আজঃ শুক্রবার ৩১ মে ২০২৪
শিরোনাম

আওয়ামী লীগেই থাকতে চায় স্বতন্ত্ররা: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ জানুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ জানুয়ারী ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দ্বাদশ সংসদে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্বতন্ত্ররা আওয়ামী লীগেই থাকতে চায়।

তিনি বলেন, তারা (স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য) সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করতে পারবেন। এই একটা বিষয় আমাদের সংসদ নেতা, দলের সভাপতি পরিষ্কারভাবে বলেছেন।

রোববার রাতে গণভবনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক শেষে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংস নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিভিন্ন মার্কার কিছু সংঘাত, সহিংসতা, অন্তকলহ এসব বিষয় রয়েছে। কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্নভাবে অবাঞ্চিত ঘটনা ঘটছে। এটা আর হতে দেয়া যাবে না, নেত্রী আমাদেরকে বলেছেন। তারা (স্বতন্ত্র) দাবি করেছে আওয়ামী লীগেই থাকতে চায়। ভিন্ন কোনো নামে পরিচয় দিতে গেলে আমাদের বিবেক-আবেগ আহত হয়। নিজেরা নিজেদের মধ্যে অন্তকলহ বিবেদ মিটিয়ে ফেলতে হবে। নির্বাচন ইশতেহার বাস্তবায়নে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, নারী সংরক্ষিত আসনের ব্যাপারে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা যাদেরকে মনোনীত করবেন তাদের প্রতি স্বতন্ত্রদের সমর্থন থাকবে, তারা এটা ব্যক্ত করেছেন।

স্বতন্ত্র এমপিরা কোন হুইপের আওতায় থাকবে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, চিফ হুইপ সংসদ নেতার সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেবেন।


আরও খবর



সীমান্তে আবারও বিএসএফের গুলি

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
এম এ রহিম, বেনাপোল (যশোর)

Image

সীমান্তে হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও থামছে না ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে প্রাণহানির ঘটনা। প্রতি মাসেই বিএসএফের গুলিতে ঘটছে হত্যাকাণ্ড। সীমান্ত হত্যা নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা হয়। কিন্তু তবুও থামছে না সীমান্তে হত্যা। সবশেষ রোববার (১২ মে) দিবাগত রাতে বেনাপোল সীমান্তে বাংলাদেশিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বিএসএফ। এতে আমজেদ আলী নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

পরিবার জানিয়েছে, রোববার রাতে পুটখালী সীমান্ত দিয়ে ভারতে গরু পাচার করার সময় ভারতীয় বিএসএফ গুলি ছুড়লে আমজেদ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পালিয়ে বাড়িতে চলে আসে। পরে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে যশোর জেনারেল হাসপাতালের পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন।

এর আগে, বুধবার (৮ মে) দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। হত্যার দুই দিন পর শুক্রবার (১০ মে) সন্ধ্যার দিকে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা ও ভারতের ফুলবাড়ি জিরো লাইন সীমান্ত দিয়ে ওই দুই বাংলাদেশির মরদেহ তেতুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ভারতের ফাঁসিদেওয়া থানা পুলিশ।

সীমান্তে বছরের পর বছর ধরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলি ও নির্যাতনে প্রাণ হারাচ্ছেন নিরীহ বাংলাদেশিরা। বিগত ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারিতে বিএসএফের গুলিতে নির্মম হত্যার শিকার হয় কিশোরী ফেলানী খাতুন। তার মরদেহ সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। ওই সময় কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে থাকা কুড়িগ্রামের কিশোরী ফেলানীর মরদেহের ছবি আলোড়ন তুলেছিল দেশে-বিদেশে। ওই ঘটনার পর দফায় দফায় আলোচনায় সীমান্তে হত্যা বন্ধে প্রতিশ্রুতি দেয় বিএসএফ। তবে গত বছরগুলোতে পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় একেবারেই উল্টোচিত্র।

বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসেবে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএসএফের হাতে মারা গেছেন ২০০ এর বেশি বাংলাদেশি। নির্যাতনের শিকার হয়েছেন শতাধিক মানুষ। যার মধ্যে গতবছর ২৮ জনের প্রাণহানি ও ৩১ জন মারাত্মক শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

