তিনি ষাটের দশকের ঢাকাই সিনেমার একজন জনপ্রিয় অভিনেতা জনপ্রিয়
অভিনেতা আবুল ফজল মোহম্মদ খলিল উল্লাহ খান। এই গুণী অভিনেতা পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে
প্রায় আটশ সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
এছাড়াও তিনি তার বৈচিত্রময় নান্দনিক অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলা
চলচ্চিত্রকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। সহজাত অভিনয় প্রতিভার গুণে এ দেশের চলচ্চিত্র
দর্শকদের মন জয় করেছিলেন অভিনেতা খলিল। নায়ক থেকে হয়েছিলেন খল নায়ক। ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর
শ্রোতা-দর্শকদের শোকাহত করে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি। আজ বরেণ্য এই অভিনেতার মৃত্যুবার্ষিকী।
অভিনেতা খলিল অভিনয় জীবন শুরু করেছিলেন মঞ্চ নাটক দিয়ে। সিনেমার
সফলতা তাকে ছুঁয়ে গিয়েছিলো। পাশাপাশি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেও সফল হয়েছিলেন। ২০১২
সালে এই গুণী শিল্পী জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-এ আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন। এছাড়া,
তারও অনেক আগে গুণ্ডা সিনেমায় অভিনয় করার জন্য প্রথমবার পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র
পুরস্কার।
বিটিভির ইতিহাসের আলোচিত নাটকগুলোর মধ্যে সংশপ্তক একটি। আবদুল্লাহ
আল মামুন পরিচালিত এই নাটকে খলিল অভিনয় করেছিলেন ফেলু মিয়া (মিয়ার বেটা) চরিত্রে। সেই
সময়ে খলিলের একটি সংলাপ ভীষণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো- ‘টাকা আমার চাই, নইলে জমি’। বহুদিন খলিলের দেয়া সংলাপটি মানুষের মুখে মুখে ফিরতো।
সিনেমায় খলিলের যাত্রা শুরু হয়েছিলো নায়ক হিসেবে। নায়ক থেকে
খলনায়ক হতে কম শিল্পীকেই হতে দেখা গিয়েছিলো এ দেশের সিনেমায়। যা খলিল করে দেখিয়েছিলেন।
নায়ক হিসেবে প্রথম অভিনীত সিনেমার নাম- সোনার কাজল। এটি যৌথভাবে পরিচালনায় ছিলেন জহির
রায়হান ও কলিম শরাফী। প্রথম সিনেমা সোনার কাজল-এ খলিলের নায়িকা ছিলেন সুমিতা দেবী ও
সুলতানা জামান।
এরপর, খলিল নায়ক হিসেবে রূপালী পর্দায় আবির্ভূত হয়েছিলেন-
প্রীত না জানে রীত, সঙ্গম, জংলি ফুল-সহ আরও কয়েকটি সিনেমায়। নায়ক থেকে একসময় পরিচালকরা
তাকে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের আমন্ত্রণ জানালে, সানন্দে রাজি হয়ে যান। অভিনয়কে ভালোবাসার
কারণেই এটি সম্ভব ছিলো। খলনায়ক হিসেবে প্রথম অভিনয় করা সিনেমার নাম- বেগানা। এ সিনেমাটি
পরিচালনা করেছিলেন এসএম পারভেজ।
খলিলের জন্ম সিলেটের কুমারপাড়ায় ১৯৩৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি।
তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতিও ছিলেন।