আজঃ শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪
শিরোনাম

আন্তঃনগর ট্রেনের দায়িত্বে পুলিশ, ক্ষুব্ধ রেলবাহিনী

প্রকাশিত:শনিবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আন্তঃনগর ট্রেনের নিরাপত্তা দেবে পুলিশ। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) আর এ দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। ফলে ভাতাও পাবে না। এতে ক্ষুব্ধ রেলের নিজস্ব বাহিনীর সদস্যরা। রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, আরএনবি ট্রেন পরিচালনায় সম্পৃক্ত জনবল তথা রানিং স্টাফ নয়। তাদের ভাতা পাওয়ার সুযোগ নেই। তাই চলন্ত ট্রেনের দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে।

রেলওয়ের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের নেতৃত্বে রেঞ্জ রয়েছে। কর্মপরিধি অনুযায়ী, স্টেশন এলাকা ও রেললাইনের দুই পাশের ১০ ফুট করে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রেলওয়ে পুলিশের। অন্যান্য স্থাপনা ও সম্পদ পাহারায় থাকে আরএনবি। এ বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে যাত্রী হয়রানি, ট্রেনে বিনাটিকিটে যাত্রী তুলে নিজের পকেট ভারী করার অভিযোগ রয়েছে। আবার চলন্ত ট্রেনের দায়িত্ব পালনের কারণে ভাতাও পেয়ে থাকেন।

বিনাটিকিটের যাত্রী ও ভাতার খরচ কমাতে আরএনবিকে চলন্ত ট্রেনের দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে রেলসূত্রের খবর। তবে আরএনবি সদস্যদের দাবি, এতে তারা শুধু ভাতা হারাবেন না, যাত্রীরাও নিরাপত্তাহীনতায় পড়বেন। ছিনতাই, মাদক পরিবহন, ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ, মলমপার্টির উৎপাত বাড়বে। বিনাটিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে পাওয়া টাকার পুরোটা পকেটে ঢোকাতে কর্তৃপক্ষকে দিয়ে পুলিশ ও আউটসোর্সিংয়ের কর্মীরা আরএনবিকে দায়িত্ব থেকে সরিয়েছে।

তবে রেলসূত্রের ভাষ্য, আরএনবি সদস্যদের অস্ত্র না থাকায় ছিনতাই, মাদক পরিবহন, চোরাচালানের মতো অপরাধ দমনে সক্ষম নয়। বিনাটিকিটের যাত্রী তুলে যে উপরি আয় হয়, তা পুলিশ, রানিং স্টাফ এবং আরএনবির মধ্যে ভাগ হতো। দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়ায় এ ভাগ হারিয়েছে আরএনবি। পুলিশের কব্জায় যাবে তা। ভাতা ও উপরি আয় হারিয়ে ক্ষুব্ধ আরএনবি। 

আরও পড়ুন>> উচ্চবিত্ত পর্যায়ে দুর্নীতি বেশি হচ্ছে : পরিকল্পনামন্ত্রী

রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান বলেছেন, আরএনবি রানিং স্টাফ নয়। তাই আন্তঃনগর ট্রেনের দায়িত্ব থেকে তাদের সরানো হয়েছে। অন্যান্য ট্রেনে তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব দিতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। ট্রেনের সামনের দিকে এবং পেছনে দুটি পৃথক গার্ড ব্রেক থাকে। আরএনবি সদস্যরা তা পাহারা দিতেন। সিদ্ধান্ত হয়েছে সামনের গার্ড ব্রেকটি তালাবদ্ধ রাখা হবে।

ট্রেন চালানোর সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত কর্মী তথা পরিচালক, লোকোমাস্টার (চালক), সহকারী লোকোমাস্টার, সাব লোকোমাস্টাররা রানিং স্টাফ হিসেবে গণ্য হন। তারা দিনে ১০০ মাইলের বেশি ট্রেন পরিচালনা করলে এক দিনের বেতনের সমপরিমাণ মাইলেজ ভাতা পান, যার ৭৫ শতাংশ পেনশনে যোগ হয়। পরে আদালতের রায়ে ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শক (টিটিই), অ্যাটেন্ড্যান্টসরা রানিং স্টাফের স্বীকৃতি পেয়েছেন। খরচ কমাতে সরকার মাইলেজ ভাতার সুবিধা বাতিল করেছে। তবে রানিং স্টাফদের আন্দোলনে তা পুনর্বহালের প্রক্রিয়া চলছে। আরএনবিও একই সুবিধা চাইছে। মাইলেজ না পেলেও ট্রেনে দায়িত্বের জন্য মূল বেতনের অনুপাতে ভাতা পেতেন আরএনবি সদস্যরা।

গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে আন্তঃনগর ট্রেন থেকে আরএনবিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগে প্রতিটি ট্রেনে একজন হাবিলদারের নেতৃত্বে দু-তিনজন করে আরএনবি সিপাহি থাকত। অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, বিভিন্ন সময় আরএনবি সদস্য বিষয়ে কথা উঠেছে। তারা কিছু অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটিয়েছে। তাই এই বাহিনীর সদস্যদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে ঠিক কী কারণে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা বোধগম্য নয় বলে দাবি করেছেন আরএনবির পূর্বাঞ্চলীয় চিফ কমান্ডেন্ট মো. জহিরুল ইসলাম। বাহিনীতে দুই হাজার সদস্য থাকার কথা থাকলেও এখন আছে মাত্র ৮০০। 

আরও পড়ুন>> দেশে নতুন জঙ্গি সংগঠন, করছিল হামলার পরিকল্পনা

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট কার্যালয়ের চাহিদায় ২০০৬ সালের ২২ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনে আরএনবি সদস্য মোতায়েন করা হয়। একজন লোকোমাস্টার ঢাকা-ময়মনসিংহ-মোহনগঞ্জ রুটের আন্তঃনগর হাওর এক্সপ্রেসের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ট্রেনটিতে প্রতি যাত্রায় অন্তত শপাঁচেক বিনাটিকিটের যাত্রী থাকেন। পুলিশ, আরএনবি এবং রানিং স্টাফরা এসব যাত্রী তোলেন। যাত্রীপ্রতি ২০০ টাকা আদায় করলেও প্রতি যাত্রায় লাখ টাকা উপরি আয় হয়। পুলিশ, আরএনবি এবং রানিং স্টাফ মিলিয়ে একটি ট্রেনে ২০ জনের বেশি থাকে না। ফলে জনপ্রতি দিনে আয় ৫ হাজার টাকা। খরচ কমাতে অ্যাটেনড্যান্টস সরিয়ে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ঠিকাদারের মাধ্যমে অনবোর্ড সেবা দিতে যেসব বেসরকারি কর্মী রাখা হয়েছে, তারাও ভাগ পান। ভাগ পান রেলের কর্মকর্তারাও। উপরি আয়ের জন্যই আরএনবিসহ সবাই ট্রেনে দায়িত্ব পালন করতে চায়।


আরও খবর



হোয়াইটওয়াশের মিশনে ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

প্রথম চার ম্যাচ জিতে এরই মধ্যে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। আজ পঞ্চম ম্যাচ এবং এই ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার মিশন। নাজমুল হোসেন শান্তর দল পারবে কি হোয়াইটওয়াশের জন্ম দিতে!

তার আগে আজ সকালে টস করতে নেমে হারতে হয়েছে নাজমুল হোসনে শান্তকে। টস জিতে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন এবং বাংলাদেশকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান।

ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দারুণ বিপর্যয়ে পড়েছে টাইগাররা। ৯ রানের মধ্যে হারিয়েছে দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম এবং সৌম্য সরকারকে। ৫ বলে ২ রান করেন তামিম। তিনি আউট হন ব্লেসিং মুজারাবানির বলে। এবং ৭ বলে ৭ রান করে ব্রায়ান বেনেতের বলে আউট হন সৌম্য সরকার।

এ রিপোর্ট লেখার সময় বাংলাদেশের রান ৪ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১৫। ৫ রানে নাজমুল হোসেন শান্ত এবং ১ রানে ব্যাট করছেন তাওহিদ হৃদয়।

বাংলাদেশ একাদশে ৩টি পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগের ম্যাচ থেকে নেই তাসকিন আহমেদ, তানভির ইসলাম ও তানজিম সাকিব। দলে এসেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাইফউদ্দিন ও শেখ মেহদি। একাদশে পেসার ২ জন, মোস্তাফিজ ও সাইফউদ্দিন। তিন স্পিনার- সাকিব, রিশাদ ও শেখ মেহদি।