আসকের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশিকে হত্যা করে বিএসএফ। ওই বছর ৪৮ জন বাংলাদেশি প্রাণ হারান, যার মধ্যে ৪২ জন বিএসএফের গুলিতে ও ছয়জন শারীরিক নির্যাতনে মারা যান। এর আগের বছর যে ৪৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মধ্যে ৩৭ জন বিএসএফের গুলিতে এবং ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে নির্যাতনে। গত সাত বছরের মধ্যে বিএসএফের গুলিতে সবচে কম বাংলাদেশির মৃত্যু হয় ২০১৮ সালে ১৪ জনের।

সরকারের হিসেবে বলছে, ২০০৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ৯ বছরে বিএসএফের হাতে ২৯১ জন বাংলাদেশি নিহত হন। এ ৯ বছরের মধ্যে সবচে বেশি প্রাণ হারিয়েছেন ২০০৯ সালে। আর সবচে কম ১৭ জন হত্যার শিকার হয়েছেন ২০১৭ সালে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষের মতে, বিএসএফ আত্মরক্ষার জন্য হত্যা করে। কিন্তু হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) ট্রিগার হ্যাপি’ নামে এক প্রতিবেদনে সীমান্তে গুলি থেকে বেঁচে যাওয়া এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ ছিল, বিএসএফ তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা না করে বা সতর্ক না করেই নির্বিচারে গুলি চালায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, সীমান্তরক্ষী বাহিনী আত্মরক্ষার প্রয়োজনে প্রথমে সতর্ক করতে ফাঁকা গুলি ছুড়তে হবে। যদি এতে হামলাকারী নিবৃত না হয় এবং জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায় সেক্ষেত্রে গুলি ছোড়া যাবে, তবে সেটা হতে হবে অবশ্যই হাঁটুর নিচের অংশে। কিন্তু এসবের কোনো তোয়াক্কাই যেন নেই বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর। ফেলানী হত্যার দৃশ্যই কি মনে করিয়ে দেয় না, বিএসএফ গুলি ছোড়ে স্রেফ হত্যার উদ্দেশ্যেই। বিএসএফ কোনো ক্ষেত্রেই প্রমাণ করতে পারেনি যে, হতাহতের শিকার মানুষগুলোর মাধ্যমে তাদের প্রাণ সংশয় বা গুরুতর আহত হওয়ার ঝুঁকি ছিল।

সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার অন্যতম প্রধান কারণ দেশটির সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত বল প্রয়োগ। এ ছাড়াও দুই দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো ঘনবসতিপূর্ণ। এখানকার একশ্রেণির মানুষ কৃষি ও অন্যান্য পেশার পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত গবাদি পশু ও পণ্য পাচারের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে। এই হত্যার শিকার অধিকাংশই বিভিন্ন চোরাচালান কর্মের সঙ্গে জড়িত বলেই অভিযোগ বিএসএফের। কিন্তু দুই দেশের আইন অনুযায়ী, কেউ সীমান্তে অনুপ্রবেশ করলে, কাঁটাতার কাটলে বা পাচারের চেষ্টা করলে তাদের গ্রেপ্তার করে ওই দেশের আইনানুযায়ী বিচার করতে হবে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই গুলি ছোড়া বা নির্যাতন করা যাবে না।


আরও খবর



ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির বর্ণাঢ্য জীবন

প্রকাশিত:সোমবার ২০ মে ২০24 | হালনাগাদ:সোমবার ২০ মে ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যু হয়েছে। এক বর্ণাঢ্য জীবন ছিল তার। ইরানের প্রভাবশালী নেতাদের মধ্যে একজন হয়ে উঠেছিলেন তিনি।

এই শীর্ষ নেতার জন্ম ১৯৬০ সালের ১৪ ডিসেম্বর। ইরানের উত্তর-পূর্ব মাশহাদের নোগান জেলায় বেড়ে ওঠেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই তিনি ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্যে বড় হয়েছেন।

