থাকত ডিভাইস, ১০ মিনিটে শেষ হতো পরীক্ষা (ভিডিও)

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

মেয়েদের অন্তর্বাসের মধ্যে এবং ছেলেদের গেঞ্জির মধ্যে লুকানো থাকত অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইস। একইসঙ্গে সংযোগ দিয়ে পরীক্ষার্থীর কানের মধ্যে রাখা হতো ক্ষুদ্রাকৃতির বল।

প্রশ্নপত্রের উত্তর সমাধানের জন্য বাইরে থেকে কাজ করত আরেকটি চক্র। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে উত্তরপত্র সমাধান করে ডিভাইসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হতো পরীক্ষার্থীদের। বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে উত্তর সরবরাহ করা সংঘবদ্ধ এ চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন মো. জুয়েল খান (৪০), মো. রাসেল (৩০), মো. মাহমুদুল হাসান শাকিল (৩৯), মো. আব্দুর রহমান (৩৮), মো. আরিফুল ইসলাম (৩৫), মো. আজহারুল ইসলাম (২৯) এবং মো. মাসুম হাওলাদার (২৫)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে থেকে বিশেষভাবে প্রস্তুত করা জিএসএম সুবিধা সম্বলিত ১০টি অত্যাধুনিক ডিজিটাল ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস, সাতটি মোবাইল ফোন ও ১০টি সিম কার্ড এবং একটি পকেট রাউটার জব্দ করা হয়।

রোববার (১২ মে) রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস করে অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর সাপ্লাই করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। প্রথমত তারা পরীক্ষা শুরুর ১ থেকে ২ মিনিট আগে পরীক্ষার কোনো না কোনো কেন্দ্র ম্যানেজ করে প্রশ্নের ফটোকপি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বাইরে পাঠিয়ে দিত। বাইরে তাদের একটা টিম পাঁচ মিনিটের মধ্যে প্রশ্ন সলভ করে ফেলে। এরপর তারা উত্তরগুলো বলতে থাকে। পরীক্ষার্থীর কাছে যে ক্ষুদ্র ডিভাইস থাকে সেটা পরীক্ষার্থীর কানের মধ্যে থাকে। আর পকেটে একটা রাউটার থাকে। অথবা মেয়েদের অন্তর্বাসে বা ছেলেদের গেঞ্জির মধ্যে লুকানো ডিভাইসের সঙ্গে কানেক্টেড একটা সিম রাখে। এরপর বাইরে থেকে যখনই টেলিফোন করে সঙ্গে সঙ্গে  পরীক্ষার্থী শুনতে পাবে এবং ১০ মিনিটের মধ্যে উত্তরগুলো সলভ করে ফেলবে। চক্রটি বাইরে থেকে উত্তর বলবে আর যাদের অন্তর্বাস বা গেঞ্জির সঙ্গে ডিভাইস থাকবে তারা ভেতরে থেকে উত্তরগুলো শুনে সঙ্গে সঙ্গে এমসিকিউ দাগিয়ে ফেলবে।

হারুন অর রশিদ বলেন, দিন দিন এভাবে ক্রাইমের প্যাটার্নটা চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে। এক সময় আমরা নকল প্রতিরোধের জন্য কাজ করেছি। সে সময় তারা পরীক্ষার হলে বই নিয়ে যেত। এভাবে কিন্তু দিন যাচ্ছে অপরাধীরা তাদের অপরাধের প্যাটার্ন চেঞ্জ করছে। আমরাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ধরার জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করছি। এখন সর্বশেষ আমরা যেটা পেলাম সেটা হচ্ছে তারা ক্ষুদ্রাকৃতির বল ব্যবহার করছে এবং ডিভাইসটা এমন জায়গায় রাখছে যেখানে ধরার বা চেক করার কোনো স্কোপ নেই।

ডিবি প্রধান বলেন, চক্রের সদস্যরা প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ (তৃতীয় ধাপ), বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেট কালেক্টর (গ্রেড ২) ও বুকিং অ্যাসিস্ট্যান্ট (গ্রেড ২), পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের অফিস সহায়ক, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, টাঙ্গাইলের অফিস সহায়ক, মৎস্য বিভাগের অফিস সহায়ক, গণপূর্তের হিসাব সহকারী ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সহকারী ব্যবস্থাপকসহ আরও বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় এসব পন্থায় অপরাধ কর্ম সংঘটিত করেছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রার্থীদের সঙ্গে চুক্তি করে। চাকরি ভেদে এমসিকিউ লিখিত পরীক্ষায় টিকিয়ে দেওয়ার জন্য ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা এবং লিখিত ও ভাইভাসহ ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়ে থাকে।

হারুন অর রশিদ বলেন, চক্রের মূলহোতা জুয়েল খান বিশেষভাবে প্রস্তুত করা জিএসএম সুবিধা সম্বলিত ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস সংগ্রহ ও সরবরাহ, প্রশ্নপত্র সংগ্রহ, সমাধান টিমের সদস্য সংগ্রহ ও চক্রের অন্যদের সঙ্গে সমন্বয় করত। মো. রাসেল ও মো. মাহমুদুল হাসান শাকিল এবং মো. আব্দুর রহমান বিভিন্ন পরীক্ষার্থী সংগ্রহ এবং পরীক্ষার্থীদের কাছে ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ডিভাইসটি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে তার বিস্তারিত ব্যবহারবিধি শিখিয়ে দেয়। মো. আরিফুল ইসলাম পরীক্ষা কেন্দ্রের অভ্যন্তর থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর সুবিধা মতো সময়ে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান করা চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে পৌঁছে দেয়। এরপর তাদের সমাধান টিম অতি দ্রুত সেই প্রশ্নপত্র সমাধান করে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে তাদের নির্ধারিত পরীক্ষার্থীদের কাছে ডিজিটাল ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইসের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিত।

তিনি বলেন, বিশেষভাবে প্রস্তুত করা জিএসএম সুবিধা সম্বলিত এই ডিজিটাল ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইসটি মেয়েদের অন্তর্বাস ও ছেলেদের স্যান্ডো গেঞ্জির ভেতরে এমনভাবে সেলাই করে সংযুক্ত করা থাকে যা বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় থাকে না। ডিভাইসে একটি মোবাইল সিম কার্ড সংযুক্ত থাকে। কেন্দ্রের বাইরে থেকে ওই নম্বরে কল করা মাত্রই সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিসিভ হয়ে যায়। এই ডিভাইসের সঙ্গে ব্লু-টুথের মাধ্যমে কানেক্ট থাকা ছোট্ট বল আকারের রিসিভার স্পিকারটি পরীক্ষার্থীদের কানের ভেতরে থাকে। ফলে বাইরে থেকে উত্তর বলে দিলে নির্দিষ্ট পরীক্ষার্থীরা অনায়াসে তা লিখতে পারে। পরীক্ষা শেষে শক্তিশালী কলম সদৃশ চুম্বকের (ডিভাইসের বিশেষ অংশ) সহায়তায় সেটি কানের ভেতর থেকে বের করা হয়।


আরও খবর