বাংলাদেশ একাদশ

সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী অনিক, রিশাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফউদ্দিন ও শেখ মেহদি হাসান।


আরও খবর



পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী দুই যুবক নিহত

প্রকাশিত:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
পঞ্চগড় প্রতিনিধি

Image

পঞ্চগড়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি ২ যুবক নিহত হয়েছেন।

বুধবার (৮ মে) ভোরে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার রণচন্ডী বিওপি আওতাধীন এলাকা সীমান্ত পিলার ৪৪৬/১৪ আর এর নিকট খয়খাটপাড়া দরগাসিং এলাকায় ভারতের ফকির পাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের টহলদলের গুলিতে তারা মারা যান।

জানা গেছে, নিহত ইয়াসিন আলী (২৩) জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলা ব্রহ্মতোল গ্রামের কেতাব আলীর ছেলে এবং আব্দুল জলিল (২৪) একই উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামের জুনু মিয়ার ছেলে।

স্থানীয়, পুলিশ ও বিজিবি সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোরে তেঁতুলিয়া উপজেলার রণচন্ডী এলাকার দরগাসিং সীমান্ত এলাকায় হঠাৎ ওই যুবকদের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। পরে তারা বিজিবি ও পুলিশকে খবর দেয়৷ অন্যদিকে ভারতীয় বিএসএফ ওই যুবকদের লাশ ভারতে নিয়ে যায়৷ জানা যায় তারা অবৈধ ভাবে গরু আনতে তারাকাটা কেটে ভারতের প্রবেশের চেষ্টা করছিল৷

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার বলেন, নিহত দুজনের পরিবার ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জানা গেছে ভারত থেকে অবৈধভাবে গরু আনতে গেলে বিএসএফ তাদের গুলি করে হত্যা করে লাশ ভারতে নিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল জুবায়েদ হাসান বলেন, ভারতের অভ্যন্তরে দুজন বাংলাদেশি যুবক মারা গেছেন এমন খবর পেয়েছি তবে এখন পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি৷ বিষয়টি আমরা দেখছি।

নিউজ ট্যাগ: পঞ্চগড় বিএসএফ

আরও খবর



২৬ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এলো ১৬৮ কোটি ডলার

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

চলতি মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে এসেছে ১৬৮ কোটি ৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৬ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। রোববার (২৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, এপ্রিল মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে এসেছে ১৬৮ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর গত মার্চ মাসের প্রথম ২৬ দিনে এসেছিল ১৬২ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। সে হিসাবে চলতি মাসে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপ্রিলের প্রথম ২৬ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৬ কোটি ১ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এ ছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৪২ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।

বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, এপ্রিলের ২০ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ৩৯ কোটি ৯৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার। ১৩ থেকে ১৯ এপ্রিল দেশে এসেছে ৪০ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। এছাড়া ৬ থেকে ১২ এপ্রিলের মধ্যে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৪২ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার। আর ১ থেকে ৫ এপ্রিল দেশে এসেছে ৪৫ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

গত মার্চ মাসে দেশে এসেছিল ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে এসেছিল ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। যা চলতি অর্থবছরে সর্বোচ্চ।


আরও খবর



কমানোর একদিন পরই বাড়ল সোনার দাম

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

সোনার দাম সামান্য কমানোর একদিন পর আবারও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভালো মানের সোনার ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

এখন ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৮ টাকা। এর আগে দাম ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা।

রোববার (২১ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার দাম বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ বিকেল সাড়ে ৩টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এদিকে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী, বর্তমানে ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা।


আরও খবর



বনের জমিতে দেড় শতাধিক কারখানা, উচ্ছেদে সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা কী