রাইসি জাভাদিয়াহ স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণ করেন। এরপর হাওজায় (ইসলামি সেমিনারি) পড়াশুনা শুরু করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি কওম সেমিনারিতে শিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আয়াতুল্লাহ বোরুজেরদি স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন। তিনি মোতাহারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন বলে জানা যায়। যদিও এ নিয়ে কিছুটা বিতর্ক রয়েছে।

মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি কারাজ শহরের প্রসিকিউটর-জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেহরানের প্রসিকিউটর-জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেছেন ইব্রাহিম রাইসি।

তিনি ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত উপ-প্রধান বিচারপতি, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি ছিলেন। এছাড়া ১৯৮০ এবং ১৯৯০র দশকে তিনি তেহরানের প্রসিকিউটর এবং উপ-প্রসিকিউটর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি আস্থান কুদস রাযভী নামের একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক এবং চেয়ারম্যান ছিলেন। ইব্রাহিম রাইসি ২০০৬ সালে দক্ষিণ খোরাসান প্রদেশ থেকে প্রথমবারের মতো বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি মাশহাদের জুমা নামাজের ইমাম এবং ইমাম রেজা মাজারের প্রধান ইমাম আহমদ আলা মোলহোদার জামাতা ছিলেন।

২০২১ সালে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে রাইসিকে নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়। ৬৩ বছর বয়সী রাইসি সে বছর দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দেশটির নৈতিকতা বিষয়ক আইন কঠোর করার নির্দেশ দেন।

ইব্রাহিম রাইসি তার কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময় সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে কাজ করেছেন। তাকে ২০১৯ সালে বিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তারপর থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ পর্যন্ত ইব্রাহিম রাইসি ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রথমবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়ে হাসান রুহানির কাছে বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন ইব্রাহিম রাইসি। ১৯৮০র দশকে রাজনৈতিক বন্দীদের যেভাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাতে রাইসির ভূমিকা নিয়ে বহু ইরানি এবং মানবাধিকার কর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। যদিও ইরান কখনো এই গণ-মৃত্যুদণ্ডের কথা স্বীকার করেনি এবং এতে রাইসির ভূমিকা নিয়ে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে সে বিষয়ে তিনি কখনো কিছু বলেননি।

রাইসিকে একজন কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতা হিসেবেই বিবেচনা করা হতো। এ কারণে তিনি সরকার-বিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভের মুখেও পড়েছেন। বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনায় তিনি কঠোর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন।

অনেকে মনে করেন, তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উত্তরসূরি হওয়ার জন্য নিজেকে তৈরি করছিলেন। ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ নেতা তাকে বিচার বিভাগের প্রধানের শক্তিশালী পদে নিযুক্ত করেন। বিশেষজ্ঞদের অ্যাসেম্বলির ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসেবেও নির্বাচিত হন প্রেসিডেন্ট রাইসি। ইরানে ৮৮ সদস্যের এই বোর্ড দেশটির পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচন করে থাকে।

২০২১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পেয়ে নির্বাচিত হন ইব্রাহিম রাইসি। তিনি প্রায় ৬২ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। অর্থাৎ ইরানের প্রায় ১ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তাকে ভোট দিয়ে জয়ী করেন।

কট্টরপন্থীরা পশ্চিমাদের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করলেও রাইসি এবং সর্বোচ্চ নেতা খামেনি উভয়েই পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তিতে ফিরে যেতে আগ্রহী ছিলেন বলে ধারণা করা হয়। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তিতে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার শর্তে দেশটির ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেয় এবং ইরানের ওপর বেশ কিছু বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। নিষেধাজ্ঞার কারণে সাধারণ ইরানিরা অর্থনৈতিক দুর্দশায় পড়েছে যার কারণে জনগণের মনে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখরের কাছাকাছি অবস্থানে ছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। তাকে তৈরি করা হচ্ছিল একেবারে সর্বোচ্চ আসনটির জন্য। কিন্তু আকস্মিক দুর্ঘটনা যেন সবকিছুর মোড় ঘুরিয়ে দিল।

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুর পর নতুন করে গুঞ্জন উঠেছে যে, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার স্থলাভিষিক্ত তাহলে কে হবেন? আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির বয়স এখন ৮৫ বছর। অনেক দিন ধরেই তার স্বাস্থ্যের অবনতির বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে।