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
গাজীপুর প্রতিনিধি

Image

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি এলাকার বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম লিমিটেড (বিবিএস) কেবলের বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ এক হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি। ২০১৭ সালে কারখানা নির্মাণের জন্য গাছপালা কেটে সাতখামাইর ফরেস্ট বিটের তেলিহাটি মৌজার আরএস ২৯২৩, ২৯২৪ ও ২৯২৫ দাগের ১.৬১ একর সংরক্ষিত বনের জমি দখল করে নামি এই কেবল প্রতিষ্ঠানটি। দখল করা ওই জমির বর্তমান বাজারমূল্য অন্তত আড়াই কোটি টাকা। বন বিভাগ দখল করা ওই জমি এখনো উদ্ধার করতে পারেনি। এরই মধ্যে নতুন করে কারখানার মূল ফটকের সামনে প্রতিষ্ঠানটির  প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হাসনাইন ওরফে হাসান বনের জমি দখল করে নির্মাণ করেছেন মার্কেট। ওই মার্কেট থেকে মাসে ভাড়া তুলছেন ৩০ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, গাজীপুর সদরের নলজানী এলাকার অভিজাত ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পার মাসিক আয় কোটি টাকার বেশি। শীত, গ্রীষ্ম এমনকি হরতাল-অবরোধেও এই রিসোর্টের ভিলা খালি থাকে না। ৯-১০ বছর আগে নির্মাণের সময় ভাওয়াল রিসোর্টের পাশে থাকা সংরক্ষিত বনের বাড়ইপাড়া মৌজার এসএ সিএস ৩, ২৭৯ ও ২৭১ দাগের ৩.৬৮ একর জমি দখল করে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। এ ঘটনায় বন বিভাগ গ্রিনটেক রিসোর্টের দখল থেকে জমি উদ্ধারের জন্য গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে উচ্ছেদ মামলা করে। কিন্তু সেই জমি এখনো উদ্ধার হয়নি। এভাবে গাজীপুরে সংরক্ষিত বনের জমিতে কারখানা, খামার, আলিশান রিসোর্ট, পিকনিক ও শুটিং স্পট নির্মাণ করে বছরে শতকোটি টাকার বাণিজ্য করছে পৌনে দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান।

ব্যক্তিগত প্রভাব এবং অসাধু বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ব্যক্তিগত জমির সঙ্গে থাকা বনের জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান। সংরক্ষিত বনে বা বন ঘেঁষে তৈরি করা এসব প্রতিষ্ঠানের অনেকের নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। বন বিভাগের তালিকা অনুযায়ী, গাজীপুরের শ্রীপুর, কালিয়াকৈর ও সদর উপজেলায় ১২ হাজার ৩২১ একর বনের জমি অবৈধ দখল হয়ে গেছে। এর মধ্যে ১৭৪টি প্রতিষ্ঠানের দখলে রয়েছে ৫০০ একর জমি। গত এপ্রিল মাসে বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসন শ্রীপুর ও গাজীপুর সদর উপজেলায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে মাত্র ৮.৭৯ একর বনভূমি। অবশিষ্ট ভূমি রিসোর্ট, বাড়িঘর-দোকানপাট, হাটবাজার ও কৃষিজমি হিসেবে দখল করা হয়েছে। ব্যক্তিমালিকানাধীন বাড়িঘর তৈরি করে ২৩ হাজার ব্যক্তি দখল করেছে ১০ হাজার একরের বেশি বনভূমি। এতে বনভুমি উজাড় হয়ে হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। অথচ এই আগ্রাসন ঠেকাতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বন বিভাগের। বরং নানা ফন্দিতে নতুন করে দখল হচ্ছে বনভূমি।