ইরানের কট্টরপন্থী প্রেসিডেন্টের দুঃখজনক মৃত্যুতে দেশটির নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে এমনটি ভাবার কারণ নেই। তবে কঠোর রক্ষণশীলদের নিয়ন্ত্রিত কাঠামোকে একটি পরীক্ষার মধ্য দিয়েই যেতে হবে।

তার প্রতিপক্ষের লোকেরা হয়তো এই সাবেক আইনজীবীর প্রস্থানে স্বস্তিই খুঁজবেন। প্রতিপক্ষরা হয়তো আশা করবেন যে, তার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে এই শাসনকালেরও ইতি ঘটবে। কিন্তু বাস্তবে আসলে কী ঘটতে যাচ্ছে তাই এখন দেখার অপেক্ষা।

প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকেই ইরানসহ সারাবিশ্বেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়তে থাকে। পরবর্তীতে ইরানের বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায় যে, হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানসহ অন্যান্য আরোহীরা মারা গেছেন।

রবিবার আজারবাইজানের সীমান্তের কাছে দুটি বাঁধ উদ্বোধন করেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। এরপর হেলিকপ্টারে ইরানের উত্তর-পশ্চিমের তাবরিজ শহরের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। তার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ছিলেন। তাবরিজ থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে দূর্ঘটনার কবলে পড়ে তাদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি।

প্রেসিডেন্টের বহরে মোট তিনটি হেলিকপ্টার ছিল। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে অবতরণ করলেও রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।

পূর্ব আজারবাইজানের ডেপুটি গভর্নর ফর ডেভেলপমেন্ট আলি জাকারি স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, ওই বহরে তিনটি হেলিকপ্টার ছিল এবং অন্য দুটি নিরাপদে অবতরণ করতে পেরেছে। কিন্তু একটি বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বেল ২১২ মডেলের একটি হেলিকপ্টার বহন করছিল। এই মডেলটি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি।


আরও খবর



ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে স্পেন আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেন। ২৮ মে এ স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে দেশ তিনটি।

স্পেন ও আয়ারল্যান্ড বলেছে, তাদের এ সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কিংবা হামাসের পক্ষে নয়। শান্তির সমর্থনে তাদের এ সিদ্ধান্ত। 

ইসরায়েল অবশ্য ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং সতর্ক করে বলেছে, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পদক্ষেপের অর্থ এ অঞ্চলে আরও অস্থিরতা।

ইসরায়েল তিন দেশে থাকা রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে আনছে। অন্যদিকে, দেশ তিনটির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। বুধবার নরওয়ে প্রথম এ সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেয়।

নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইউনাস গার স্তুরে এ নিয়ে বলেন, দুই রাষ্ট্র সমাধানের মাধ্যমে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র পাশাপাশি শান্তিতে থাকতে পারবে।

এরপরই আয়ারল্যান্ড ও স্পেন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায়।

আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিশেল মার্টিন বলেন, আমরা ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলি জনগণের নিরাপত্তা, মর্যাদা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের সমান অধিকারের ক্ষেত্রে আমাদের দ্ব্যর্থহীন সমর্থন স্পষ্টভাবে প্রকাশ করছি।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস অবশ্য জোর দিয়ে বলেছেন, হামাস ফিলিস্তিনি নয়। তিনি বলেন, ফিলিস্তিকে স্বীকৃতি দেওয়ার আজকের সিদ্ধান্ত শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ তৈরিতে সহায়তার জন্য নেওয়া হয়েছে।

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের কণ্ঠেও হ্যারিসের মন্তব্য প্রতিধ্বনিত হয়েছে। স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নয়, ইহুদিদের বিরুদ্ধে নয়। এটি হামাসের পক্ষেও নয়। এ স্বীকৃতি কারো বিরুদ্ধে নয়, এটি শান্তি ও সহাবস্থানের পক্ষে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইয়েল কাৎজ বলেন, তিনি পরামর্শের জন্য ওই তিন দেশে থাকা ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতদের ফেরার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল নীরব থাকবে না।