বন বিভাগের তথ্যানুযায়ী, শ্রীপুরে ধনুয়া মৌজায় আরএকে সিরামিকস চার একর, রশোওয়া স্পিনিং মিল চার একর, ডিবিএল সিরামিকস আট একর, অটো স্পিনিং মিলস ২.২০ একর, সাতখামাইর মৌজায় আকন্দ গার্ডেন ১৬ একর, রিফাত ব্যাগ ২৫ শতক, পটকা মৌজায় ট্রেড ম্যানেজমেন্ট করপোরেশন ৭.৬৪ একর, কেওয়া মৌজার মিতা টেক্সটাইল ২.২০ একর, মেঘনা কম্পোজিট ৪০ শতাংশ, জোবায়ের স্পিনিং এক একর, ওমেগা সুয়েটার এক একর, সোলার সিরামিকস ৯০ শতাংশ, ইকো কটন ৪.৮৬ একর, ভাওয়াল ইন্ডাস্ট্রিজ দুই একর, অনটেক লিমিটেড ৪.৯৪ একর, হাউআর ইউ টেক্সটাইল এক একর, অরণ্যকুটির ২.২২ একর, উইষ্টেরিয়া টেক্সটাইল ৫.৩৩ একর, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল দুই একর, এপেক্স নিট কম্পোজিট ১১.৬২ একর, গ্রেটওয়াল সিরামিকস ৭.৩৮ একর, টেপিরবাড়ি মৌজায় ডিবিএল গ্রুপ ছয় একর, তেলিহাটি মৌজায় কুঞ্জু বিথি এক একর, আলিফ অটো ব্রিকস ৭০ শতাংশ, টেপিরবাড়ী মৌজায় চায়না বাংলা প্যাকেজিং এক একর, প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস ৭৬ শতাংশ, এইচ এস অ্যাগ্রো দেড় একর, রেক্স অটো ব্রিকস এক একর ৭০ শতাংশ, টেংরা মৌজায় শিশুপল্লী প্লাস সাড়ে ১২ একর, মম পোলট্রি ৭০ শতাংশ ও ওয়ারবিট স্টিল বিল্ডিং দুই একর বনের জমি দখল করেছে। পেলাইদ মৌজায় সিসিডিভি পাঁচ একর, সাইটালিয়া জামান পোলট্রি দুই একর, মাওনা মৌজার মনো ফিড ২.২৫ একর, এইচ পাওয়ার লিমিটেড ৩৩ শতাংশ, হোম ডিজাইন ১.২২ একর ছাড়াও বিবিএস কেবল, দি সোয়েটার, ইকো কটন মিলস, সিটিসেল লিমিটেডও বনের জমি দখল করেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গাজীপুর সদর উপজেলায় বনভূমি দখলে সবচেয়ে এগিয়ে পারটেক্স গ্রুপ। পারটেক্স কটন লিমিটেড সদর উপজেলার ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান রেঞ্জের বাহাদুরপুর মৌজায় সিএস ২৫৪, ২৮৯, ২৯৪ ও ৩০০ নম্বর দাগে ১১.৬৭ একর, পারটেক্স হোল্ডিংস লিমিটেড একই মৌজার সিএস ২০৮, ৫৮৫, ২০৮ ও ৫৮৬ নম্বর দাগে ৫.০৯ একর, আম্বার ডেনিম লিমিটেড আড়াইশ প্রসাদ মৌজায় আরএস ৮ থেকে ১৮ এবং ২৮ থেকে ৩২ নম্বর দাগে ২৬.২৪ একর মিলিয়ে ৪৩ একর বনভূমি দখলে রেখেছে। তবে এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি পারটেক্স গ্রুপের কোনো কর্মকর্তা। মণিপুর এলাকায় বোকরান মণিপুর মৌজায় সিএস ৪২৮ ও ৫৯৮  নম্বর দাগে ৬.৫৭ একর সংরক্ষিত বনভূমি দখল করেছে সান পাওয়ার সিরামিকস লিমিটেড। এসব বনভূমি উদ্ধার করতে ২০০৭, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে উচ্ছেদ মামলা করা হয়।

বনভূমি দখল প্রসঙ্গে সান পাওয়ারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম ভূঞা বলেন, কারখানার জমির এসএ ও আরএস রেকর্ড আমাদের নামে। কিন্তু শুধু গেজেটে নাম থাকায় বন বিভাগ ওই জমি তাদের দাবি করছে। কারখানাটি বিদেশি বিনিয়োগে স্থাপিত। বনের দাবি করা জমির সমপরিমাণ জমি অন্যত্র কিনে বনায়ন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে এখনো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।’

বোকরান মণিপুর মৌজায় সিএস ৫৯৮ নম্বর দাগে ফু-ওয়াং সিরামিক ও ফু-ওয়াং ফুডের দখলে রয়েছে ৪.৪০ একর সংরক্ষিত বনভূমি। ২০০৭ সালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উচ্ছেদ মামলা করে বন বিভাগ। কিন্তু ওই সময় দায়সারা মামলা করায় আজও জমি উদ্ধার হয়নি। এ প্রসঙ্গে ফু-ওয়াং গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে বনের কোনো জমি নেই।’

এ ছাড়া প্যানাস অটোক্রিয়েশ গার্মেন্টস, ম্যাগডোনালস বাংলাদেশ, হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, এনএজেড গার্মেন্টস বাংলাদেশ, ওয়ান্ডার ল্যান্ড টয়েস, বেন্টলী সুয়েটার, ওয়ান ডেনিম, ওয়ান স্পিনিং মিলস, এমআই ইয়ার্ন ডাইং, শরীফ বাড়ি খামার ও রেস্ট হাউস, ইপিলিয়ন স্টাইল, এটলাস ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, এবি সিদ্দিক পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ, বেন ফিক্সস্টীল বিল্ডিং ডেভেলপমেন্ট, এসএম নিটিং ইন্ডাস্ট্রিজ, বিডি কালেকশন, বাংলাদেশ মেইজপ্রডাক্ট, ইভিল টেক্স, তিতাস স্পিনিং, বেঙ্গল গার্মেন্টস, মালা পোলট্রি ফার্ম, মাসকাত পোলট্রি ফার্ম, টিএস ট্রান্সফরমার, ন্যাশানাল ফিড, মডার্ন ফিড, লিথি গ্রুপ, প্যারাগন পোলট্রি, স্কিন গ্রাফ, গর্ডন স্টিল মিলস, মোশারফ কম্পোজিট, প্যাকলাইন, আর্টিসান সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বিটি লিমিটেড, মিলেনিয়াম স্টিল মিলস লিমিটেড, কুইন্স পোলট্রি ফার্ম লিমিটেড, অমনী অ্যাগ্রো কমপ্লেক্স, ঢাকা ফিশারিজ, রেডিয়াম এক্সেসরিজ, নির্জনা অ্যাপারেলস, গোলাম কিবরিয়া মৎস্য খামার, ইনডেক্স কনস্ট্রাকশন, সাহাবা ইয়ার্ন, এটিআই সিরামিক, গিভেন্সি ডেনিমস, খোরশেদ আলম অ্যাগ্রো কমপ্লেক্স, বেঙ্গল হরিকেন ডাইং প্রিন্টিং লিমিটেড, নেসলে বাংলাদেশ এবং আদি অ্যাগ্রো ফার্মের দখলে রয়েছে কোটি কোটি টাকার বনভূমি।

কালিয়াকৈর সোহাগ পল্লী রিসোর্ট, চন্দ্রা বিটের কালামপুর এলাকার রাঙ্গামাটি ওয়াটার ফ্রন্ট ও চন্দ্রার শিল্পী কুঞ্জ, কোকোলা ফুড প্রডাক্টস, কৌচাকুড়ি মৌজায় সিএস ৯৪২ নম্বর দাগে ১৫.০৫ একর বনভূমিতে ঘরবাড়ি বানিয়ে দখল করে রাখা হয়েছে। এসব বনভূমি উদ্ধার করতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে ২০১৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে উচ্ছেদ মামলার প্রস্তাব দেওয়া হয়। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে হাজার হাজার একর বনভূমি জবরদখল হয়েছে। বন বিভাগ উচ্ছেদ মামলা করলেও নানা কারণে অভিযান এগোয়নি। বন বিভাগের পক্ষ থেকেও জোরালো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। গত ১৭ এপ্রিল থেকে উচ্ছদ অভিযান শুরু হয়েছে। শ্রীপুর ও সদর উপজেলায় ৮.৭৯ একর বনভূমি উদ্ধার হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

বন বিভাগের বক্তব্য

বিবিএস কেবলের বনভূমি দখল প্রসঙ্গে শ্রীপুর ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান বলেন, বনভূমি দখলে বন বিভাগের নতুন যে তালিকা করা হয়েছে সেটিতে বিবিএস কেবলসও রয়েছে। সেখানে উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই উচ্ছেদ করে জমি পুনরুদ্ধার করা হবে।’

বনভূমি দখল প্রসঙ্গে ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুল হোসেন বলেন, এসব জমি অনেক আগে দখল হয়েছে। গত কয়েক বছরে নতুন করে কোনো দখল হয়নি। এরই মধ্যে বন বিভাগ নিজস্ব উদ্যোগে শতাধিক বিঘা জমি উদ্ধার করে বনায়ন করেছে। তা ছাড়া দখল করা জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। যৌথভাবে উচ্ছেদ অভিযানও শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব জমি উদ্ধার করে বনায়ন করা হবে।’

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমীন আক্তার বলেন, দখল হওয়া বনভূমি উদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে উচ্ছেদ মামলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তালিকা ধরে উচ্ছদ কার্যক্রম চলছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’


আরও খবর