আরও খবর



সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল, নজর রাখছে আবহাওয়া অধিদপ্তর

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আগামী দুই দিনের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে। পরবর্তীতে এটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হলে এর নাম হবে রেমাল’। এটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বুধবারের মধ্যে সাগরে লঘুচাপ তৈরি হতে পারে। সেখান থেকে নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। সাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় নিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে এখনও কোনো তথ্য না জানালেও আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এরপর এটি ২৪ তারিখের পরে পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি অর্জন করতে পারে। তবে, ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হওয়ার আগ পর্যন্ত এর গতিবিধি ও প্রভাব সম্পর্কে এখনই নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাবে না। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শুক্রবার থেকে বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। যা কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় রেমাল’-এর নামকরণ করেছে ওমান। আরবিতে এর অর্থ বালি। এই নামে ফিলিস্তিনের গাজা থেকে ১ দশমিক ৭ কিলোমিটার দূরে একটি শহরও রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের মে মাসে বাংলাদেশের উপকূলে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। সুন্দরবনের কারণে সে যাত্রায় রক্ষা পেয়েছিল দেশের উপকূল। এর আগে ২০০৯ সালের মে মাসেই সুন্দরবনে আঘাত হেনেছিল প্রলয়ঙ্করী আইলা।


আরও খবর



প্রশ্নফাঁস: প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগে মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৮ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৮ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত নিয়োগ প্রক্রিয়ার মৌখিক পরীক্ষা (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। পরীক্ষা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ বিষয়ে আগামী তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া প্রশ্নফাঁসমুক্ত পরীক্ষা গ্রহণে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং নতুন করে পরীক্ষা গ্রহণের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় দায়ের করা রিটের বিষয়ে প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২৮ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট পিয়া জান্নাতুল, ব্যারিস্টার লিটন আহমেদ ও ব্যারিস্টার খুররম খান মুরাদ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি দাস, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আযাদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আনিচ উল মাওয়া।

আদেশের পর আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন সাংবাদিকদের বলেন, ২০২৩ সালের ১৪ জুন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য সার্কুলার হয় ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য। এ পরীক্ষায় সাড়ে তিন লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ঘটে। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশ অনেককেই গ্রেফতারও করে। আটকরা প্রশ্নফাঁসে জড়িত হওয়ার বিষয়ে দায়ও স্বীকার করেন।

তিনি বলেন, এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত কোনো অনুসন্ধান তো দূরের কথা, কিছুই করেনি। বরং তারা এতবড় ঘটনা ইগনোর করে সামনে এগিয়ে ভাইভা নিচ্ছেন। এখন আমাদের বক্তব্য হলো প্রশ্নফাঁসের ঘটনা দিবালোকের মতো পরিষ্কার, সে ঘটনায় কেউ তদন্তও করলো না। আমাদের ধারণা এ ঘটনায় মন্ত্রণালয়ের কেউ জড়িত থাকতে পারেন। এজন্য আদালতে আমরা রিট দায়ের করি।

গত ২৯ মার্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে তৃতীয় ধাপে ঢাকা-চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে পরীক্ষা হয়। দুই বিভাগের ৪১৪টি কেন্দ্রে একযোগে লিখিত পরীক্ষা হয়। এতে প্রার্থী ছিলেন প্রায় সাড়ে তিন লাখ। এ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠে। পরে এ পরীক্ষা বাতিল চেয়ে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া জুয়েল রতন দাসসহ ১৫ জন রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন আদালত।

এই পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নের উত্তরপত্র ও ডিভাইসসহ মাদারীপুরে সাতজন ও রাজবাড়ীতে একজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। দুই জেলায় আলাদাভাবে মামলা দায়ের করেন সংশ্লিষ্টরা। রাজবাড়ীতে আটক হওয়া পরীক্ষার্থী আদালতে নিজের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছেন।

প্রশ্নফাঁসের পরও গত ২১ এপ্রিল রাতে ফল প্রকাশ হয়। এতে ৪৬ হাজার ১৯৯ জন প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। এরপরই বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করেন ১৫ পরীক্ষার্থী।

নিউজ ট্যাগ: হাইকোর্ট

আরও খবর